‘আল্লাহর প্রতি শিরক করার পাপ আল্লাহ কখনো মাফ করবেন না। তবে অন্য যে কোনো পাপ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মাফ করতে পারেন। (সূরা নিসা আয়াত ৪৮)
“আর যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক, তাহলে আল্লাহর উপরই ভরসা কর।”(সূরা মায়িদা আয়াত ২৩)
“আর মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপরই নির্ভর করা।” (সুরা ইব্রাহীম আয়াত ১১)
“আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন করো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।” (ইউনুস আয়াত ১০৬, ১০৭)
.আবু বাশীর আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে - তিনি একবার রাসূল (সাঃ) এর সফর সঙ্গী ছিলেন । এ সফরে রাসূল (সাঃ) একটি নির্দিষ্ট এলাকায় একজন দূত পাঠালেন ।এর উদ্দেশ্য ছিল কোন উটের গলায় যেন ধনুকের কোন রজ্জু লটকানো না থাকে অথবা এ জাতীয় রজ্জু যেন কেটে ফেলা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০০৫ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২১১৫)
সাঈদ বিন জুবাইর থেকে বর্ণিত আছে , তিনি বলেন -
যে ব্যক্তি কোন মানুষের তাবিজ-কবজ ছিঁড়ে ফেলবে বা কেটে ফেলবে সে ব্যক্তি একটি গোলাম আযাদ করার মতো কাজ করল
(ওয়াকী) ইবরাহীম থেকে বর্ণিত হাদী তিনি বলেন , তাঁর সব ধরনের তাবিজ-কবজ অপছন্দ করতেন , চাই তার উত্স কুরআন হোক বা অন্য কিছু হোক ।(মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বা , হাদীস নং ৩৫১৮) ১ম অধ্যায় , হাদীস নং ৩৫১৮)
সাহাবী রুআইফি থেকে ইমাম আহমদ বর্ণনা করে , তিনি [রুআইফি] বলেছেন , "রাসূল (সাঃ) আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন , হে রুআইফি , তোমার হায়াত সম্ভবত দীঘ হবে ।লোকজনকে জানিয়ে দিও , "যে ব্যক্তি দাড়িতে গিরা দিবে ,অথবা গলায় তাবিজ-কবজ ঝুলাবে অথবা পশুর মল কিংবা হাড় দ্বারা এস্তেঞ্জা করবে , মুহাম্মদ (সাঃ) তার জিম্মাদারী থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ।(মুসনাদ আহমদ , ৪/১০৭ , ১০৯; সুনান ইবনু মাজাহ , হাদীস নং ৩৬)
“তোমরা বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুরই ইচ্ছা করতে পারনা” ( সূরা তাক'ওয়ীর ২৯)
তারা আরও বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।(সূরা মূলক আয়াত ১০)
সুরা ইউনুস: আয়াত নং ২২-২৩: ব্যাখ্যা সহ :
﴿هُوَ الَّذِي يُسَيِّرُكُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ ۖ حَتَّىٰ إِذَا كُنتُمْ فِي الْفُلْكِ وَجَرَيْنَ بِهِم بِرِيحٍ طَيِّبَةٍ وَفَرِحُوا بِهَا جَاءَتْهَا رِيحٌ عَاصِفٌ وَجَاءَهُمُ الْمَوْجُ مِن كُلِّ مَكَانٍ وَظَنُّوا أَنَّهُمْ أُحِيطَ بِهِمْ ۙ دَعَوُا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ لَئِنْ أَنجَيْتَنَا مِنْ هَٰذِهِ لَنَكُونَنَّ مِنَ الشَّاكِرِينَ﴾
