৪২৬৩-[১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন নিঃশ্বাসে পান করতেন। অর্থাৎ- একবারে এক ঢোকে সবটুকু পান করতেন না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
অবশ্য মুসলিম-এর রিওয়ায়াতের মধ্যে বর্ধিত আছে এবং তিনি বলেন, এভাবে পান করা তৃপ্তিদায়ক, স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ ও লঘুপাক।
[1] সহীহ : বুখারী ৫৬৩১, মুসলিম (২০২৮)-১২২, তিরমিযী ১৮৮৪, ইবনু মাজাহ ৩৪১৬, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১১৯, তাহক্বীক মুসনাদে আহমাদ ১৩২৩০, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩৩০। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ব্যাখ্যাঃ ইমাম বাগাবী (রহিমাহুল্লাহ) ‘শারহুস্ সুন্নাহ্’ গ্রন্থে বলেনঃ এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তিনবারে পানি পান করা। প্রতিবারে পাত্র থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে শ্বাস ফেলে নুতন করে পান শুরু করা। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাত্রের মধ্যে শ্বাস ফেলতে নিষেধ করেছেন।
কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ (হাদীসের বর্ণনানুযায়ী) পান করার দ্বারা বেশি তৃষ্ণা নিবারণ হয়ে থাকে এবং খাদ্যের হজম, পরিপাকের উপর ক্ষমতা জাগিয়ে থাকে। পাকস্থলীর ধ্বংস এবং রগ-রেশার দুর্বলতা থেকে সংরক্ষণ হয়ে থাকে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا দু‘বার অথাব তিনবার, অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক শ্বাসে পানি পান করা শেষ করতেন না। বরং দুই শ্বাসে পানি পান করে তৃপ্ত হলে তাহলে আর পান করতেন না। আর তৃপ্ত না হলে তৃতীয়বার পান করতেন। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৪২৬৩)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – عَنِ الشُّرْبِ مِنْ فِي السِّقَاءِ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৬৪-[২] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখ হতে (মুখ লাগিয়ে) পান করতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – عَنِ الشُّرْبِ مِنْ فِي السِّقَاءِ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৬৪-[২] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখ হতে (মুখ লাগিয়ে) পান করতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫৬২৭, ৫৬২৯; মুসলিম (২০২৩)-১১১, দারিমী ২১১৭, তাহক্বীক মুসনাদে আহমাদ ৭১৫৩, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৩৯৯, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১২১, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৩৫৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩১৭। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ মুযহির (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ একই সাথে পাকস্থলীতে পানি যেয়ে ক্ষতি সাধন করে। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন শ্বাসে পানি পান করতে বলেছেন। যেমনটি পূর্বের হাদীসে বলা হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
অত্র হাদীসে উপদেশমূলক নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। কেননা মশকের বা কলসের মুখে মুখ লাগিয়ে পান করলে ভিতরে কি আছে তা দেখা যায় না। হয়ত কোন অরুচিকর কিছু তার ভিতরে থাকতে পারে। অথবা সকলে একত্রে চলার সময় কেউ এ কাজ করলে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এভাবে পানি পান করলে গলায় আটকে মৃত্যুরও সম্ভাবনা থাকে। কাজেই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত মেনে চলা উচিত। [সম্পাদক]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – عَنِ اخْتِنَاثِ الْأَسْقِيَةِ زَادَ فِي رِوَايَةٍ : وَ ” وَاخْتِنَاثُهَا ” : أَنْ يُقْلَبَ رَأْسُهَا ، ثُمَّ يُشْرَبَ مِنْهُ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – عَنِ اخْتِنَاثِ الْأَسْقِيَةِ زَادَ فِي رِوَايَةٍ : وَ ” وَاخْتِنَاثُهَا ” : أَنْ يُقْلَبَ رَأْسُهَا ، ثُمَّ يُشْرَبَ مِنْهُ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৬৫-[৩] আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশক হতে ইখতিনাস করতে নিষেধ করেছেন। অপর এক রিওয়ায়াতের মধ্যে বর্ধিত আছে, ইখতিনাস হলো মশককে উল্টিয়ে ধরে তার মুখ হতে পানি পান করা। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫৬২৫, ৫৬২৬; মুসলিম (২০২৩)-১১০, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩১৭, দারিমী ২১১৯, তিরমিযী ১৮৯০, ইবনু মাজাহ ৩৪১৮, আবূ দাঊদ ৩৭২০, সহীহুল জামি‘ ১২৮০৭, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১২০, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১১২৬, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ১৯৫৯৯, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৪১২৭, তাহক্বীক মুসনাদে আহমাদ ১৯৯০৬, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৯৯৬, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৫৫৭৬, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৫০৫৭, শু‘আবূল ঈমান ৬০১৬। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ ‘আল্লামা সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ দুর্গন্ধের কারণে এ কাজ করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে, প্রতিনিয়ত এভাবে পানি পান করলে পাত্রের গন্ধ পরিবর্তন হয়ে যাবে।
এটাও বলা হয় যে, পানির পাত্রের মুখ প্রশস্ত হওয়ার কারণে পানকারীর ওপর যেন পড়ে না যায় সে জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে পান করতে নিষেধ করেছেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭১৬; তুহফাতুল আহ্ওয়াবী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৮৯০)
সকল ফকীহ একমত যে, এ নিষেধটি সতর্কতামূলক نَهْيُ تَنْزِيهٍ হারাম নিষেধ নয়। অতঃপর বলা হয়, এ নিষেধের কারণ হলো মশকের মুখে কোন ক্ষতিকর বস্তু থাকতে পারে যা তাকে কষ্ট দিবে, একই সাথে পাকস্থলীতে পানি যেয়ে ক্ষতি সাধন করতে পারে। এও বলা হয় যে, এভাবে পান করলে অন্যের কাছে অরুচিকর হতে পারে। এও বলা হয়েছে যে, এটা দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে অথবা এভাবে পান করাটা অরুচিকর। (শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০২৩)
===========================
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أَنَسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – عَنِ النَّبِيِّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَنَّهُ نَهَى أَنْ يَشْرَبَ الرَّجُلُ قَائِمًا . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
৪২৬৬-[৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম)[1]
৪২৬৬-[৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : মুসলিম (২০২৪)-১১৩, মুসনাদে আহমাদ ৮৩৩৫, তিরমিযী ১৮৭৯, ইবনু মাজাহ ৩৪২৪, আবূ দাঊদ ৩৭১৭, সহীহুল জামি‘ ৬৮২৯, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ২০৮৩, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৩১৬৫। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لَا يَشْرَبَنَّ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَائِمًا ، فَمَنْ نَسِيَ مِنْكُمْ فَلْيَسْتَقِئْ ” . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لَا يَشْرَبَنَّ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَائِمًا ، فَمَنْ نَسِيَ مِنْكُمْ فَلْيَسْتَقِئْ ” . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
