এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। উভয় পক্ষের দলিল নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ বলেন-আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে আর ইমাম খুতবা দিচ্ছে মিম্বরের উপর, তাহলে ইমাম ফারিগ হওয়ার আগ পর্যন্ত কোন নামায নেই কোন কথাও নেই। {মাযমাউজ জাওয়ায়েদ, ২/১৮৪, হাদীস নং-২০১৪} ইবনে হিব্বান রহঃ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
তবে হাদীসটি যদিও আইউব বিন নুহাইক এর কারণে দুর্বল। কিন্তু অন্যান্য কারণে এটা শক্তিশালী হয়ে গেছে। সেটা হল ইমাম খুতবাদানকালে নামায পড়া নিষিদ্ধ এটা ইবনে ওমর রাঃ এর মতামত। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-২/১২৪}।
তবে রাসুল সা: এর হাদীস রয়েছে, আবু কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন ,রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন ,যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে ,তখন সে যেন দু’রাকাত সালাত আদায় করা ব্যতীত না বসে ।( বুখারী হা/৪৪৪ , ১১৬৭ ; মুসলিম হা/ ৭১৪ ; তিরমিযী হা/ ৩১৬ ; নাসাঈ হা/ ৭৩০ ; আবু দাউদ হা/ ৪৬৭ ; ইবনু মাজাহ হা/ ১১২৩ ; আহমাদ হা/ ২২০১৭ , ২২০৭২ , ২২০৮৮ , ২২১৪৬ ;দারেমী হা/ ১৩৯৩ ; রিয়াদুস সালেহীন হা/ ১১৫১)।
এ ব্যাপারে রাসুল সা: এর আরো একটি হাদীস রয়েছে :
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন ,নবী করীম (সাঃ) এর খুৎবা দানকালে সেখানে (মসজিদের অভ্যন্তরে) এক ব্যক্তি আগমন করেন । তিনি তাকে বলেন , হে অমুক ! তুমি কি সালাত পড়েছ ? ঐ ব্যক্তি বলেন , না । নবী ( সাঃ ) বলেন , তুমি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় কর । অন্য হাদীসে বলা হয়েছে তুমি সংক্ষিপ্ত ভাবে দুই রাকাআত সালাত আদায় কর । ( বুখারী হা/৮৮৩ , ৮৮৪ ; মুসলিম হা/১৮৯৫ , ১৮৯৬ , ১৮৯৭ , ১৮৯৮ , ১৮৯৯ , ১৯০০ ; তিরমিযী ; ইবনে মাজাহ ; নাসাঈ হা/১৪০৩ ; আবু দাউদ হা/১১১৫ , ১১১৬ , ১১১৭)।
সুতরাং, এসব হাদীসের দৃষ্টিতে আমরা এ সীদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, যারা খুতবা শুরু হওয়ার পূর্বেই মসজিদে প্রবেশ করেছে তাদের কর্তব্য হলো মসজিদে বসার পূর্বেই প্রথমেই দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ সালাত আদায় করে বসা, এরপর তারা বসে রয়েছে এবং এরপর যখন খুতবা শুরু হলো, তখন তাদের কেউ নতুন করে কোন নামাজের নিয়ত করবেনা, চুপচাপ বসে খুতবা শুনবে। কিন্তু যে ব্যাক্তি এই মাত্র মসজিদে প্রবেশ করলো এবং খুতবা চলছে, সে শুধুমাত্র মসজিদের আদব রক্ষার্থে শুধুমাত্র দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করে বসে পড়বে। এর বেশী নয়।
মসজিদের আদব রক্ষার্থে মসজিদে প্রবেশ করেই বসার পূর্বে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করাকে ওলামায়ে কেরামগণ যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। এমনকি মসজিদে প্রবেশ করেই যদি আপনি অন্য কোন নামাজও পড়েন সেই সাথে একই নিয়্যতে তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করতে পারেন। অর্থাৎ, আপনি অন্য কোন সুন্নত নামাজের নিয়ত করলেন, সাথে তাহিয়্যাতুল মসজিদের নিয়তও করে ফেললেন তাহলে একসাথে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামাযও আদায় হয়ে যাবে।
(- সাইয়েদ কামালূদ্দীন জাফরী সহ সমসাময়িক অধিকাংশ আলেমগণ উপরোল্লিখিত অভিমত পোষণ করেছেন। )
No comments:
Post a Comment