প্রাথমিক যুগের শিয়াঃ রাসূল সাঃ এর মৃত্যুর পর মদীনার কিছু লোক "সাকিফাহ"নামক ঘরে সমাবেত হয় রাজনিতিক শূন্যতা পূরনের লক্ষ্যে। এই খবর আবু বকর সিদ্দীকী রাঃ কাছে পৌছালে তিনি, হযরত উমর রাঃ, এবং হযরত আবু উবায়দাহ রাঃ সেখানে পৌছান যেন মানুষ কোন ভুল সিদ্ধান্তে উপনিত না হয়। তখন হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর দাফন কার্যের দায়িত্বে ছিলেন। "সাকিফাহ"-য় সমেবেত জনতা হযরত আবু বকর সিদ্দিকী রাঃ কে খলিফা হিসাবে বায়াত করে। কিন্তু কিছু লোক হযরত আলী রাঃ কে খলিফা হিসাবে দেখতে চাইতো। কারণ গুলি ক্রমান্নয়েঃ
- কেউ কেউ আব্দুল মোত্তালিব কে মক্কার শাষক তথা আরবের শাষক মনে করত। কারণ মক্কা ছিল আরবের কেন্দ্রভূমি। সেই কারণে রাসূল সাঃ আব্দুল মোত্তালিবের বংশ হিসাবে নিজেই শাষকে পরিনত হন এবং এই ধারায় হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর স্থলাভিষিক্ত হওয়া উচিত।
- কেউ কেউ হযরত আলী রাঃ কে রাসূল সাঃ এর ছেলের মত মনে করতেন। কারণ, তিনি রাসূল সাঃ এর পালিত ছিলেন, রাসূল সাঃ এর মেয়ের জামাতা ছিলেন এবং রাসূল সাঃ এর সরাসরি বংশ হাসান এবং হোসেনে রাঃ এর পিতা ছিলেন। আবার কোন কোন সময় বড় ভাই এবং ছোট ভাইয়ের (যদিও হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর চাচাতো ভাই) বয়স বেশী পার্থক্য হল, ঐ সম্পর্ককেও পিতা-ছেলের সম্পর্কের মত ধরা হয়।
- কেউ কেউ হয়ত ছিলেন এ রকম, তারা জাস্ট মনে করতেন আলী রাঃ শাষক হিসাবে ভাল হবেন।
হযরত আলী রাঃ কে খলিফা দেখতে চান এমন লোকদের বর্নিত প্রথম দুই ধারার ব্যাক্তিদের চিন্তা ধারা এক প্রকার রাজতন্ত্রীক। এবং হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ কে রাজতন্ত্রীয় চিন্তা ধারার মোকাবেলা করতে হয়েছিল। যাইহোক, তারা সকলেই হযরত আবু বকর রাঃ এবং পরবর্তিতে হযরত উমর রাঃ কে মেনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে ছিলেন। তারা কখনই আলাদা ধর্মিয় দল নন, এটা শুধু সমর্থন ও মতামতের ব্যাপার।
প্রথম যুগের শিয়াদের সম্পর্কে হযরত ইবনে তাইমিয়া রঃ বর্ননা করেন, "প্রাথমিক যুগের শিয়ারা যারা আলী রাঃ কে সমর্থন করেছিল বা ঐযুগে ছিল তারা হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ এর উচ্চ মর্যাদা নিয়ে কোন মতবিরোধে ছিলেন না, তবে তাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল আলী রাঃ নাকি উসমান রাঃ বেশী মর্যাদা সম্পন্ন"(মিনহাজ আস-সুন্নাহ,১/১৩; Cited by Dr Sallabi, Ali bin abu talib, v=2)
পরবর্তীতে হযরত আলী রাঃ এর খেলাফত কালে, মুসলিমদের বিশাল অংশ আলী রাঃ এর সমর্থনে ছিল। এর মধ্যে অনেক বদরী সাহাবা, আনসার ছিলেন। এই লিস্ট বিশাল। কিন্তু তারা কখনই আলাদা আকিদাহ বিশিষ্ট দল নন। তারা শধু মাত্র হযরত আলী রাঃ এর জীবিত কালেই ছিলেন। তারা আর বর্তমান সুন্নি একই দল, কারণ বর্তমান সুন্নিরা খেলাফতে রাশিদিন বলতে বুঝায়, হযরত আবু বকর রাঃ, উমর রাঃ, উসমান রাঃ, আলী রাঃ এবং হাসান রাঃ এর শাষনকাল।
বর্তমান যুগের শিয়াঃ বর্তমান যুগের শিয়াদের শিয়া নাম করনের মধ্যেই ভুল আছে। কারণ বর্তমান যুগের শিয়াদের শিয়া ডাকলে প্রথমিক যুগের শিয়ারাও এই নামে পরে যান। মূলত বর্তমান যুগের শিয়া দাবীকৃত দলগুলির সাহিত আদি কালের শিয়ার কোন সম্পর্ক নেই। বর্তমান যুগের শিয়াদের তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