৪২৬৭-[৫] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউই যেন দাঁড়িয়ে পান না করে। যদি কেউ ভুলবশতঃ এরূপ করে, সে যেন বমি করে ফেলে। (মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : মুসলিম (২০২৬)-১১৬, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৭৭১৮, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৫০৩৭, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাক্বী ৪৬০২। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ উক্ত হাদীসের মধ্যে দাঁড়িয়ে পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীসের মধ্যে যমযমের পানি এবং ওযূর অবশিষ্ট পানি দাঁড়িয়ে পান করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এ বিরোধের সমাধানে ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ দাঁড়িয়ে পান করা নিষেধের হাদীস মাকরূহে তানযীহীর উপর প্রযোজ্য, আর দাঁড়িয়ে পান করা (সম্পর্কিত হাদীস) হচ্ছে জায়িযের উপর প্রযোজ্য।
(فَمَنْ نَسِيَ مِنْكُمْ فَلْيَسْتَقِئْ) এখানে ভুলে দাঁড়িয়ে পান করলে বমি করে ফেলার নির্দেশ ওয়াজিব নয়, বরং মুস্তাহাব। যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে পান করল তার ওপর মুস্তাহাব হলো বমি করে ফেলা। দলীল স্বরূপ এ সহীহ হাদীসটি। কেননা হাদীসটি কোন ওযরে ওয়াজিব না হলে মুস্তাহাব হবেই।
কাযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ জ্ঞানীদের মধ্যে কোন ইখতিলাফ (মতভেদ) নেই যে, কোন ব্যক্তি ভুল করে দাঁড়িয়ে পান করলে তাকে বমি করা লাগবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হয়ত কোন ওযরের কারণে দাঁড়িয়ে পান করেছিলেন। ‘ইকরিমাহ্ (রহঃ) শপথ করে বলেন, সেদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরোহী অবস্থায় ছিলেন। (শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০২৪)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : أَتَيْتُ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بِدَلْوٍ مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ ، فَشَرِبَ وَهُوَ قَائِمٌ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৬৮-[৬] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি এক বালতি যম্যমে্র পানি নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে উপস্থিত হলাম, তিনি তা দাঁড়িয়ে পান করলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : أَتَيْتُ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بِدَلْوٍ مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ ، فَشَرِبَ وَهُوَ قَائِمٌ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৬৮-[৬] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি এক বালতি যম্যমে্র পানি নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে উপস্থিত হলাম, তিনি তা দাঁড়িয়ে পান করলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ১৬৩৭, মুসলিম (২০২৭)-১১৭, মুসনাদে আহমাদ ২২৪৪, নাসায়ী ২৯৬৫, তিরমিযী ১৮৮২, ইবনু মাজাহ ৩৪২২, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাক্বী ৪৬০১, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ৯১১৫, মুসান্নাফ ইবনু আবী শয়বাহ্ ২৪১০৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩২০, শু‘আবুল ঈমান ৫৯৮৪। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ ‘আল্লামা সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ হাদীসটি জায়িযের উপর প্রযোজ্য। যেমনটি ইমাম নাবাবীর কথা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। এটারও সম্ভাবনা আছে যে, যমযমের পানি পান করার সময় মানুষের ভিড়ে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বসার মতো জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে পান করেন। এটাও সম্ভাবনা আছে যে, পরবর্তীতে দাঁড়িয়ে পান করার বিধানকে মানসূখ করা হয়েছে।
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, যখন তিনি কারও থেকে দাঁড়িয়ে পান করার হাদীসটি শুনলেন, তখন তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দাঁড়িয়ে পান করতে দেখেছিলাম, পরবর্তীতে তাঁকে দাঁড়িয়ে পান করতে নিষেধ করতেও শুনেছি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ عَلِيٍّ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : أَنَّهُ صَلَّى الظُّهْرَ ، ثُمَّ قَعَدَ فِي حَوَائِجِ النَّاسِ فِي رَحَبَةِ الْكُوفَةِ ، حَتَّى حَضَرَتْ صَلَاةُ الْعَصْرِ ، ثُمَّ أُتِيَ بِمَاءٍ ، فَشَرِبَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ ، وَذَكَرَ رَأْسَهُ وَرِجْلَيْهِ ، ثُمَّ قَامَ فَشَرِبَ فَضْلَهُ وَهُوَ قَائِمٌ ، ثُمَّ قَالَ : إِنَّ أُنَاسًا يَكْرَهُونَ الشُّرْبَ قَائِمًا ، وَإِنَّ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُ . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
৪২৬৯-[৭] ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন তিনি যুহরের সলাত আদায় করলেন, অতঃপর জনগণের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ সমাধানের জন্য কূফার (মাসজিদের) আঙ্গিনায় বসলেন। এমনকি ‘আসর সলাতের ওয়াক্ত হয়ে গেল। তারপর পানি আনা হলো। তিনি তার কিছুটা পান করলেন এবং নিজের হস্তদ্বয় ও মুখ ধুইলেন।বর্ণনাকারী তাঁর মাথা ও পদদ্বয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন (অর্থাৎ- উযূ করলেন)। অতঃপর উঠে দাঁড়ালেন এবং দাঁড়ানো অবস্থায় পাত্রের অবশিষ্ট পানি পান করলেন। পরে বললেন, লোকেরা দাঁড়িয়ে পানি পান করাকে মাকরূহ মনে করে, অথচ আমি যেরূপ করেছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও অনুরূপ করেছেন। (বুখারী)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ عَلِيٍّ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : أَنَّهُ صَلَّى الظُّهْرَ ، ثُمَّ قَعَدَ فِي حَوَائِجِ النَّاسِ فِي رَحَبَةِ الْكُوفَةِ ، حَتَّى حَضَرَتْ صَلَاةُ الْعَصْرِ ، ثُمَّ أُتِيَ بِمَاءٍ ، فَشَرِبَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ ، وَذَكَرَ رَأْسَهُ وَرِجْلَيْهِ ، ثُمَّ قَامَ فَشَرِبَ فَضْلَهُ وَهُوَ قَائِمٌ ، ثُمَّ قَالَ : إِنَّ أُنَاسًا يَكْرَهُونَ الشُّرْبَ قَائِمًا ، وَإِنَّ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُ . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
৪২৬৯-[৭] ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন তিনি যুহরের সলাত আদায় করলেন, অতঃপর জনগণের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ সমাধানের জন্য কূফার (মাসজিদের) আঙ্গিনায় বসলেন। এমনকি ‘আসর সলাতের ওয়াক্ত হয়ে গেল। তারপর পানি আনা হলো। তিনি তার কিছুটা পান করলেন এবং নিজের হস্তদ্বয় ও মুখ ধুইলেন।বর্ণনাকারী তাঁর মাথা ও পদদ্বয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন (অর্থাৎ- উযূ করলেন)। অতঃপর উঠে দাঁড়ালেন এবং দাঁড়ানো অবস্থায় পাত্রের অবশিষ্ট পানি পান করলেন। পরে বললেন, লোকেরা দাঁড়িয়ে পানি পান করাকে মাকরূহ মনে করে, অথচ আমি যেরূপ করেছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও অনুরূপ করেছেন। (বুখারী)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫৬১৬, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৩৫৭, শু‘আবুল ঈমান ৫৯৮২, মুসনাদে আহমাদ ৯৭০, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৩০৯। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ হাদীসে উল্লেখিত উযূর পদ্ধতি সম্পর্কে সুনানে নাসায়ীতে বলা হয়েছে, وَهٰذَا وُضُوءُ مَنْ لَمْ يُحْدِثْ এটা হলো ঐ ব্যক্তির উযূর পদ্ধতি যার উযূ নষ্ট হয়নি। এটি সহীহুল বুখারীর শর্তানুযায়ী সহীহ। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৬১৬)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ جَابِرٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – دَخَلَ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ ، وَمَعَهُ صَاحِبٌ لَهُ ، فَسَلَّمَ فَرَدَّ الرَّجُلُ وَهُوَ يُحَوِّلُ الْمَاءَ فِي حَائِطٍ ، فَقَالَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنْ كَانَ عِنْدَكَ مَاءٌ بَاتَ فِي شَنَّةٍ وَإِلَّا كَرَعْنَا ؟ ” فَقَالَ : عِنْدِي مَاءٌ بَاتَ فِي شَنٍّ ، فَانْطَلَقَ إِلَى الْعَرِيشِ فَسَكَبَ فِي قَدَحٍ مَاءً ، ثُمَّ حَلَبَ عَلَيْهِ مِنْ دَاجِنٍ ، فَشَرِبَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – ثُمَّ أَعَادَ فَشَرِبَ الرَّجُلُ الَّذِي جَاءَ مَعَهُ . ( رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ )
৪২৭০-[৮] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসারীর নিকট গেলেন। তাঁর সঙ্গে একজন সাথী ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম করলেন এবং লোকটি সালামের জবাব দিলো। এ সময় সে তার বাগানে পানি দিচ্ছিল। তখন (লোকটির উদ্দেশে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে রাত্রের মশকে রাখা বাসি পানি আছে কি? অন্যথায় আমরা (এতে) মুখ লাগিয়ে পান করব। সে বলল, আমার কাছে রাত্রে মশকে রাখা পানি আছে। অতঃপর সে তার ঝুপড়িতে গেল এবং একটি পেয়ালায় পানি ঢালল, এরপর তাতে গৃহপালিত বকরী দোহন করল। পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। সে আবার তাতে (পানীয়) নিলো এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে যে সাহাবী ছিলেন তিনি তা পান করলেন। (বুখারী)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ جَابِرٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – دَخَلَ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ ، وَمَعَهُ صَاحِبٌ لَهُ ، فَسَلَّمَ فَرَدَّ الرَّجُلُ وَهُوَ يُحَوِّلُ الْمَاءَ فِي حَائِطٍ ، فَقَالَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنْ كَانَ عِنْدَكَ مَاءٌ بَاتَ فِي شَنَّةٍ وَإِلَّا كَرَعْنَا ؟ ” فَقَالَ : عِنْدِي مَاءٌ بَاتَ فِي شَنٍّ ، فَانْطَلَقَ إِلَى الْعَرِيشِ فَسَكَبَ فِي قَدَحٍ مَاءً ، ثُمَّ حَلَبَ عَلَيْهِ مِنْ دَاجِنٍ ، فَشَرِبَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – ثُمَّ أَعَادَ فَشَرِبَ الرَّجُلُ الَّذِي جَاءَ مَعَهُ . ( رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ )
৪২৭০-[৮] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসারীর নিকট গেলেন। তাঁর সঙ্গে একজন সাথী ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম করলেন এবং লোকটি সালামের জবাব দিলো। এ সময় সে তার বাগানে পানি দিচ্ছিল। তখন (লোকটির উদ্দেশে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে রাত্রের মশকে রাখা বাসি পানি আছে কি? অন্যথায় আমরা (এতে) মুখ লাগিয়ে পান করব। সে বলল, আমার কাছে রাত্রে মশকে রাখা পানি আছে। অতঃপর সে তার ঝুপড়িতে গেল এবং একটি পেয়ালায় পানি ঢালল, এরপর তাতে গৃহপালিত বকরী দোহন করল। পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। সে আবার তাতে (পানীয়) নিলো এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে যে সাহাবী ছিলেন তিনি তা পান করলেন। (বুখারী)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫৬২১, তাহক্বীক মুসনাদে আহমাদ ১৪৫৫৯, তাহক্বীক সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩১৪, শু‘আবুল ঈমান ৬০৩১, ইবনু মাজাহ ৩৪৩২, আবূ দাঊদ ৩৭২৪, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৫০৫৬। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ (دَخَلَ عَلٰى رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ) জনৈক আনসারের বাড়ীতে প্রবেশ করলেন। তিনি হলেন আবুল হায়সাম ইবনু আত্তিহান আনসারী।
অপর এক বর্ণনায় আছে, أَنَّ رَسُولَ اللهِ أصَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَتٰى قَوْمًا مِنَ الْأَنْصَارِ يَعُودُ مَرِيضًا রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারী কওমের নিকট এসেছিলেন যাতে তাদের অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখাশুনা করতে পারেন। (মুসনাদে আহমাদ হাঃ ১৪৭০৮)
(إِنَّ كَانَ عِنْدَكَ مَاءٌ بَاتَ فِىْ شَنَّةٍ) তোমার কাছে রাত্রে মশকে রাখা বাসি পানি আছে কি? বাসি পানি চাওয়ার হিকমাহ্ হলো সে পানি অধিক ঠাণ্ডা এবং পরিষ্কার হয়। আর পানির সাথে দুধ মিশানোর উদ্দেশ্য হলো তা গরমের দিনে ছিল যেমনটি ঘটেছিল আবূ বকর (রাঃ)-এর সাথে রাখালের।
(إِنَّ كَانَ عِنْدَكَ مَاءٌ بَاتَ فِىْ شَنَّةٍ) তোমার কাছে রাত্রে মশকে রাখা বাসি পানি আছে কি? বাসি পানি চাওয়ার হিকমাহ্ হলো সে পানি অধিক ঠাণ্ডা এবং পরিষ্কার হয়। আর পানির সাথে দুধ মিশানোর উদ্দেশ্য হলো তা গরমের দিনে ছিল যেমনটি ঘটেছিল আবূ বকর (রাঃ)-এর সাথে রাখালের।
আমি ভাষ্যকার বলি : ঘটনা দু’টি আবূ বকর (রাঃ)-এর দুধ মিশানো প্রচণ্ড গরমের কারণে। আর আনসারীর খাদ্য হলো তিনি চাচ্ছিলেন শুধুমাত্র পানি পান করাবেন না এবং দুধও আপ্যায়ন করাবেন সাথে অন্যান্য।
(وَإِلَّا كَرَعْنَا؟) অন্যথায় মুখ লাগিয়ে যা পান করব, যেমন চতুষ্পদ জন্তু নদীতে বা বিলে সরাসরি মুখ লাগিয়ে পান করে। (ফাতহুল বারী ১ম খন্ড, হাঃ ৫৬১৩)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَ : ” الَّذِي يَشْرَبُ فِي آنِيَةِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِي بَطْنِهِ نَارَ جَهَنَّمَ ” . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ : إِنَّ الَّذِي يَأْكُلُ وَيَشْرَبُ فِي آنِيَةِ الْفِضَّةِ وَالذَّهَبِ
৪২৭১-[৯] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রৌপ্য পাত্রে পান করে, বস্তুত সে যেন তার পেটের মধ্যে জাহান্নামের আগুনের ঢোক গিলে নেয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَ : ” الَّذِي يَشْرَبُ فِي آنِيَةِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِي بَطْنِهِ نَارَ جَهَنَّمَ ” . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ : إِنَّ الَّذِي يَأْكُلُ وَيَشْرَبُ فِي آنِيَةِ الْفِضَّةِ وَالذَّهَبِ
৪২৭১-[৯] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রৌপ্য পাত্রে পান করে, বস্তুত সে যেন তার পেটের মধ্যে জাহান্নামের আগুনের ঢোক গিলে নেয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
আর মুসলিম-এর রিওয়ায়াতে আছে, যে ব্যক্তি রৌপ্য ও স্বর্ণের পাত্রে পানাহার করে…..।
[1] সহীহ : বুখারী ৫৬৩৪, মুসলিম (২০৬৫)-১, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩৪২, ইবনু মাজাহ ৩৪১৩, ইরওয়া ৩৩, সহীহুল জামি‘ ৯৬২৮, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১১০, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৪২০, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাক্বী ১৩৬, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ১৯৯২৬, মুসনাদুশ্ শাফি‘ঈ ২৩, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৬৯৯৮, দারিমী ২১২৯, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৯৩৬৪। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ (الَّذِىْ يَشْرَبُ فِىْ آنِيَةِ الْفِضَّةِ) যে ব্যক্তি রৌপ্য পাত্রে পান করে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, مَنْ شَرِبَ فِي إِنَاءٍ مِنْ ذَهَبٍ، أَوْ فِضَّةٍ যে পান করে স্বর্ণ রৌপ্যে পাত্রে। (সহীহ মুসলিম হাঃ ২-[২০৬৫])
(إِنَّمَا يُجَرْجِرُ) এটা এমন একটি আওয়াজ যা উট পুনারাবৃত্তি করে যাবাহের সময়।
অনুরূপ আওয়াজ ঘোড়ার চোয়ালে লাগাম লাগানোর সময় যা করে। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৬৩৪)
আর পানীয়কে আগুন নামকরণের কারণ হলো কেননা তা সে দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়। যেমন আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامٰى ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِىْ بُطُونِهِمْ نَارًا
‘‘যারা ইয়াতীমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে…।’’ (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪ : ১০)।
কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদীসের মর্মার্থের বিষয়ে মতানৈক্য হলো কারও মতে এটা কাফিরদের জন্য সংবাদ। চাই তারা অনারবী রাষ্ট্রে হোক বা অন্য কোন রাষ্ট্রে হোক যারা অভ্যাসগতভাবে এমনটি করে থাকে। যেমন অন্য হাদীসে এসেছে, هِيَ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَلَكُمْ فِي الْآخِرَةِ এটা কাফিরদের জন্য দুনিয়াতে আর তোমাদের জন্য আখিরাতে অনুরূপ রেশমী কাপড়ের ব্যাপারে। এটা কাফিররা দুনিয়াতে পরিধান করবে আখিরাতে তাদের জন্য হবে না।
আবার কারও মতে : এ নিষেধাজ্ঞা মুসলিমদের জন্য আর এই নিষেধাজ্ঞা শাস্তিকে ওয়াজিব করে, আল্লাহ তা ক্ষমাও করতে পারেন। এটা কাযীর ভাষ্য। সঠিক হলো এই নিষেধাজ্ঞা সকলের জন্য চাই মুসলিম হোক আর কাফির হোক। আর বাস্তব হলো শারী‘আতের শাখা-প্রশাখার বিষয়ে কাফিরদের জন্যও প্রযোজ্য।
আর সকল মুসলিম ঐকমত্য পোষণ করেছেন স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্রে খাওয়া ও পান করা হারাম। চাই পুরুষ হোক আর নারী হোক। এ ব্যাপারে কেউ মতানৈক্য করেনি, তবে ‘ইরাকীরা বলেনঃ শাফি‘ঈদের পুরাতন বক্তব্য হলো তা অপছন্দ তথা ঘৃণিত, হারাম না। আর দাঊদ জাহিরী হতে বর্ণনা করেন, পানীয় হারাম। খাওয়া বৈধ আর সকল কার্যক্রম বৈধ। তবে এ দু’ বর্ণিত বক্তব্য বাতিল তথা অগ্রহণযোগ্য। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৬৫)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ حُذَيْفَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يَقُولُ : ” لَا تَلْبَسُوا الْحَرِيرَ وَلَا الدِّيبَاجَ ، وَلَا تَشْرَبُوا فِي آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ ، وَلَا تَأْكُلُوا فِي صِحَافِهَا ، فَإِنَّهَا لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَهِيَ لَكُمْ فِي الْآخِرَةِ ” . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৭২-[১০] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমরা মোটা কিংবা মিহি রেশমী বস্ত্র পরিধান করো না এবং সোনা ও রূপার পেয়ালায় পান করো না। আর তামার পাত্রে খেয়ো না। কেননা এগুলো হলো তাদের (কাফিরদের) জন্য দুনিয়াতে আর তোমাদের (মু’মিনদের) জন্য এগুলো হলো আখিরাতে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ حُذَيْفَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يَقُولُ : ” لَا تَلْبَسُوا الْحَرِيرَ وَلَا الدِّيبَاجَ ، وَلَا تَشْرَبُوا فِي آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ ، وَلَا تَأْكُلُوا فِي صِحَافِهَا ، فَإِنَّهَا لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَهِيَ لَكُمْ فِي الْآخِرَةِ ” . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৭২-[১০] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমরা মোটা কিংবা মিহি রেশমী বস্ত্র পরিধান করো না এবং সোনা ও রূপার পেয়ালায় পান করো না। আর তামার পাত্রে খেয়ো না। কেননা এগুলো হলো তাদের (কাফিরদের) জন্য দুনিয়াতে আর তোমাদের (মু’মিনদের) জন্য এগুলো হলো আখিরাতে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫৪২৬, মুসলিম (২০৬৭)-৫, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৬৬৩১, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০২, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১১১, হিলইয়াতুল আওলিয়া ৫/৫৮, আল মু‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার ১৩৭, ইরওয়া ৩২। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ (دِيبَاجٌ) ‘দীবাজ’ হলো রেশমীরই প্রকার। রেশমী হতে পৃথক করার কারণ হলো কাপড়ের কোন একপাশে চার আঙ্গুল পরিমাণ তথা সামান্য পরিমাণ রেশমী থাকলে তা দীবাজ হিসেবে পরিচিত।
আর এটা কখনো কখনো যুদ্ধের ময়দানে ব্যবহার করা বৈধ চুলকানী ও উকুন হতে বেঁচে থাকার জন্য।
ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদীসটি দলীল হিসেবে প্রমাণিত তাদের বিরুদ্ধে যারা বলে কাফিররা শারী‘আতের শাখা-প্রশাখার ব্যাপারে সম্বোধিত না। কেননা হাদীসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়নি তাদের জন্য বৈধ। বরং তারা অভ্যাসগত ব্যবহার করে থাকে সেটি বর্ণিত হয়েছে যদিও তাদের জন্য হারাম যেমনটি মুসলিমদের জন্য হারাম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أَنَسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : حُلِبَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – شَاةٌ دَاجِنٌ ، وَشِيبَ لَبَنُهَا بِمَاءٍ مِنَ الْبِئْرِ الَّتِي فِي دَارِ أَنَسٍ ، فَأُعْطِي رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – الْقَدَحَ ، فَشَرِبَ وَعَلَى يَسَارِهِ أَبُو بَكْرٍ ، وَعَنْ يَمِينِهِ أَعْرَابِيٌّ ، فَقَالَ عُمَرُ : أَعْطِ أَبَا بَكْرٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ ! ; فَأَعْطَى الْأَعْرَابِيَّ الَّذِي عَنْ يَمِينِهِ ، ثُمَّ قَالَ : ” الْأَيْمَنُ فَالْأَيْمَنُ ” ، وَفِي رِوَايَةٍ : ” الْأَيْمَنُونَ الْأَيْمَنُونَ ، أَلَا فَيَمِّنُوا ” مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৭৩-[১১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য একটি গৃহপালিত বকরীর দুধ দোহন করা হলো এবং তাতে আনাস (রাঃ)-এর কূপের পানি মিশানো হলো। অতঃপর তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে পেশ করা হল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা পান করলেন। এ সময় তাঁর বাম পার্শ্বে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ) এবং ডানে ছিল এক বেদুঈন। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! (অবশিষ্ট) আবূ বকর (রাঃ)-কে প্রদান করুন। কিন্তু তিনি তাঁর ডান পার্শ্বের সে বেদুঈনকেই দিলেন। অতঃপর বললেনঃ ডানদিকের ব্যক্তিরই হক প্রথমে। অপর এক রিওয়ায়াতে বর্ণিত। ডানে যারা রয়েছে, তারপর ডানে যারা রয়েছে তারা হকদার। সাবধান! ডান পার্শ্বওয়ালাদের অগ্রাধিকার দাও। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ أَنَسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : حُلِبَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – شَاةٌ دَاجِنٌ ، وَشِيبَ لَبَنُهَا بِمَاءٍ مِنَ الْبِئْرِ الَّتِي فِي دَارِ أَنَسٍ ، فَأُعْطِي رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – الْقَدَحَ ، فَشَرِبَ وَعَلَى يَسَارِهِ أَبُو بَكْرٍ ، وَعَنْ يَمِينِهِ أَعْرَابِيٌّ ، فَقَالَ عُمَرُ : أَعْطِ أَبَا بَكْرٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ ! ; فَأَعْطَى الْأَعْرَابِيَّ الَّذِي عَنْ يَمِينِهِ ، ثُمَّ قَالَ : ” الْأَيْمَنُ فَالْأَيْمَنُ ” ، وَفِي رِوَايَةٍ : ” الْأَيْمَنُونَ الْأَيْمَنُونَ ، أَلَا فَيَمِّنُوا ” مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
৪২৭৩-[১১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য একটি গৃহপালিত বকরীর দুধ দোহন করা হলো এবং তাতে আনাস (রাঃ)-এর কূপের পানি মিশানো হলো। অতঃপর তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে পেশ করা হল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা পান করলেন। এ সময় তাঁর বাম পার্শ্বে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ) এবং ডানে ছিল এক বেদুঈন। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! (অবশিষ্ট) আবূ বকর (রাঃ)-কে প্রদান করুন। কিন্তু তিনি তাঁর ডান পার্শ্বের সে বেদুঈনকেই দিলেন। অতঃপর বললেনঃ ডানদিকের ব্যক্তিরই হক প্রথমে। অপর এক রিওয়ায়াতে বর্ণিত। ডানে যারা রয়েছে, তারপর ডানে যারা রয়েছে তারা হকদার। সাবধান! ডান পার্শ্বওয়ালাদের অগ্রাধিকার দাও। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ২৩৫২, মুসলিম (২০২৯)-১২৫, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৬৮৬১, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৪১৯৫, মুসনাদে আহমাদ ১২০৭৭, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৩৫৫২, দারিমী ২১১৬, তিরমিযী ১৮৯৩, ইবনু মাজাহ ৩৪২৫, আবূ দাঊদ ৩৭২৬, সহীহুল জামি‘ ২৮০৭, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১৭৭১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৪২৮, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ১৯৫৮২, মুসনাদে আহমাদ ১২০৭৭, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৫০৬৩। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ অন্য বর্ণনায় এসেছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট দুধের পেয়ালা নিয়ে আসা হলো তিনি তা হতে পান করলেন এবং তাঁর ডানপার্শ্বে ছিল একটি বালক আর বামপার্শ্বে ছিল প্রবীণ ও বয়স্ক লোকজন। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে বৎস! তুমি কি আমাকে অনুমতি দিবে যে, আমি আমার অবশিষ্টাংশটুকু এ সমস্ত প্রবীণদেরকে প্রদান করব? সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! না। আল্লাহর কসম আমার অংশ অন্য কাউকে অগ্রাধিকার দিব না।
এ সমস্ত হাদীসে প্রমাণিত হয়, এটা সুস্পষ্ট সুন্নাহ্ সে ডানই প্রাধান্য পাবে সকল প্রকার সম্মানের ক্ষেত্রে। পানীয়ের ক্ষেত্রে অনুরূপ সকল ক্ষেত্রে ডান দিকই প্রাধান্য পাবে। যদিও ছোট অথবা অপেক্ষাকৃত কম মর্যাদাসম্পন্ন হয়। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রাম্যলোক ও ছোট বালককে আবূ বকর (রাঃ)-এর ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন। আর অন্যান্য সময়ে সমতার ক্ষেত্রে সম্মানিত ও বয়স্ক প্রাধান্য পাবে, এজন্য সলাতে ইমামতিতে সমতায় বয়স্কলোক প্রাধান্য পাবে। (শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ৪২৭৩)
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : أُتِيَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بِقَدَحٍ ، فَشَرِبَ مِنْهُ وَعَنْ يَمِينِهِ غُلَامٌ أَصْغَرُ الْقَوْمِ ، وَالْأَشْيَاخُ عَنْ يَسَارِهِ . فَقَالَ : ” يَا غُلَامُ ! أَتَأْذَنُ أَنْ أُعْطِيَهُ الْأَشْيَاخَ ؟ ” ، فَقَالَ : مَا كُنْتُ لِأُوثِرَ بِفَضْلٍ مِنْكَ أَحَدًا يَا رَسُولَ اللَّهِ ! فَأَعْطَاهُ إِيَّاهُ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ وَحَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ سَنَذْكُرُهُ فِي ” بَابِ الْمُعْجِزَاتِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى
৪২৭৪-[১২] সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে (দুধের) একটি পেয়ালা পেশ করা হলো, তিনি তা হতে কিছু পান করলেন। তাঁর ডানে ছিল উপস্থিত জনতার মধ্যে সর্বাপেক্ষা ছোট একটি বালক। আর প্রবীণ ও বয়স্ক লোকজন ছিলেন তাঁর বামে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বালকটিকে বললেনঃ হে বৎস! তুমি কি আমাকে এ অনুমতি দেবে যে, আমি আমার অবশিষ্টটুকু এ সমস্ত প্রবীণদেরকে (অগ্রে) প্রদান করি? সে বলল : হে আল্লাহর রসূল! আপনার অবশিষ্টের ব্যাপারে আমি কাউকেও অগ্রাধিকার দেব না। (বর্ণনাকারী বলেনঃ) তখন তিনি পেয়ালাটি বালকটিকে দিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
===========================
بَابُ الْأَشْرِبَةِ وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : أُتِيَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بِقَدَحٍ ، فَشَرِبَ مِنْهُ وَعَنْ يَمِينِهِ غُلَامٌ أَصْغَرُ الْقَوْمِ ، وَالْأَشْيَاخُ عَنْ يَسَارِهِ . فَقَالَ : ” يَا غُلَامُ ! أَتَأْذَنُ أَنْ أُعْطِيَهُ الْأَشْيَاخَ ؟ ” ، فَقَالَ : مَا كُنْتُ لِأُوثِرَ بِفَضْلٍ مِنْكَ أَحَدًا يَا رَسُولَ اللَّهِ ! فَأَعْطَاهُ إِيَّاهُ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ وَحَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ سَنَذْكُرُهُ فِي ” بَابِ الْمُعْجِزَاتِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى
৪২৭৪-[১২] সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে (দুধের) একটি পেয়ালা পেশ করা হলো, তিনি তা হতে কিছু পান করলেন। তাঁর ডানে ছিল উপস্থিত জনতার মধ্যে সর্বাপেক্ষা ছোট একটি বালক। আর প্রবীণ ও বয়স্ক লোকজন ছিলেন তাঁর বামে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বালকটিকে বললেনঃ হে বৎস! তুমি কি আমাকে এ অনুমতি দেবে যে, আমি আমার অবশিষ্টটুকু এ সমস্ত প্রবীণদেরকে (অগ্রে) প্রদান করি? সে বলল : হে আল্লাহর রসূল! আপনার অবশিষ্টের ব্যাপারে আমি কাউকেও অগ্রাধিকার দেব না। (বর্ণনাকারী বলেনঃ) তখন তিনি পেয়ালাটি বালকটিকে দিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
এ প্রসঙ্গে আবূ কতাদাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস ইন্শা-আল্লাহ আমি ‘‘মু‘জিযাত’’ (অলৌকিক ঘটনাবলী)-এর অধ্যায়ে উল্লেখ করব।
[1] সহীহ : বুখারী ২৩৫১, মুসলিম (২০৩০)-১২৭, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৪২৯, মুসনাদে আহমাদ ২২৯১৮, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩৩৫, শু‘আবুল ঈমান ৬০৩৫, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৬৮৬৮, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৫৮৭৫, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৫০৬৮। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
===========================
عَنِ ابْنِ عُمَرَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : كُنَّا نَأْكُلُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – وَنَحْنُ نَمْشِي وَنَشْرَبُ وَنَحْنُ قِيَامٌ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَابْنُ مَاجَهْ ، وَالدَّارِمِيُّ . وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ : هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
৪২৭৫-[১৩] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জামানায় চলা অবস্থায় খেতাম এবং দাঁড়ানো অবস্থায় পান করতাম। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ ও গরীব।
===========================
عَنِ ابْنِ عُمَرَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : كُنَّا نَأْكُلُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – وَنَحْنُ نَمْشِي وَنَشْرَبُ وَنَحْنُ قِيَامٌ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَابْنُ مَاجَهْ ، وَالدَّارِمِيُّ . وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ : هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
৪২৭৫-[১৩] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জামানায় চলা অবস্থায় খেতাম এবং দাঁড়ানো অবস্থায় পান করতাম। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ ও গরীব।
[1] সহীহ : তিরমিযী ১৮৮১, ইবনু মাজাহ ৩৩০১, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩২৫, দারিমী ২১২৫, মুসনাদে আহমাদ ৪৭৬৫, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৪১১৫, শু‘আবুল ঈমান ৫৯৮৮। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ হাদীস প্রমাণ করে দাঁড়িয়ে খাওয়া বৈধ কোন প্রকার অপছন্দ ছাড়াই তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘আমল এবং তাকরীর দ্বারা প্রমাণিত। তবে ‘উলামাদের নিকট ভালো হলো চলন্ত, হাঁটা ও দাঁড়ানো অবস্থায় না খাওয়া যা ইবনু মালিক স্পষ্ট করেছেন। ইতিপূর্বে দাঁড়ানো অবস্থায় পান করার আলোচনা গেছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
===========================
وَعَنْ عَمْرُو بْنِ شُعَيْبٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ ، قَالَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يَشْرَبُ قَائِمًا وَقَاعِدًا . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
===========================
وَعَنْ عَمْرُو بْنِ شُعَيْبٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ ، قَالَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يَشْرَبُ قَائِمًا وَقَاعِدًا . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