২২) তিনিই তোমাদের জলে স্থলে চলাচলের ব্যবস্থা করেন৷ কাজেই যখন তোমরা নৌকায় চড়ে অনূকূল বাতাসে আনন্দে সফর করতে থাকো, তারপর অকস্মাত বিরুদ্ধ বাতাস প্রবল হয়ে ওঠে, চারদিক থেকে ঢেউয়ের আঘাত লাগতে থাকে এবং আরোহীরা মনে করতে থাকে তারা তরংগ বেষ্টিতে হয়ে গেছে তখন সবাই নিজের আনুগত্যকে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করে তার কাছে দোয়া করতে থাকে এবং বলতে থাকে, “যদি তুমি আমাদের এ বিপদ থেকে উদ্ধার করো তাহলে আমরা শোকরগুজার বান্দা হয়ে যাবো”৷ ৩১
৩১ . প্রত্যেক মানুষের অন্তরে রয়েছে তাওহিদের সত্যতার নিশানী৷ যতদিন উপায়-উপকরণ অনুকূল থাকে ততদিন মানুষ আল্লাহকে ভুলে পার্থিব জীবন নিয়ে অহংকারে মত্ত হয়ে থাকে৷ আর উপায় উপকরণ প্রতিকূল হয়ে গেলে এবং এ সংগে যেসব সহায়ের ভিত্তিতে সে পৃথিবীতে বেঁচেছিল সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেলে তারপর কট্টর মুশরিক ও নাস্তিকের মনেও এ সাক্ষ ধ্বনিত হতে থাকে যে, কার্যকারণের এ সমগ্র জগতের ওপর কোন আল্লাহর কর্তৃত্ব পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে, তিনি একক আল্লাহ এবং তিনি শক্তিশালী ও বিজয়ী (আনআম ২৯ টীকা দেখুন৷)
﴿فَلَمَّا أَنجَاهُمْ إِذَا هُمْ يَبْغُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ ۗ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا بَغْيُكُمْ عَلَىٰ أَنفُسِكُم ۖ مَّتَاعَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ ثُمَّ إِلَيْنَا مَرْجِعُكُمْ فَنُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
২৩) কিন্তু যখন তিনি তাদেরকে বিপদমুক্ত করেন তখন তারাই সত্য থেকে বিচ্যূত হয়ে পৃথিবীতে বিদ্রোহ করতে থাকে৷ হে মানষ! তোমাদের এ বিদ্রোহ উল্টা তোমাদের বিরুদ্ধেই চলে যাচ্ছে৷ দুনিয়ার কয়েকদিনের আরাম আয়েশ (ভোগ করে নাও), তারপর্ আমার দিকেই তোমাদের ফিরে আসতে হবে৷ তোমরা কি কাজে লিপ্ত ছিলে তা তখন তোমাদের আমি জানিয়ে দেবো৷ ==============================
আল্লাহ ব্যতীত আল্লাহ্র সৃষ্টির প্রতি ভরসা বা নির্ভর করা শিরক
**আপনি ছিলেন বলেই আজকে রক্ষা পেলাম** **মাঝি ভাল বলে নৌকা ডুবল না** **ড্রাইভার ভাল বলে দুর্ঘটনা ঘটলো না** **আমি আপনার উপরই ভরসা করছি** **আপনি ছাড়া আর কে সাহায্য করবে** **দয়াল বাবা, পীর বাবা, দয়ার নাবী আমাই রক্ষা কর** **তুমই শুধু আমার একমাত্র ভরসা** **তুমই শুধু আমার একমাত্র আমাকে বাচাতে পারো (নাঊজুবিল্লাহ)** **
=============================
প্রশ্ন: আমি অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করি যে আল্লাহ একমাত্র আমাদের রক্ষা করার এবং বাঁচানোর মালিক। কিন্তু চলার পথে কেউ যদি আমাকে কোন দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে আর আমি যদি বলি আপনি আমাকে বাঁচালেন। তাহলে কি শিরক করা হবে?
উত্তর: এক্ষেত্রে সরাসরি বলা যাবেনা যে, আপনি আমাকে বাচালেন। বরং, বলতে হবে, আল্লাহর আপনার মঙ্গল করুন। আল্লাহ একমাত্র আমাদের রক্ষা করার এবং বাঁচানোর মালিক। আল্লাহই আমাকে বাচিয়েছেন, তবে আপনার উসিলায় আজকে আল্লাহ আমাকে রক্ষা করলেন।
No comments:
Post a Comment