প্রশ্ন: ৩৬১ : পবিত্র কুরআন শিক্ষা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা

 কুরঅান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা,গুরুত্ব,ফজিলত ও শিক্ষা না করার কুফল:-

১. কুরআন শিক্ষা ফরয :
প্রত্যেক মুসলিমকে কুরআন পড়া জানতে হবে। যে নিজেকে মুসলিম হিসাবে দাবী করবে তাকে অবশ্যই কুরআন শিক্ষা করতে হবে। কুরআন শিক্ষা করা এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, আল্লাহ তা‘আলা কুরআন শিক্ষা করা ফরয করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ ﭐﻗۡﺮَﺃۡ ﺑِﭑﺳۡﻢِ ﺭَﺑِّﻚَ ﭐﻟَّﺬِﻱ ﺧَﻠَﻖَ ١ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻌﻠﻖ : ١ ‏]
অর্থ: ‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন’ [সূরা আলাক : ১]।
কুরআন শিক্ষায় কোন প্রকার অবহেলা করা যাবে না। উম্মাতকে কুরআন শিক্ষার নির্দেশ দিয়ে ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
‏« ﺗَﻌَﻠَّﻤُﻮﺍ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ، ﻭَﺍﺗْﻠُﻮﻩُ ‏»
অর্থ:‘তোমরা কুরআন শিক্ষা কর এবং তিলাওয়াত কর’ [মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবাহ:৮৫৭২]।
২.সালাত আদায়ের জন্য কুরআন শিক্ষা:
আল্লাহ তা‘আলা ঈমানদার বান্দাহদের উপর প্রতিদিন পাচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। কুরআন তেলাওয়াত ছাড়া সালাত আদায় হয় না। সালাত আদায় করার জন্যও কুরআন শিখতে হবে। কুরআনে বলা হয়েছে,
﴿ ﻓَﭑﻗۡﺮَﺀُﻭﺍْ ﻣَﺎ ﺗَﻴَﺴَّﺮَ ﻣِﻦَ ﭐﻟۡﻘُﺮۡﺀَﺍﻥِۚ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻤﺰﻣﻞ : ٢٠ ‏]
অর্থ: ‘অতএব তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়’ [সূরা আল-মুযযাম্মিল: ২০]।
এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‏« ﻻََ ﺻَﻼَﺓَ ﻟِﻤَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﻘْﺮَﺃْ ﺑِﻔَﺎﺗِﺤَﺔِ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ‏» .
অর্থ: ‘যে ব্যক্তি সূরা ফাতেহা পড়ে না তার সালাতই হয় না’। [সহীহ বুখারী:৭৫৬]
৩. কুরআন প্রচারের জন্য শিক্ষা করা :
কুরআন মাজীদে কুরআন প্রচারের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে নির্দেশের আলোকে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরাম কুরআন প্রচার-প্রসারে নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছেন। যে ব্যক্তি কুরআন পড়তে জানে না, সে কীভাবে তা প্রচার করবে ? সুতরাং কুরআন প্রচার-প্রসারে ভূমিকা পালন করার জন্য তা শিক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। কুরআনে বলা হয়েছে,
﴿ ۞ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﺑَﻠِّﻎۡ ﻣَﺂ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴۡﻚَ ﻣِﻦ ﺭَّﺑِّﻚَۖ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٦٧ ‏]
অর্থ: হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও [সূরা মায়িদাহ : ৬৭]।