৪২৭৬-[১৪] ‘আমর ইবনু শু‘আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দাঁড়ানো এবং বসা উভয় অবস্থায় পান করতে দেখেছি। (তিরমিযী)[1]
[1] হাসান : তিরমিযী ১৮৮৩, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ৪৪৯০, মুসনাদে আহমাদ ৬৯২৮ : তাহক্বীক- শু‘আয়ব আরনাউত্বব, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ১২৮৪, নাসায়ী ১৩৬১, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ১২১৩। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
#ব্যাখ্যাঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন জীবনে একবার অথবা দু’বার বৈধতার জন্য অথবা স্থানের অসুবিধার জন্য আর বসে সর্বাবস্থায় পান করেছেন এবং যা উত্তম অভ্যাস। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
===========================
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَنْ يُتَنَفَّسَ فِي الْإِنَاءِ ، أَوْ يُنْفَخَ فِيهِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ ، وَابْنُ مَاجَهْ
===========================
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَنْ يُتَنَفَّسَ فِي الْإِنَاءِ ، أَوْ يُنْفَخَ فِيهِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ ، وَابْنُ مَاجَهْ
৪২৭৭-[১৫] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কিছু পান করার সময়) পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে এবং তার মধ্যে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]
[1] সহীহ : ইবনু মাজাহ ৩৭২৮, তিরমিযী ১৮৮৮, নাসায়ী ৪৮, সহীহুল জামি‘ ১২৭৭৬, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১১৭, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ১৯৫৮৪, তাহক্বীক মুসনাদে আহমাদ ১৯০৭, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ২৪০২, শু‘আবুল ঈমান ৬০০৩, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১১৮০৯। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার সময় পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করেছেন। এই ভয়ে মুখের লালা বা থুথু পানীয়ের মধ্যে পড়তে পারে।
সবচেয়ে উত্তম হলো নিঃশ্বাস নিবে, না ফুঁ দিবে, না অপেক্ষা করবে ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত আর যদি কোন ময়লা দেখে তাহলে তা আঙ্গুল, কাঠি বা অন্য কোন জিনিস দিয়ে উঠাবে বা সরাবে। আর গরম অবস্থায় খাবে না, কেননা বারাকাত চলে যায় আর গরম হলো জাহান্নামীদের খাদ্য। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭২৪)
===========================
وَعَنْهُ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لَا تَشْرَبُوا وَاحِدًا كَشُرْبِ الْبَعِيرِ ، وَلَكِنِ اشْرَبُوا مَثْنَى وَثَلَاثًا ، وَسَمُّوا إِذَا أَنْتُمْ شَرِبْتُمْ ، وَاحْمَدُوا إِذَا أَنْتُمْ رَفَعْتُمْ ” . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
৪২৭৮-[১৬] উক্ত রাবী [ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা উটের ন্যায় এক শ্বাসে পান করবে না; বরং দু’ কিংবা তিন শ্বাসে পান করবে। আর যখন পান করবে (শুরুতে) বিসমিল্লা-হ পড়বে এবং যখন (পানান্তে) পেয়ালা মুখ হতে আলাদা করবে, তখন আলহামদুলিল্লা-হ বলবে। (তিরমিযী)[1]
[1] য‘ঈফ : তিরমিযী ১৮৮৫, য‘ঈফুল জামি‘ ৬২৩৩, রিয়াযুস্ সলিহীন ৭৬২। হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে আছে ‘‘ইয়াযীদ ইবনু সিনান আত্ তামীমী’’। ইনি য‘ঈফুল হাদীস। এছাড়াও ‘আত্বা ইবনু আবূ রবাহ-এর ছেলে য‘ঈফ। ইবনু হাজার তাকে য‘ঈফ বলেছেন। বিস্তারিত দেখুন- ‘‘আল জারহু ওয়াত্ তা‘দীল’’ গ্রন্থ, জাওয়ামি‘উল কালিম সফ্টওয়্যার। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
===========================
وَعَنْهُ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لَا تَشْرَبُوا وَاحِدًا كَشُرْبِ الْبَعِيرِ ، وَلَكِنِ اشْرَبُوا مَثْنَى وَثَلَاثًا ، وَسَمُّوا إِذَا أَنْتُمْ شَرِبْتُمْ ، وَاحْمَدُوا إِذَا أَنْتُمْ رَفَعْتُمْ ” . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
৪২৭৮-[১৬] উক্ত রাবী [ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা উটের ন্যায় এক শ্বাসে পান করবে না; বরং দু’ কিংবা তিন শ্বাসে পান করবে। আর যখন পান করবে (শুরুতে) বিসমিল্লা-হ পড়বে এবং যখন (পানান্তে) পেয়ালা মুখ হতে আলাদা করবে, তখন আলহামদুলিল্লা-হ বলবে। (তিরমিযী)[1]
[1] য‘ঈফ : তিরমিযী ১৮৮৫, য‘ঈফুল জামি‘ ৬২৩৩, রিয়াযুস্ সলিহীন ৭৬২। হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে আছে ‘‘ইয়াযীদ ইবনু সিনান আত্ তামীমী’’। ইনি য‘ঈফুল হাদীস। এছাড়াও ‘আত্বা ইবনু আবূ রবাহ-এর ছেলে য‘ঈফ। ইবনু হাজার তাকে য‘ঈফ বলেছেন। বিস্তারিত দেখুন- ‘‘আল জারহু ওয়াত্ তা‘দীল’’ গ্রন্থ, জাওয়ামি‘উল কালিম সফ্টওয়্যার। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ (وَسَمُّوا إِذَا أَنْتُمْ شَرِبْتُمْ) যখন তোমরা পান করার ইচ্ছা পোষণ কর, বল- ‘‘বিসমিল্লা-হি’’ আর যখনই পাত্রকে মুখ থেকে সরাবে অথবা পানের শেষে আল্লাহর প্রশংসা করবে। এমনটি মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন।
আমি (ভাষ্যকার) বলি : হাফিয ইবনু হাজার (রহিমাহুল্লাহ) তিনি ফাতহুল বারীতে হাদীস নিয়ে এনেছেন যা ত্ববারানীতে এসেছে সহীহ সনদে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَشْرَبُ فِي ثَلَاثَةِ أَنْفَاسٍ إِذَا أَدْنَى الْإِنَاءَ إِلٰى فِيهِ يسمي الله فإذا أخره حمد الله بفعل ذلك ثلاثا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন নিঃশ্বাসে পান করতেন। আর যখনই পাত্রকে মুখের নিকট নিয়ে আসে তখন বিসমিল্লা-হ বলতেন আর যখন বিলম্বিত করতেন আলহামদুলিল্লা-হ বলতেন এমনটি তিনবার করেছেন।
মূলত হাদীসটির উদ্দেশ্য পানের শুরুতে বিসমিল্লা-হ এবং শেষে আলহামদুলিল্লা-হ বলা।
(তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৮৮৫)
===========================
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – أَنَّ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – نَهَى عَنِ النَّفْخِ فِي الشَّرَابِ . فَقَالَ رَجُلٌ : الْقَذَاةَ أَرَاهَا فِي الْإِنَاءِ . قَالَ : ” أَهْرِقْهَا ” . قَالَ : فَإِنِّي لَا أُرْوَى مِنْ نَفَسٍ وَاحِدٍ . قَالَ : ” فَأَبِنِ الْقَدَحَ عَنْ فِيكَ ، ثُمَّ تَنَفَّسْ ” . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَالدَّارِمِيُّ
৪২৭৯-[১৭] আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানীয় বস্তুতে (পান করার সময়) ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, যদি আমি পানির মধ্যে খড়কুটা দেখতে পাই? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা ফেলে দাও। সে আবার বলল : এক নিঃশ্বাসে পান করলে আমার তৃপ্তি হয় না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমতাবস্থায় পেয়ালাটি মুখ হতে পৃথক করে নিঃশ্বাস ত্যাগ করো। (তিরমিযী ও দারিমী)[1]
===========================
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – أَنَّ النَّبِيَّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – نَهَى عَنِ النَّفْخِ فِي الشَّرَابِ . فَقَالَ رَجُلٌ : الْقَذَاةَ أَرَاهَا فِي الْإِنَاءِ . قَالَ : ” أَهْرِقْهَا ” . قَالَ : فَإِنِّي لَا أُرْوَى مِنْ نَفَسٍ وَاحِدٍ . قَالَ : ” فَأَبِنِ الْقَدَحَ عَنْ فِيكَ ، ثُمَّ تَنَفَّسْ ” . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَالدَّارِمِيُّ
৪২৭৯-[১৭] আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানীয় বস্তুতে (পান করার সময়) ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, যদি আমি পানির মধ্যে খড়কুটা দেখতে পাই? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা ফেলে দাও। সে আবার বলল : এক নিঃশ্বাসে পান করলে আমার তৃপ্তি হয় না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমতাবস্থায় পেয়ালাটি মুখ হতে পৃথক করে নিঃশ্বাস ত্যাগ করো। (তিরমিযী ও দারিমী)[1]
