উত্তর:
হজ্জ ও ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে মাথা মুন্ডন করা অথবা সমস্ত চুল খাটো করা ওয়াজিব (বুখারী হা/১৭২৯; মুসলিম হা/১৩০১; মিশকাত হা/২৬৩৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জের দিন হালাল হওয়ার সময় মাথা মুন্ডনকারীদের জন্য দু’বার, অন্য বর্ণনায় তিনবার এবং চুল খাটোকারীদের জন্য একবার দো‘আ করেছিলেন (বুখারী হা/১৭২৭, মুসলিম হা/১৩০৩, মিশকাত হা/২৬৪৮-৪৯)। বিদায় হজ্জের সময় জনৈক ব্যক্তি এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি মাথা মুন্ডনের আগেই ত্বাওয়াফে এফাযাহ করেছি। জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি মাথা মুন্ডাও অথবা চুল খাটো কর, কোন দোষ নেই’ (তিরমিযী হা/৮৮৫, মিশকাত হা/৮৮৫)। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, বিদায় হজ্জের সময় রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর কিছু সাথী মাথা মুন্ডন করেছিলেন এবং কিছু সাথী চুল খাটো করেছিলেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৬৪৬)। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, মু‘আবিয়া (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, আমি মারওয়াতে কাঁচি দ্বারা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর চুল ছেটেছি’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৬৪৭)। এ ঘটনা ছিল ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পরে হোনায়েন যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে ওমরাহ কালে (ফাৎহুলবারী হা/১৭৩০-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর রাসূল-এর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। তোমরা অবশ্যই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাপদে। তোমাদের কেউ মস্তক মুন্ডনকারী হিসাবে ও কেউ চুল খাটোকারী হিসাবে…’ (ফাৎহ ২৭)। অতএব যে কোন একটি করা ওয়াজিব।
হিন্দু ভদ্র মহাশয় একটি হাস্যকর কথা বলেছেন। আপনার কর্তব্য ছিল, তার নিকট তথ্যসূত্র তলব করা।তিনি কোথায় পেলেন এ কথা ? লোক হাসানো কথা বলে নিজের জ্ঞানিক দৈন্য প্রকাশের কি প্রয়োজন ? মাথা মুণ্ডণ হজ্বব্রতের অন্যতম একটি অনুসঙ্গ। পবিত্র কুরআনে মাথা মুণ্ডনের কথা এসেছে। হাদীসে এসেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্বব্রত পালন কালে মাথা মুণ্ডন করেছেন। পবিত্র কুরআনে এসেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর রাসূলকে স্বপ্নটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত করে দেখিয়েছেন, আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা অবশ্যই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে- তোমাদের কেউ কেউ মস্তক মুণ্ডিত করবে আর কেউ কেউ কেশ কর্তন করবে। সূরা ফাতহ ২৭। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে আল্লাহ তুমি হজ্বের ক্ষেত্রে মাথা মুণ্ডনকারীদের ক্ষমা করে দাও। ইতহাফুল খিয়ারাতিল মাহারাহ, হাদীস ২৬০৪
হজ্বের ক্ষেত্রে কেন মাথা মুণ্ডন করা হয় ? এ প্রশ্নের সুনিশ্চিত উত্তর একমাত্র আল্লাহই জানেন। তবে উলামায়ে মাথা মুণ্ডনের তাৎপর্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, হাজী সাহেবগণ হলেন আল্লাহর ঘরের ভিখারী। তারা সবধরনের আমিত্ব ও কর্তৃত্বকে বিসর্জন দিয়ে একমাত্র আল্লাহর জন্য হয়ে যান। নিজের পোষাক পরিচ্ছেদ এমন কি মাথার চুল পর্যন্ত বিসর্জন দিয়ে নিরেট আল্লাহর জন্য হয়ে যান। শিবের সাথে ইসলামী বিধানের কি সম্পর্ক। হজ্ব বিধান যখন ফরজ হয় তখন কি শিব ছিল সেখানে ? শিব কত সনে কোথায় জন্ম গ্রহণ করে ? হজ্বের মত একটি পবিত্র বিধানের সাথে কি করে শিব নামক কল্পনাপ্রসূত একটি বিষয়কে সংশ্লিষ্ট করা হলো ? বস্তুত এসব কথার উত্তর দিতে নেই। এসব কথার উত্তর দিতে যাওয়ার অর্থ হলো, সে কথাকে গণ্য করা। সুতরাং এ জাতীয় হাস্যকর কথাকে হেসে হেসেই উড়িয়ে দেওয়া চাই।
No comments:
Post a Comment