৪. কুরআন শিক্ষা অন্তরের প্রশান্তি :
মানব জীবনে অর্থ বা অন্যান্য কারণে জাগতিক তৃপ্তি আসলেও প্রকৃত তৃপ্তি ও শান্তি কুরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব। এজন্য কুরআনে বলা হয়েছে,
﴿ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻭَﺗَﻄۡﻤَﺌِﻦُّ ﻗُﻠُﻮﺑُﻬُﻢ ﺑِﺬِﻛۡﺮِ ﭐﻟﻠَّﻪِۗ ﺃَﻟَﺎ ﺑِﺬِﻛۡﺮِ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﺗَﻄۡﻤَﺌِﻦُّ ﭐﻟۡﻘُﻠُﻮﺏُ ٢٨ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺮﻋﺪ : ٢٨ ‏]
অর্থ : ‘যারা ঈমান আনে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়’ [সূরা আর-রা‘দ:২৮]।
৫.হেদায়াত লাভের জন্য কুরআন শিক্ষা :
কুরআনের মাধ্যমেই হেদায়াতের সন্ধান পাওয়া যাবে। সেজন্য কুরআন থেকে হেদায়াত পাবার জন্য কুরআন শিক্ষা করতে হবে । কুরআনে বলা হয়েছে,
﴿ ﺇِﻥَّ ﻫَٰﺬَﺍ ﭐﻟۡﻘُﺮۡﺀَﺍﻥَ ﻳَﻬۡﺪِﻱ ﻟِﻠَّﺘِﻲ ﻫِﻲَ ﺃَﻗۡﻮَﻡُ ﴾ ‏[ ﺍﻻﺳﺮﺍﺀ : ٩ ‏]
অর্থ: ‘নিশ্চয় এ কুরআন এমন পথ-প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল ও সঠিক’।
[সূরা বনি-ইসরাঈল:০৯]
৬. জান্নাতে যাওয়ার জন্য কুরআন শিক্ষা:
প্রত্যেক মুমিনের সর্বোচ্চ কামনা হলো জান্নাতে যাওয়া। তাই জান্নাতে যাওয়ার জন্য কুরআন শিক্ষা করতে হবে। হাদিসে এসেছে,
‏« ﺍَﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻭَﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻳَﺸْﻔَﻌَﺎﻥِ ﻟِﻠْﻌَﺒْﺪِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﺃَﻱْ ﺭَﺏِّ ﻣَﻨَﻌْﺘُﻪُ ﺍﻟﻄَّﻌَﺎﻡَ ﻭَﺍﻟﺸَّﻬَﻮَﺍﺕِ ﺑِﺎﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ﻓَﺸَﻔِّﻌْﻨِﻲ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻣَﻨَﻌْﺘُﻪُ ﺍﻟﻨَّﻮْﻡَ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻓَﺸَﻔِّﻌْﻨِﻲ ﻓِﻴﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﻓَﻴُﺸَﻔَّﻌَﺎﻥِ ‏» .
অর্থ: সিয়াম ও কুরআন কিয়ামাতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে আমার রব, আমি দিনের বেলায় তাকে (এ সিয়াম পালনকারীকে) পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর। অনুরূপভাবে কুরআন বলবে, হে আমার রব,আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবূল করা হবে [মুসনাদআহমাদ: ৬৬২৬]।
*কুরআন শিক্ষা ও তিলাওয়াতের ফযিলত:-
১. কুরআন তিলাওয়াত আল্লাহর সাথে একটি লাভজনক ব্যবসা:
কুরআন তিলাওয়াত আল্লাহর সাথে একটি লাভজনক ব্যবসা। বিভিন্ন ব্যবসায় লাভ এবং ক্ষতি দুটিরই সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এখানে লাভ ছাড়া কোন প্রকার ক্ষতির আসংখা নেই। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿ ﺇِﻥَّ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺘۡﻠُﻮﻥَ ﻛِﺘَٰﺐَ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺃَﻗَﺎﻣُﻮﺍْ ﭐﻟﺼَّﻠَﻮٰﺓَ ﻭَﺃَﻧﻔَﻘُﻮﺍْ ﻣِﻤَّﺎ ﺭَﺯَﻗۡﻨَٰﻬُﻢۡ ﺳِﺮّٗﺍ ﻭَﻋَﻠَﺎﻧِﻴَﺔٗ ﻳَﺮۡﺟُﻮﻥَ ﺗِﺠَٰﺮَﺓٗ ﻟَّﻦ ﺗَﺒُﻮﺭَ ٢٩ ﻟِﻴُﻮَﻓِّﻴَﻬُﻢۡ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻢۡ ﻭَﻳَﺰِﻳﺪَﻫُﻢ ﻣِّﻦ ﻓَﻀۡﻠِﻪِۦٓۚ ﺇِﻧَّﻪُۥ ﻏَﻔُﻮﺭٞ ﺷَﻜُﻮﺭٞ ٣٠ ﴾ ‏[ ﻓﺎﻃﺮ : ٢٩، ٣١ ‏]
