প্রশ্ন: ১৬৭ : গরু ছাগলের ন্যায় মাছ কেন জবেহ করা হয় না ?

মাছ জাবেহ করা হয় না কেন?? কোরান ও বিজ্ঞান: 

Whatsapp- এ হুগলী জেলার মামুদ পুর নিবাসী সাবির আমি খাঁন প্রশ্ন করে বলেছেন-"গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সবই জাবেহ করতে হয় কিন্তু মাছ জাবেহ করতে হয় না কেন?? মাছও তো একটি প্রাণী!! নাকি?? তাহলে মাছ জবাই করা হয় না কেন"??


#দারুন ভাই, একেবারে দারুণ প্রশ্ন!! হ‍্যাঁ, আমি জানি যে, এ ধরণের প্রশ্ন সবার মাথাতেই ওঠে কিন্তু এ প্রশ্নের উত্তর প্রায় সবারই অজানা!! আর, আমি এও জানি যে, অমুসলিম এবং নাস্তিকগণ মুসলিমদের হেয়-প্রতিপন্ন করার জন্য এ ধরণের প্রশ্ন করে থাকে!! আর, এ ক্ষেত্রে অবশ্য তারা বিজয়ীও হন!! কারণ, মুসলিমরা এবং আমাদের আলেমগণ গালা-গালিতে এক্সপার্ট হলেও এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দিতে ব‍্যার্থ হন!! তাই নয় কি?? তাই চলুন, আমরা এ প্রশ্নের যোগ্য উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি!! যদিও আমি কোনও আলেম নই, আমি শুধুমাত্র হোসেন কুরানী এবং হানীর নাহাল!! এর বেশি কিছু নই এবং হতেও চাই না!!
যাইহোক, জাবেহ কেন করতে হয়?? অথবা আড়াই বারে জাবেহ কেন করতে হয়, এ প্রশ্নের উত্তর নিচের লিঙ্কে ক্লিক জেনে নিতে পারেন---
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=662074044177596&id=544853392566329
উত্তর:::- ভাই, প্রথমে জানতে হবে যে, ইসলাম জাবেহ করার বিধান দিল কেন!! এ বিষয়ে বিজ্ঞান বলে-"রক্ত জীবানু ও ভাইরাস বহন করার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম"। এ জন্যই পবিত্র কোরানে আল্লাহ বলেছেন এভাবে-
إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنْزِيرِ وَمَا أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ
অনুবাদ হবে এমন-"তোমাদের উপর হারাম করা হল মৃত প্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে জাবেহকৃত প্রাণী বা খাবার"(2:173)।
যাইহোক, এখন মনে করুন- যদি গরু জাবেহ করা না হত, তাহলে গরুর প্রায় 5-6 লিটার রক্ত গরুর শরীরেই থেকে যেত। যা, জবেহ করলে সহজেই গরুর শরীরের বাইরে চলে আসে। অথচ গরুর রক্তে কোটি-কোটি ব্যাকটেরিয়া, জীবানু এবং ভাইরাস থাকে। যা, জাবেহর মাধ্যমে বাইরে চলে যায়। ফলতঃ গরুর মাংস বা যে কোনও পশুর মাংস ব্যাকটেরিয়া, জীবানু এবং ভাইরাস মুক্ত হয়। তাই নয় কি??
এ ছাড়াও গরু জবাই না করে, সরাসরি হত্যা করলে মাত্র 1 মিনিট থেকে শুরু করে 3-4 ঘন্টার মধ্যে গরুর সমস্ত রক্ত গরুর শরীরেই শুকিয়ে যেত। সত্যি বলতে, চামড়া ছাড়াবার আগেই হয়ত শুকিয়ে যেত।
এই সমস্ত কারণে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি সহ সমস্ত হালাল প্রাণীকে জাবেহ করতে হয়। নয়ত ব্যাকটেরিয়া, জীবানু ও ভাইরাসে ভর্তি রক্ত সহ তাদের মাংস খেতে হত!! যা, মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়!! তাই নয় কি??
কিন্তু মাছের রক্ত এত জীবানু বহন করে না এবং মাছের রক্তও হয় যৎসামান্য। আর, মাছ মরার দু-দিন পর কাটলেও তার রক্ত বের হয়ে যায়। অর্থাৎ মাছের রক্ত অন্যান্য পশুর মত শরীরে শুকিয়ে যায় না। এক কথায়, মাছ হল- শীতল রক্তের প্রাণী!! এখানেই কি শেষ?? না, মোটেও নয়!! তাহলে বাকি আর কি আছে?? বাকি এখনও অনেক আছে!! চলুন-
এ ছাড়াও মাছের সংবহন তন্ত্র আমাদের মত বা পশুর মত নয়। অর্থাৎ মাছের রক্ত আমাদের মত বা পশুর মত ধমনী, শিরা-উপশিরা দ্বারা সঞ্চালিত হয় না। এ জন্যেই মাছ মরার 2 দিন পর কাটলেও তার রক্ত বেরিয়ে যায়!! বুঝলেন মশাই??
সুধী পাঠক, মাছ জাবেহ করায় বিষয়ে কোরানে আল্লাহ বলেছেন এভাবে-

وَهُوَ الَّذِي سَخَّرَ الْبَحْرَ لِتَأْكُلُوا مِنْهُ لَحْمًا طَرِيًّا

অনুবাদ হবে এমন-"তিনিই তোমাদের জন্য সমুদ্রকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তাজা/ বিশুদ্ধ মাছের গোশত নিয়ে খাও"(16:14 এবং 35:12)। লক্ষ্য
 করা দরকার যে, এই আয়াতে মাছকে তাজা/ বিশুদ্ধ বলা হয়েছে। সে জন্যই মাছকে জাবেহর মাধ্যমে বিশুদ্ধ বা তাজা বা ব্যাকটেরিয়া, জীবানু ও ভাইরাস মুক্ত করার প্রয়োজন নেই। এজন্যই মাছকে জাবেহ করতে হয় না।


© : লেখক, হোসেন কুরানী।

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...