[1] হাসান : তিরমিযী ১৮৮৭, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৩৮৫, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১১৫, দারিমী ২১২১, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩২৭, মুসনাদে আহমাদ ১১২১৯, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ (৩৬)-৩। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
#ব্যাখ্যাঃ জাযারী নিহায়াতে বলেনঃ নিষেধাজ্ঞা এ কারণে ফুঁ এর মাধ্যমে মুখের লালা বা থুথু পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে সে এমন কিছু পান করবে যাতে করে সে কষ্ট পাবে।
হাদীসে দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হয় যে, এক নিঃশ্বাসে পান করা বৈধ। কেননা ব্যক্তিকে নিষেধ করা হয়নি বরং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি তুমি তৃপ্তি না পাও তাহলে পেয়ালাটিকে মুখ হতে পৃথক করে নিঃশ্বাস ত্যাগ কর।
আর তা মাকরূহ হওয়া সত্ত্বেও বৈধ সাব্যস্ত করে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৮৮৭)
===========================
وَعَنْهُ ، قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – عَنِ الشُّرْبِ مِنْ ثُلْمَةِ الْقَدَحِ ، وَأَنْ يُنْفَخَ فِي الشَّرَابِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
৪২৮০-[১৮] উক্ত রাবী [আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার ছিদ্র দিয়ে পান করতে এবং পানীয় বস্তুতে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ)[1]
===========================
وَعَنْهُ ، قَالَ : نَهَى رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – عَنِ الشُّرْبِ مِنْ ثُلْمَةِ الْقَدَحِ ، وَأَنْ يُنْفَخَ فِي الشَّرَابِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
৪২৮০-[১৮] উক্ত রাবী [আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার ছিদ্র দিয়ে পান করতে এবং পানীয় বস্তুতে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ)[1]
[1] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩৭২২, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৩৮৭, তাহক্বীক মুসনাদে আহমাদ ১১৭৭৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩১৫ শু‘আবুল ঈমান ৬০১৮, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১১৬, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৫৫৯০, সহীহুল জামি‘ ৬৮৮৮। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ পেয়ালার ছিদ্র দিয়ে পান করার নিষেধের কারণ হলো পান করার সময় পানি পড়বে এবং পানির ফোটা মুখে এবং শরীরে পড়বে। কেননা ভাঙ্গা বা ছিদ্র পেয়ালায় ঠোঁট শক্তভাবে আঁকড়িয়ে ধরে রাখতে পারে না।
কারও মতে, ছিদ্রের স্থানটিতে শয়তানের বসার স্থান।
হতে পারে ছিদ্রের স্থানটি অপরিষ্কার থাকে ভালো করে পরিষ্কার করলেও, ফলে পান করাটা অপরিষ্কার অবস্থায় হয়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭১৮)
===========================
وَعَنْ كَبْشَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – فَشَرِبَ مِنْ فِي قِرْبَةٍ مُعَلَّقَةٍ قَائِمًا ، فَقُمْتُ إِلَى فِيهَا فَقَطَعْتُهُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَابْنُ مَاجَهْ . وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ : هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ
৪২৮১-[১৯] কাবশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার গৃহে এলেন এবং একটি লটকানো মশক হতে দাঁড়ানো অবস্থায় পান করলেন। পরে আমি মশকের নিকট গিয়ে মশকের সে মুখখানা কেটে রেখে দিলাম। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ) [1]আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ হাদীসটি হাসান, গরীব ও সহীহ।
===========================
وَعَنْ كَبْشَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – فَشَرِبَ مِنْ فِي قِرْبَةٍ مُعَلَّقَةٍ قَائِمًا ، فَقُمْتُ إِلَى فِيهَا فَقَطَعْتُهُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَابْنُ مَاجَهْ . وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ : هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ
৪২৮১-[১৯] কাবশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার গৃহে এলেন এবং একটি লটকানো মশক হতে দাঁড়ানো অবস্থায় পান করলেন। পরে আমি মশকের নিকট গিয়ে মশকের সে মুখখানা কেটে রেখে দিলাম। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ) [1]আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ হাদীসটি হাসান, গরীব ও সহীহ।
[1] সহীহ : তিরমিযী ১৮৯২, সিলসিলাতুয্ য‘ঈফাহ্ ১০৫৭-এর আলোচনা দ্রঃ, শু‘আবুল ঈমান ৬০২৬, ইবনু মাজাহ ৩৪২৩, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার ৪৬০৫, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৪১৩০, মুসনাদে আহমাদ ২৭৪৩০, শু‘আবুল ঈমান ৬০২৭, ৬০২৫; আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ২০৮১৫। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ হাদীসের সমর্থনে যা তিরমিযী বর্ণনা করেছেন উম্মু সুলায়ম (রাঃ) হতে অনুরূপ অর্থে তবে তাতে অতিরিক্ত এসেছে, وَقَالَتْ: لَا يَشْرَبُ مِنْهَا أَحَدٌ بَعْدَ شُرْبِ رَسُولِ اللهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার পর আর কেউ যেন পান না করে।
আর ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) তিরমিযী হতে বর্ণনা করেন, মশকের মুখ কাটার দু’টি উদ্দেশ্য। সে স্থানটিকে সংরক্ষণ করা যেখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখ লেগেছে যাতে করে প্রত্যেকে তা স্পর্শ করতে পারে।
আর দ্বিতীয় মতে, তা হতে বারাকাত হাসিল করতে পারে এবং আরোগ্য লাভ করতে পারে। আর হাদীস প্রমাণ করে কলসের মুখ দিয়ে পান করার নিষেধাজ্ঞা হারাম নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
===========================
وَعَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – قَالَتْ : كَانَ أَحَبُّ الشَّرَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – الْحُلْوَ الْبَارِدَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَقَالَ : وَالصَّحِيحُ مَا رُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنِ النَّبِيِّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – مُرْسَلًا
৪২৮২-[২০] যুহরী (রহিমাহুল্লাহ) ‘উরওয়াহ্ হতে বর্ণনা করেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেনঃ ঠাণ্ডা মিষ্টি পানি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সর্বাধিক প্রিয় পানীয় ছিল। (তিরমিযী)[1]আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সহীহ ও নির্ভরযোগ্য কথা হলো, এ হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যুহরী কর্তৃক মুরসাল হিসেবেই বর্ণিত হয়েছে (অর্থাৎ- বর্ণনায় অন্য কোন সাহাবীর নাম উল্লেখ নেই)।
===========================
وَعَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – قَالَتْ : كَانَ أَحَبُّ الشَّرَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – الْحُلْوَ الْبَارِدَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَقَالَ : وَالصَّحِيحُ مَا رُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنِ النَّبِيِّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – مُرْسَلًا
৪২৮২-[২০] যুহরী (রহিমাহুল্লাহ) ‘উরওয়াহ্ হতে বর্ণনা করেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেনঃ ঠাণ্ডা মিষ্টি পানি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সর্বাধিক প্রিয় পানীয় ছিল। (তিরমিযী)[1]আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সহীহ ও নির্ভরযোগ্য কথা হলো, এ হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যুহরী কর্তৃক মুরসাল হিসেবেই বর্ণিত হয়েছে (অর্থাৎ- বর্ণনায় অন্য কোন সাহাবীর নাম উল্লেখ নেই)।