‘‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে, আমার দেয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে এমন ব্যবসার যা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিদান দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরো অধিক দান করবেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’’ [সূরা ফাতির ২৯-৩০]
২. কুরআন পাঠকারী প্রত্যেক হরফের জন্য সওয়াব লাভ করে:
কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিরাট সওয়াব অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। এর সাথে অনেক উপকারিতাও রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‏« ﻣَﻦْ ﻗَﺮَﺃَ ﺣَﺮْﻓًﺎ ﻣِﻦْ ﻛِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﻪُ ﺑِﻪِ ﺣَﺴَﻨَﺔٌ ﻭَﺍﻟْﺤَﺴَﻨَﺔُ ﺑِﻌَﺸْﺮِ ﺃَﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﺃَﻗُﻮﻝُ ﺍﻟﻢ ﺣَﺮْﻑٌ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺃَﻟِﻒٌ ﺣَﺮْﻑٌ ﻭَﻟَﺎﻡٌ ﺣَﺮْﻑٌ ﻭَﻣِﻴﻢٌ ﺣَﺮْﻑٌ ‏»
‘‘যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মীম একটি হরফ।’’ [সুনান আত-তিরমিযি:২৯১০]
৩. কুরআনের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সর্বোত্তম ব্যক্তি:
কুরআন শিক্ষার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়। উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‏« ﺧَﻴْﺮُﻛُﻢْ ﻣَﻦْ ﺗَﻌَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻭَﻋَﻠَّﻤَﻪُ ‏»
অর্থ: ‘‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয় ’’ [বুখারী: ৫০২৭]।
৪. কুরআন তিলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে :
কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে।এটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
‏« ﺍﻗْﺮَﺀُﻭﺍ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺄْﺗِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺷَﻔِﻴﻌًﺎ ﻟِﺄَﺻْﺤَﺎﺑِﻪِ ‏»
অর্থ:‘তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর, কারণ, কুরআন কেয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে’ [মুসলিম: ১৯১০]।
৫. কুরআন পড়া উত্তম সম্পদ অর্জন
কুরআন পড়া বা শিক্ষা দেয়ার কাজে নিয়োজিত থাকা উত্তম সম্পদ অর্জন করার অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‏« ﺃَﻳُّﻜُﻢْ ﻳُﺤِﺐُّ ﺃَﻥْ ﻳَﻐْﺪُﻭَ ﻛُﻞَّ ﻳَﻮْﻡٍ ﺇِﻟَﻰ ﺑُﻄْﺤَﺎﻥَ ﺃَﻭْ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻌَﻘِﻴﻖِ ﻓَﻴَﺄْﺗِﻲَ ﻣِﻨْﻪُ ﺑِﻨَﺎﻗَﺘَﻴْﻦِ ﻛَﻮْﻣَﺎﻭَﻳْﻦِ ﻓِﻲ ﻏَﻴْﺮِ ﺇِﺛْﻢٍ ﻭَﻟَﺎ ﻗَﻄْﻊِ ﺭَﺣِﻢٍ ﻓَﻘُﻠْﻨَﺎ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻧُﺤِﺐُّ ﺫَﻟِﻚَ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻓَﻠَﺎ ﻳَﻐْﺪُﻭ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻓَﻴَﻌْﻠَﻢُ ﺃَﻭْ ﻳَﻘْﺮَﺃُ ﺁﻳَﺘَﻴْﻦِ ﻣِﻦْ ﻛِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻪُ ﻣِﻦْ ﻧَﺎﻗَﺘَﻴْﻦِ ﻭَﺛَﻠَﺎﺙٌ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻪُ ﻣِﻦْ ﺛَﻠَﺎﺙٍ ﻭَﺃَﺭْﺑَﻊٌ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻪُ ﻣِﻦْ ﺃَﺭْﺑَﻊٍ ﻭَﻣِﻦْ ﺃَﻋْﺪَﺍﺩِﻫِﻦَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺈِﺑِﻞِ ‏»
তোমাদের কেউ কেন সকালে মসজিদে গিয়ে আলস্নাহর কোরআন হতে দুটি আয়াত পড়ে না বা শিক্ষা দেয় না ? তাহলে সেটি তার জন্য দুটি উট লাভ করার চেয়ে উত্তম হবে। তিনটি আয়াত তিনটি উট অপেক্ষা উত্তম। চারটি আয়াত চার উট অপেক্ষাা উত্তম। অনুরূপ আয়াতের সংখ্যা অনুপাতে উটের সংখ্যা অপেক্ষা উত্তম।-[সহীহ মুসলিম : ১৩৩৬]।
৬. কুরআন তিলাওয়াত ঈমান বৃদ্ধি করে :
কুরআন তিলাওয়াত বানাদাহর জন্য এমন উপকারী যে, তা তিলাওয়াত করলে ঈমান বৃদ্ধি পায়। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﭐﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨُﻮﻥَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺇِﺫَﺍ ﺫُﻛِﺮَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺟِﻠَﺖۡ ﻗُﻠُﻮﺑُﻬُﻢۡ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺗُﻠِﻴَﺖۡ ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢۡ ﺀَﺍﻳَٰﺘُﻪُۥ ﺯَﺍﺩَﺗۡﻬُﻢۡ ﺇِﻳﻤَٰﻨٗﺎ ﻭَﻋَﻠَﻰٰ ﺭَﺑِّﻬِﻢۡ ﻳَﺘَﻮَﻛَّﻠُﻮﻥَ ٢ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ : ٢ ‏]
অর্থ: ‘মুমিন তো তারা, যাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং যারা তাদের রবের উপরই ভরসা করে’। [সূরা আনফাল:২]
৭. কুরআনের ধারক-বাহক ঈর্ষণীয় ব্যক্তি:
কোন ব্যক্তি কুরআনের জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে তার হক আদায় করে তেলাওয়াত করলে তার সাথে ঈর্ষা বা তার মত হওয়ার আকাঙ্খা করা যাবে।
‏« ﻻََ ﺣَﺴَﺪَ ﺇِﻻَّ ﻓِﻲ ﺍﺛْﻨَﺘَﻴْﻦِ ﺭَﺟُﻞٌ ﺁﺗَﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻓَﻬْﻮَ ﻳَﺘْﻠُﻮﻩُ ﺁﻧَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻭَﺁﻧَﺎﺀَ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ﻭَﺭَﺟُﻞٌ ﺁﺗَﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣَﺎﻻً ﻓَﻬْﻮَ ﻳُﻨْﻔِﻘُﻪُ ﺁﻧَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻭَﺁﻧَﺎﺀَ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ‏»
অর্থ: ‘একমাত্র দুই ব্যক্তির উপর ঈর্ষা করা যায়। এক ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ তা‘আলা কোরআনের ইলম দান করেছেন, সে দিবা-রাত্রি ঐ কোরআন তিলাওয়াতে ব্যস্ত থাকে। দ্বিতীয় সে ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ তা‘আলা ধন-সম্পদ দান করেছেন। সে তা দিনরাত (বৈধ কাজে) খরচ করে’ [সহীহ বুখারী :৭৫২৯]।