- উগ্র-পন্থী শিয়াঃ শিয়াদের মধ্যে মাইনরিটি। ভয়ংকর সব আকিদাহ সম্পন্ন। তাদের অনেকেই আলী রাঃ কে নবী বা ডিভাইন কেউ বলার চেষ্টা করে।
- যায়েদিয়া শিয়াঃ তারা অন্যান্য শিয়াদের থেকে অনেকটা আলাদা। তারা জায়েদ বিন আলী বিন হুসাইন আল জয়নাল আবেদীনের অনুসারী। তারা মনে করেন, অত্যাচারী বাদশার বিপক্ষে যুদ্ধ করা ইমামদের দায়িত্ব। তারা আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃকেও ভালবাসে। শুধু মাত্র হযরত আলী রাঃ কে অন্যান্য সাহাবীদের থেকে উপরে স্থান দেয়।
- ইমামী শিয়াঃ এরা সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। (তাদের কেউ কাউকে অনেকে রাফিদি নামে ডাকেন। বলা হয়ে থাকে রাফিদিরাই হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ এর প্রতি বিদ্দেষ ছড়ায়। রাফিদিদের নাম রাফিদি (রাফাদা-বাতিল) হয়েছে, যখন ১২১ হিজরীতে হিসামের বিপক্ষে যুদ্ধে, তারা যায়েদ বিন আলীর সৈন্যবাহিনীর অংশ হয়েও তাকে ফেলে চলে যায় (Dr Sallabi, Ali bin abu talib, v=2, p 316)। সকল ইমামী শিয়ারাই রাফিদি না, অর্থ্যাত সকল ইমমীরা আবু বকর সিদ্দিকী রাঃ এবং উমর রাঃ এর প্রতি বিদ্দেষ ছড়ায় না।)
- ১২ ইমামি শিয়াঃ এরা শিয়াদের সর্ব-বৃহত দল। এরা ইরান, ইরাক এবং আজারবাইজানে সংখ্যা গরিষ্ট। ভারত ও পাকিস্থানে এদের সংখ্যা অনেক।
- ইসমাঈলি শিয়াঃ এরাও শিয়াদের মধ্যে একটী পড়িচিত দল। এই দলের দুটি নেতৃত্ব আছে। একটি দাওদিয়া বাহরা এবং অন্যটি আগা খান।
সতর্কতাঃ অনেক সুন্নি আলেমের মতে রাফিদিরা আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর দ্বারা প্রাতারিত হওয়া দল এবং তারা ফেতনায় আরষ্ট এবং মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্টকারী। তবে শিয়াদের একটি গ্রুপ আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর অস্থিত্ব অস্বীকার করে এবং শিয়াদের বাকিরা আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর সাথে যেকোন প্রকার সম্পর্কহীন বলে দাবী করে।
ইমামী শিয়াদের আকিদাহ গত সমস্যাঃ এখানে যায়েদিইয়াহ শিয়া এর অন্তরভুক্ত নয়। এই সমস্যা ইমামী শিয়াদের। দুইটি সমস্যা রয়েছেঃ
- তারা বিশ্বাস করেন, ইমামরা ভুলত্রুটির উর্ধ্বে। এটাকে ইসমাহ শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কেউ কেউ অভিযোগ করেন এটা শুধু মাত্র আল্লাহ পাকের বৈশিষ্ট। অতএব, শিয়ারা শিরক কারী। কিন্তু সুন্নিদের কেউ কেউ নবীদের এই যোগ্যতা দান করেন এইভাবে যে, মহান আল্লাহ পাক বিশেষ অনুগ্রহহের দ্বারা নবীদের ভুল থেকে মুক্ত রাখেন। শিয়ারাও একইভাবে যদি এই বিশ্বাস রাখে যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক বিশেষ অনুগ্রহ করে ইমামদের ভুল থেকে মুক্ত রাখেন। তাহলে তারা (ইমামী শিয়ারা) শিরককারী হয়ে যান না।
- তারা আরো বিশ্বাস করেন, ইমামত নবুয়তের চেয়ে উপরে, কিন্তু রাসুল সাঃ একই সাথে নবী এবং ইমাম, এবং তিনি সকলের থেকে সম্মানিত। । "ইমামতের স্ট্যাটাস নবুয়তের উপরে" একটা বিপদজনক বিশ্বাস। কিন্তু এই বিশ্বাস রাসূল সাঃ এর কাছে আশা মেসেইজ কে অস্বীকার করেনা কারণ ইমামদের দায়িত্ব হল নবুয়তের মাধ্যমে পাওয়া অহীর ব্যাক্ষা করা। তাই এতোদসত্তেও তাদেরকে অমুসলিম বলা যায় না। কিন্তু সংদ্দেহজনক। মহান আল্লাহ পাক সর্ব বিষয়ে সব থেকে ভাল জানেন। (লিংকে ক্লিক করলে জানতে পারবেন তারা কোন যুক্তিতে এটা বিশ্বাস করেন)