[1] সহীহ : তিরমিযী ১৮৯৫, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৩০০৬, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ৪০/২, মুসনাদে আহমাদ ২৪১২৯, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৬৮৪৪, সহীহুল জামি‘ ৪৬২৭, সিলসিলাতুয্ য‘ঈফাহ্ ২৮১৬-এর আলোচনা দ্রঃম মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার ৪৫৯৮, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ১৯৫৮৩, মুসান্নাদ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৪১৯৯, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৪৫১৬, শু‘আবুল ঈমান ৫৫৯২৮। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ (أَحَبُّ) অধিক প্রিয়। অর্থ সুস্বাদু, কেননা যমযমের পানি অধিক উত্তম। অনুরূপ তার নিকট দুধও প্রিয়। এ গুণগুলো ‘আমভাবে বর্ণনা হয়েছে; এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিশুদ্ধ পানি, দুধ, মিশানো পানি বা অন্যান্য যেমন মধু, ভিজানো খেজুর, কিসমিস। কারও মতে, ঠাণ্ডা পানি প্রিয় ছিল বা এ বস্তুগুলো বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রিয়। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ১৫শ খন্ড, হাঃ ১৮৮৫)
===========================
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ طَعَامًا فَلْيَقُلِ : اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ ، وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا مِنْهُ . وَإِذَا سُقِيَ لَبَنًا فَلْيَقُلِ : اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ ، وَزِدْنَا مِنْهُ ; فَإِنَّهُ لَيْسَ شَيْءٌ يُجْزِئُ مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ إِلَّا اللَّبَنُ ” ، رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَأَبُو دَاوُدَ
৪২৮৩-[২১] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ খাবার খায়, তখন সে যেন এ দু‘আটি পড়ে- اَللّٰهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَاَطْعِمْنَا خَيْرًا مِّنْهُ. ‘‘আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়া আত্ব‘ইমনা- খয়রম্ মিনহু’’ (হে আল্লাহ! তার মধ্যে আমাদের জন্য বারাকাত দাও এবং তা অপেক্ষা উত্তম খাদ্য দান করো)। আর যখন দুধ পান করবে তখন যেন বলে, ‘‘আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়াযিদনা- মিনহ’’ (হে আল্লাহ! এর মধ্যে আমাদের জন্য বারাকাত দাও এবং তা আরো অধিক দান করো)। কেননা দুধ ব্যতীত অন্য কোন জিনিসই খাদ্য ও পানীয় উভয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]
===========================
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ طَعَامًا فَلْيَقُلِ : اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ ، وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا مِنْهُ . وَإِذَا سُقِيَ لَبَنًا فَلْيَقُلِ : اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ ، وَزِدْنَا مِنْهُ ; فَإِنَّهُ لَيْسَ شَيْءٌ يُجْزِئُ مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ إِلَّا اللَّبَنُ ” ، رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَأَبُو دَاوُدَ
৪২৮৩-[২১] ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ খাবার খায়, তখন সে যেন এ দু‘আটি পড়ে- اَللّٰهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَاَطْعِمْنَا خَيْرًا مِّنْهُ. ‘‘আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়া আত্ব‘ইমনা- খয়রম্ মিনহু’’ (হে আল্লাহ! তার মধ্যে আমাদের জন্য বারাকাত দাও এবং তা অপেক্ষা উত্তম খাদ্য দান করো)। আর যখন দুধ পান করবে তখন যেন বলে, ‘‘আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়াযিদনা- মিনহ’’ (হে আল্লাহ! এর মধ্যে আমাদের জন্য বারাকাত দাও এবং তা আরো অধিক দান করো)। কেননা দুধ ব্যতীত অন্য কোন জিনিসই খাদ্য ও পানীয় উভয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]
[1] হাসান : তিরমিযী ৩৪৫৫, আবূ দাঊদ ৩৭৩০, ইবনু মাজাহ ৩৩২২, মুসনাদে আহমাদ ১৯৭৮, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ৮৬৭৬, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ১০১১৮, শু‘আবুল ঈমান ৫৯৫৭, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ৮৬৭৬, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ২৩২০, সহীহুল জামি‘ ৩৮২। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
#ব্যাখ্যাঃ হাদীসে স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে দুধের চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। এজন্য নবজাত শিশুর খাদ্য হলো দুধ আর তাতে আল্লাহর সুস্পষ্ট নিদর্শনও রয়েছে, যেমন বলেনঃ
نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِي بُطُونِه# مِنْ بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَبَنًا خَالِصًا سَائِغًا لِلشَّارِبِينَ
‘‘তোমাদের জন্য চতুস্পদ জন্তুদের মধ্যে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। আমরা তোমাদেরকে পান করাই তাদের উদরস্থিত বস্তুসমূহের মধ্যে থেকে গোবর ও রক্ত নিঃসৃত দু যা পানকারীদের জন্য উপাদেয়।’’ (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬ : ৬৬)
হাদীসের শেষাংশে উত্তম হওয়ার কারণও বর্ণনা করা হয়েছে।
(فَإِنَّهٗ لَيْسَ شَيْء يُجْزِىُ مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ إِلَّا اللَّبَنُ) কেননা দুধ ব্যতীত অন্য কোন জিনিসই খাদ্য ও পানীয় উভয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
===========================
وَعَنْ عَائِشَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يُسْتَعْذَبُ لَهُ الْمَاءُ مِنَ السُّقْيَا . قِيلَ : هِيَ عَيْنٌ بَيْنَهَا وَبَيْنَ الْمَدِينَةِ يَوْمَانِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
৪২৮৪-[২২] ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সুকইয়া হতে মিঠা পানি সংগ্রহ করা হত। কথিত আছে যে, সুকইয়া একটি ঝরণা। তার ও মাদীনার মধ্যবর্তী ব্যবধান হলো দু’দিনের পথ। (আবূ দাঊদ)[1]
===========================
وَعَنْ عَائِشَةَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يُسْتَعْذَبُ لَهُ الْمَاءُ مِنَ السُّقْيَا . قِيلَ : هِيَ عَيْنٌ بَيْنَهَا وَبَيْنَ الْمَدِينَةِ يَوْمَانِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
৪২৮৪-[২২] ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সুকইয়া হতে মিঠা পানি সংগ্রহ করা হত। কথিত আছে যে, সুকইয়া একটি ঝরণা। তার ও মাদীনার মধ্যবর্তী ব্যবধান হলো দু’দিনের পথ। (আবূ দাঊদ)[1]
[1] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩৭৩৫, সহীহুল জামি‘ ৪৯৫১, আল জামি‘উস্ সগীর ৯০৮২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৪৬১৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৩৩২, শু‘আবুল ঈমান ৬০৩৩। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
#ব্যাখ্যাঃ মিষ্ট পানি দ্বারা উদ্দেশ্য লবণাক্ত না, কেননা মাদীনার পানি হলো লবণাক্ত। সুয়ূত্বী বলেনঃ সুকইয়া একটি গ্রাম যা মক্কা ও মাদীনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
হাকিম-এর বর্ণনায় রয়েছে, كَانَ يُسْتَعْذَبُ لَهُ الْمَاءُ مِنْ بِئْرِ السُّقْيَا
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সুকইয়া-এর কূপ হতে মিঠা পানি সংগ্রহ করা হত।
আমি (ভাষ্যকার) বলি : সম্ভবত দু’টি দু’ স্থান। কোন অসঙ্গতিপূর্ণ নেই হাদীসে একটি ঝর্ণা, অপরটি কূপ। হতে পারে বিভিন্ন স্থান। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
No comments:
Post a Comment