*কুরআন শিক্ষা না করার পরিনতি:-
১. রাসূলের অভিযোগ পেশ :
কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার অনুমতিতে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মাতের জন্য শাফায়াত চাইবেন। কিন্তু যারা কুরআন শিক্ষা করেনি, কুরআনের যেসব হক রয়েছে তা আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ পেশ করবেন। কুরআনে এসেছে :
﴿ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﻳَٰﺮَﺏِّ ﺇِﻥَّ ﻗَﻮۡﻣِﻲ ﭐﺗَّﺨَﺬُﻭﺍْ ﻫَٰﺬَﺍ ﭐﻟۡﻘُﺮۡﺀَﺍﻥَ ﻣَﻬۡﺠُﻮﺭٗﺍ ٣٠ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻔﺮﻗﺎﻥ : ٣٠ ‏]
অর্থ: ‘আর রাসূল বলবেন, হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে’ [সূরা আল-ফুরকান-৩০] ইবন কাসীর বলেন, কুরআন না পড়া, তা অনুসারে আমল না করা, তা থেকে হেদায়াত গ্রহণ না করা, এ সবই কুরআন পরিত্যাগ করার শামিল।
২. কিয়ামতে অন্ধ হয়ে উঠবে :
যে কুরআন শিখা থেকে থেকে বিমুখ হয়ে থাকল, সে কতইনা দুর্ভাগা! আলকুরআনে এসেছে,
﴿ ﻭَﻣَﻦۡ ﺃَﻋۡﺮَﺽَ ﻋَﻦ ﺫِﻛۡﺮِﻱ ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻪُۥ ﻣَﻌِﻴﺸَﺔٗ ﺿَﻨﻜٗﺎ ﻭَﻧَﺤۡﺸُﺮُﻩُۥ ﻳَﻮۡﻡَ ﭐﻟۡﻘِﻴَٰﻤَﺔِ ﺃَﻋۡﻤَﻰٰ ١٢٤ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺏِّ ﻟِﻢَ ﺣَﺸَﺮۡﺗَﻨِﻲٓ ﺃَﻋۡﻤَﻰٰ ﻭَﻗَﺪۡ ﻛُﻨﺖُ ﺑَﺼِﻴﺮٗﺍ ١٢٥ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺬَٰﻟِﻚَ ﺃَﺗَﺘۡﻚَ ﺀَﺍﻳَٰﺘُﻨَﺎ ﻓَﻨَﺴِﻴﺘَﻬَﺎۖ ﻭَﻛَﺬَٰﻟِﻚَ ﭐﻟۡﻴَﻮۡﻡَ ﺗُﻨﺴَﻰٰ ١٢٦ ﴾ ‏[ ﻃﻪ : ١٢٤، ١٢٦ ‏]
অর্থ: আর যে আমার যিক্র (কুরআন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, নিশচয় তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমি কিয়ামতের দিন তাকে অন্ধ অবস্থয় উঠাবো। সে বলবে, হে আমার রব, কেন আপনি আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালেন ? অথচ আমিতো ছিলাম দৃষ্টিশক্তিসম্পন্নণ? তিনি বলবেন, অনুরুপভাবে তোমার নিকট আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অত:পর তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হল’ [সূরা তাহা-১২৪-১২৬]।
৩.মূক, বধির অবস্থায় ঊঠবে:
সবচেয়ে বড় হেদায়েত আল-কুরআন প্রত্যাখ্যানকারীদের কবর হবে সংকীর্ণ, যার দরুন তাদের দেহের পাঁজরগুলো বাঁকা হয়ে যাবে। অবশেষে কিয়ামতের দিন মূক ও বধির হয়ে উঠবে । আলকুরআনে এসেছে :
﴿ ﻭَﻧَﺤۡﺸُﺮُﻫُﻢۡ ﻳَﻮۡﻡَ ﭐﻟۡﻘِﻴَٰﻤَﺔِ ﻋَﻠَﻰٰ ﻭُﺟُﻮﻫِﻬِﻢۡ ﻋُﻤۡﻴٗﺎ ﻭَﺑُﻜۡﻤٗﺎ ﻭَﺻُﻤّٗﺎۖ ﻣَّﺄۡﻭَﻯٰﻬُﻢۡ ﺟَﻬَﻨَّﻢُۖ ﻛُﻠَّﻤَﺎ ﺧَﺒَﺖۡ ﺯِﺩۡﻧَٰﻬُﻢۡ ﺳَﻌِﻴﺮٗﺍ ٩٧ ﴾ ‏[ ﺍﻻﺳﺮﺍﺀ : ٩٧ ‏]
আমি কিয়ামতের দিন তাদেরকে সমবেত করব তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়, অন্ধ অবস্থায়, মূক অবস্থায়, বধির অবস্থায়। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম। যখন জাহান্নামের আগুন নির্বাপিত হওয়ার উপক্রম হবে আমি তখন তাদের জন্য অগ্নি আরও বাড়িয়ে দেব। [সূরা বনি-ঈসরাইল:৯৭]