ইসলামে পার্সিয়ানদের অবস্থানঃ ইবনে খালেদুন বর্ননা করেন,
"Most of the hadith scholars who preserved traditions for the Muslims also were ajams (Persians), or Persian in language and upbringing, because the discipline was widely cultivated in the ‘Iraq and the regions beyond. (Furthermore,) all the scholars who worked in the science of the principles of jurisprudence were ajams (Persians), as is well known. The same applies to speculative theologians and to most Qur’an commentators. Only the ajams (Persians) engaged in the task of preserving knowledge and writing systematic scholarly works. Thus, the truth of the following statement by the Prophet [in Sahih Muslim] becomes apparent: “If scholarship hung suspended at the highest parts of heaven, the Persians would (reach it and) take it.”
সাফাবীদ তুর্কি মিক্স রাজ বংশ যারা উসমানীয়ান তুর্কিদের প্রতিপক্ষ ছিল, তারা রাজনিতিক কারণে অনেকটা জোরপূর্বক ইরান(পার্সিয়ানদের মধ্যমনী) কে ১২ ইমামী শিয়াতে রূপান্তর করে। উল্লেখ্য, পার্সিয়ানরা ছিল ইসলামের চ্যাম্পিয়ন। তারা অন্যান্য মুসলিমদের লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট, এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের কারুকাজে সহযোগিতা করত। কিন্তু ইরানীরা শিয়া হয়ে যাওয়ার ফলে, বৃহত্তর পার্সিয়ান জাতি (তাজিক, কিছুটা আফগান, কুর্দি) একে উপর থেকে আলাদা হয়ে যায়। অন্যদিকে তুরান (তুর্কমেনিস্থান, কাজাকিস্থান, উজবেকিস্থান, কিরগিজস্থান ইত্যাদি) দুর্বল ও বন্ধুহীন হয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে রাশিয়ার কাছে স্বাধীনতা হারায়। এবং ভারতের মুসলিমরাও আরব এবং তুর্কি মুসলিমদের সাথে সংযোগ হারায় এবং আস্তে আস্তে স্বাধীনতা হারায়। ইরানের শিয়া হয়ে উঠা ছিল, মুসলিম ইউনিটির জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর।
সাধারণ শিয়াঃ সাধারন শিয়াদের ব্যাপারে বলতে গিয়ে মুসলিমদের ৭২-৭৩ দলের কোন দল সঠিক এ নিয়ে প্রবন্ধে লিখেছিলাম, "শিয়া আয়াতুল্লাহদের বাহিরে রেখে, সাধারণ জনসাধারণের কথা বলছি, যারা মুসলিমদের দুঃখে দুঃখ পায়, মুসলিমদের কষ্টে কষ্ট পায়। এবং তাত্ত্বিক বিষয় এত গভীর ভাবে জানে না, কিন্তু যা জানে তা কোরানের সহিত সাংঘর্ষিক না হয়ে থাকে, তাহলে তাদের মধ্যেও সঠিক দলীয় ব্যক্তি থাকা অসম্ভব নয়। সকল সাহাবীই সর্ব প্রকার হাদিস জানতেন না, তাই কিছু মানুষ যদি স্বল্প জানা হয়, কিন্তু যা জানে তা সহি ইসলামের বিপক্ষে নয়, ঐ সব নির্দোষ সহজ সরল ব্যক্তিগণ অবশ্যই ইব্রাহীম রাঃ এর ধর্মের উপর থাকা অসম্ভব নয়, আমি ব্যক্তিগত ভাবে সুন্নি ইমামের পিছনে শিয়া ব্যক্তিকে নামাজ আদায় করতে দেখেছি। কিন্তু যারা শিয়া পরিচয়টাকে মুখ্য ঘোষণা করে এর উপর অন্য মুসলিমদের দুঃখের কারণ হয়, তাহলে তারা সুস্পষ্ট রূপে দলাদলিতে লিপ্ত।"-[মুসলিমদের মধ্যে কোন দল সঠিক ?]
