আরাফার দিনে রোজার বিধান কী? প্রশ্নঃ ১১৮

একসাথে রোজা ও ঈদ হবে কি না তা নিয়ে মতবিরোধ চলছে এবং থাকবেও। কেননা এই মতবিরোধ যৌক্তিক কিন্তু এটার ওপর কিয়াস করে আরাফার রোজা কোনো তারিখে হবে সেটা নিয়ে মতবিরোধের কোনো কারণ আমি দেখছি না এবং মতবিরোধ থাকা উচিত‌ও না। এটা মূলত মতবিরোধের কোনো বিষয় নয়।
কেননা রাসূলুল্লাহর স্পষ্ট হাদিস রয়েছে,
صيام يوم عرفة احتسب على الله ان يكفر السنة التي قبله والسنة التي بعده.
অর্থাৎ আরাফার দিনের রোজা তার পূর্বের এক বছর এবং পরবর্তী এক বছর মোট দুই বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম "আরাফার দিনে" রোজা রাখতে বলেছেন, 9 জিলহজ শব্দ উল্লেখ করেননি। যদিও 9 জিলহজ আর আরাফার দিনের মধ্যে বাহ্যত কোনো পার্থক্য নেই। কেননা 9 জিলহজ‌ই আরাফার দিন কিন্তু এখানে একটি বিরাট সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে ।
,
আর তা হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফার দিন রোজা রাখতে এই জন্য বলেছেন যে, সেই দিন হাজীগন আরাফার ময়দানে যাবেন, তাকবীর-তাহলীল বলবেন। অনেক মর্যাদা পাবেন , নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারবেন। আমরা যারা যেতে পারি না আমরা ওই দিন রোজা রাখে যেন তাদের সাথে স‌ওয়াবে একটু শরিক হ‌ই এবং নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারি। এখন আমরা যদি নিজ দেশের তারিখ অনুযায়ী 9 জিলহজ রোজা রাখি তাহলে সেইদিন হাজীগণ আরাফার ময়দানে থাকেন না , সে দিন তারা কুরবানী করে থাকেন। অতএব, রাসূলের রোজা রাখার নির্দেশ দেওয়ার উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় । যদি রাসুলুল্লাহ 9 জিলহজ শব্দটি হাদীসে উল্লেখ করতেন তাহলে বাংলাদেশের তারিখ অনুযায়ী 9 জিলহজ রোজা রাখার সুযোগ ছিল কিন্তু তিনি যেহেতু 9 জিলহজ শব্দে উল্লেখ না করে "আরাফার দিন" শব্দটি উল্লেখ করেছেন। অতএব যেদিন হাজীগণ আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন সেই দিনই রোজা রাখা এই হাদিসের উদ্দেশ্য এবং পূর্ণ ফজিলত পেতে হলে আগামীকাল তথা বাংলাদেশ তারিখ অনুযায়ী 8 জিলহজ রোজা রাখতে হবে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব এড়াতে চাইলে সর্বোত্তম হচ্ছে 8 এবং 9 দুই দিন‌ই রোজা রাখা। এখন কেউ হয়তো বলতে পারেন যে, 9 তারিখ রোজা রাখলে সেই দিন তো সৌদি আরবে ঈদ । আর ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। এই প্রশ্ন না তোলার জন্যই প্রথমে বলেছি যে, রোজা এবং ঈদ একসাথে হবে না আলাদা হবে সেটা নিয়ে মতভেদ করা যৌক্তিক এবং উভয় পক্ষের দলিল-প্রমাণ বিদ্যমান। অত‌এব, 9 জিলহজ সৌদি আরব ঈদ হইলে সেই দিন বাংলাভাষীর জন্য রোজা রাখা হারাম হয় না। কেননা রোজা ও হজ্জ্ব প্রত্যেক দেশেই রয়েছে কিন্তু আরাফা একটা জায়গাতেই হয়ে থাকে। অতএব, আরাফার ক্ষেত্রে সেটাকেই ফলো করতে হবে কিন্তু রোজা ও ঈদের ক্ষেত্রে তা জরুরী নয় ।
(তবে জরুরি কিনা তা বিস্তর আলোচনার বিষয়)।
(উত্তর দিয়েছেনঃ আসলাম সাঈদী)

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...