৪.গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত :
কুরআন শিক্ষা না করা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার শামিল। কুরআনে এসেছে,
﴿ﺃُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﻛَﭑﻟۡﺄَﻧۡﻌَٰﻢِ ﺑَﻞۡ ﻫُﻢۡ ﺃَﺿَﻞُّۚ ﺃُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﭐﻟۡﻐَٰﻔِﻠُﻮﻥَ ١٧٩ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻋﺮﺍﻑ : ١٧٨ ‏]
অর্থ: ‘এরা চতুস্পদ জন্তুর ন্যায় বরং এরা তাদের চেয়েও আরো অধম ও নিকৃষ্ট এরাই হলো গাফেল’ [সূরা আরাফ-১৭৯] ।
৫. কুরআন দলিল হিসাবে আসবে :
কুরআন শিক্ষা থেকে বিরত থাকার কারণে কুরআন তার বিপক্ষের দলিল হিসাবে উপস্থিত হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন :
‏« ﻭَﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﺣُﺠَّﺔٌ ﻟَﻚَ ﺃَﻭْ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ‏»
অর্থ: কুরআন তোমার পক্ষে কিংবা বিপক্ষের দলীল। [সহীহ মুসলিম: ৩২৮ ]
৬. জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হবে :
জাহান্নামের মত ভয়াবহ কঠিন জায়গা আর নেই। কুরআন শিক্ষা না করার কারণে জাহান্নামে যেতে হবে। নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‏« ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻣُﺸَﻔَّﻊٌ ، ﻭَﻣَﺎ ﺣِﻞٌ ﻣُﺼَﺪَّﻕٌ ، ﻣَﻦْ ﺟَﻌَﻠَﻪُ ﺇِﻣَﺎﻣَﻪُ ﻗَﺎﺩَﻩُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﻌَﻠَﻪُ ﺧَﻠْﻒَ ﻇَﻬْﺮِﻩِ ﺳَﺎﻗَﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ . ‏»
অর্থ: ‘কুরআন সুপারিশকারী এবং তাঁর সুপারিশ গ্রহণযোগ্য। সুতরাং যে ব্যক্তি কুরআনকে সামনে রেখে তাঁর অনুসরণ করবে, কুরআন তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি একে নিজ পশ্চাতে রেখে দিবে, কুরআন তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে’ [সহীহ ইবনে হিববান : ১২৪]।
৭. আখেরাতে জবাবদিহী করতে হবে:
কুরআন শিক্ষায় যথাযথ ভুমিকা পালন না করলে এ বিষয়ে আখেরাতে জবাবদিহী করতে হবে । তা‘আলা বলেন,
﴿ ﻭَﺇِﻧَّﻪُۥ ﻟَﺬِﻛۡﺮٞ ﻟَّﻚَ ﻭَﻟِﻘَﻮۡﻣِﻚَۖ ﻭَﺳَﻮۡﻑَ ﺗُﺴَۡٔﻠُﻮﻥَ ٤٤ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺰﺧﺮﻑ : ٤٤ ‏]
অর্থ: নিশ্চয় এ কুরআন তোমার জন্য এবং তোমার কওমের জন্য উপদেশ। আর অচিরেই তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে। [সূরা যুখরুফ : ৪৪]
*কুরআন শিক্ষায় করণীয়:-
[১] ভাল শিক্ষকের কাছে পড়া:
যিনি সহীহভাবে কুরআন পড়তে পারেন তার নিকটই কুরআন শিক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে যে শিক্ষকের কুরআন শিক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ আছে তার কাছে পড়লে আরো ভাল হয়।
[২] নিয়মিত পড়া :
সহীহভাবে কুরআন শিক্ষার জন্য নিয়মিত সময় দেয়া দরকার। যদিও কম সময় হয়। প্রতিদিন শেখার মধ্যে থাকলে সহীহভাবে কুরআন শিক্ষা সহজ হবে এবং যা শেখা হবে তা আয়ত্ত্বে থাকবে।
[৩] মশক করা :
কোন যোগ্য শিক্ষকের কাছে মশক করলে পড়ার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। মশক হলো- শিক্ষক পড়বে তারপর সেভাবে ছাত্রও পড়বে। এ ছাড়া বিভিন্ন সিডির মাধ্যমেও মশক করা যায়। এক্ষেত্রে বিশ্ববিখ্যাত ক্বারী মানশাওয়াভীর কুরআন প্রশিক্ষণ সিডির সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।
[৪] পরিবার পরিজন ও সন্তানদের শিক্ষা দেয়া:
প্রত্যেক মুসলিমকে তার পরিবার পরিজন ও সন্তানদের কুরআন শিক্ষা দেয়া অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। কুরআনে এসেছে,
﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻗُﻮٓﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢۡ ﻭَﺃَﻫۡﻠِﻴﻜُﻢۡ ﻧَﺎﺭٗﺍ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺘﺤﺮﻳﻢ : ٦ ‏]
অর্থ:‘হে ইমানদারগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও’ [সূরা তাহরীম-৬]।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,
‏« ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢ ﺑِﺎﻟْﻘُﺮْﺁَﻥ ، ﻓَﺘَﻌَﻠَّﻤُﻮﻩ ﻭَﻋَﻠَّﻤُﻮﻩ ﺃَﺑْﻨَﺎﺋِﻜُﻢ ، ﻓَﺈِﻧَّﻜُﻢ ﻋَﻨْﻪ ﺗُﺴْﺄَﻟُﻮْﻥ ، ﻭَﺑِﻪ ﺗُﺠْﺰَﻭْﻥ ‏»
অর্থর্: কুরআনের বিষয়ে তোমাদের উপর অবশ্য পালনীয় এই যে, কুরআন শিক্ষা করা এবং তোমাদের সন্তানদের কুরআন শিক্ষা দেয়া। কেননা এ বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে এবং তার প্রতিদানও দেয়া হবে। [শরহে সহীহ বুখারী, ইবন বাত্তাল : ৪৬]
[৫] ফযিলাতপূর্ণ সূরাগুলো বেশী বেশী করা :
ফযীলতপূর্ণ সূরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
‏« ﺃَﻳَﻌْﺠِﺰُ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﻘْﺮَﺃَ ﻓِﻰ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﺛُﻠُﺚَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ . ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻭَﻛَﻴْﻒَ ﻳَﻘْﺮَﺃُ ﺛُﻠُﺚَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ ﻗَﺎﻝَ : ‏( ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﺣَﺪٌ ‏) ﻳَﻌْﺪِﻝُ ﺛُﻠُﺚَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ . ‏»
‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বললেন, কুরআনের এক তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়া পড়বে তিনি বললেন, (সূরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য’ [সহীহ বুখারী: ৫০১৫] ।
অতএব যেসব সূরা ও আয়াত সম্পর্কে অধিক ফযীলত ও বেশি নেকীর কথা বর্ণিত হয়েছে এবং যেগুলো ভালোভাবে শেখা ও বেশি বেশি পড়া দরকার তার মধ্যে রয়েছে, শুক্রবার ফজর নামাজে সূরা আলিফ-লাম-সিজদাহ পড়া, ঘুমানোর আগে সূরা মুলক এবং ফরয নামাজের পর সূরা নাস, সূরা ফালাক ও আয়াতুল কুরসী পড়া। আল্লাহ তা‘আলা পাঠকসহ আমাদের সকলকে কুরআন শিক্ষার তাওফীক দিন। আমীন।
(@)

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...