‘If loving the Wasi of the Prophet, Ali Murtadha a Rafidi,
then verily amongst all the people I am the greatest Rafidi
From the plain of Mina I will shout to all those standing or sitting,
if loving the family of the Prophet makes you a Rafidi,
then I testify before the mankind and Djinns I am a Rafidi”-Imam Shafi
(Sawaiq al Muhriqah, page 449 & 450 শাফেয়ী মাহযাবের ইমাম শাফি'য় রঃ এর কবিতাটি আগে থেকেই জানা কিন্তু মুখস্থ নেই বলে দুর্বল রেফারেন্স থেকে কপি করা হয়েছে)
সতর্কতাঃ ইমাম শাফেয়ী রাঃ এখানে নবী পরিবারের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি অন্য বর্ননায়, রাফিদিদের থেকে রেওয়াত গ্রহন করতে না বলেছেন। অর্থ্যাত রাফিদিরা গ্রহনযোগ্য নয়। তিনি নিজেও রাফিদি নন, কিন্তু নবী পরিবার ও আলী রাঃ কে ভালবাসেন সেটাই তিনি বুঝিয়েছেন।
শিয়া ইসলাম (আরবি: شيعة, শীআ'হ্) ইসলামের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্প্রদায়। শিয়া ইসলাম অনুসরণকারীদের শিইতি বা শিয়া বলা হয়। “শিয়া” হল ঐতিহাসিক বাক্য “শিয়াতু আলি” (شيعة علي) এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যার অর্থ “আলি অনুগামীরা” বা “আলির দল”।[১][২][৩][৪][৫] শিয়া মতবাদের মূল ভিত্তি হলো, আলি এবং ফাতিমার বংশের মাধ্যমে নবি পরিবারের (আহলে বাইত) লোকেরাই হলেন ইমামত বা নেতৃত্বের প্রধান দাবীদার; তাই আলি খিলাফতের প্রশ্নে আবু বকর, উমর ও উসমানের মুকাবেলায় অগ্রাধিকারী। শিয়ারা বিশ্বাস করে ইসলামের সর্বশেষ নবী গাদির খুমের ঘটনার (The event of Ghadir Khumm) মাধ্যমে তাকেই খিলাফতের জন্য মনোনীত করে গিয়েছিলেন।[৬] আবু বকর ছিলেন বনু তাইম গোত্রের, উমর বনু আদি গোত্রের, উসমান বনু উমাইয়া গোত্রের কিন্তু আলি মুহাম্মদের হাশেমি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া আলি একাধারে প্রথম পুরুষ মুসলিম, ইসলামের রাসুলের চাচাতো ভাই, রাসুলের জামাতা, রাসুলের দৌহিত্র হাসান ও হোসেনের পিতা ও রাসুলের সেনাপতি ছিলেন। রাসুলের কোনো পুত্রসন্তান ছিলনা এবং দৌহিত্রা (হাসান, হোসেন) শিশু ছিলেন। এসবদিক বিবেচনায় রাসুলের ইন্তেকালের পর আলিই নেতৃত্বের সর্বাধিক যোগ্য বলে শিয়া মুসলিমগণ মনে করেন। তারা আলি ও মুয়াবিয়ার মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধেও আলিকে সমর্থন করেন। পরবর্তীতে মুয়াবিয়ার পুত্র ইয়াজিদের সেনাবাহিনী আলির পুত্র হোসেনকে হত্যা করলে শিয়া মুসলিমরা খিলাফতের প্রতি পুরোপুরি আস্থা হারিয়ে ফেলে এবং হোসেনপুত্র জয়নুল আবেদিনের মাধ্যমে আলি ও ইসলামের রাসুলের বংশধরদের মধ্যে থেকে ইমামতের নীতি অনুসরণ করতে থাকে।
ইসলামের অন্য স্কুলের মতো, শিয়া ইসলাম ইসলামিক ধর্মগ্রন্থ, পবিত্র কুরআন এবং ইসলামের সর্বশেষ নবী[৭] এর জীবনাদর্শের উপর প্রধান গুরুত্ব দেয়।[৮] তবে তারা আব্বাসিয় শাসনামলে (হিজরি ৩য় শতকে) সংকলিত সিহাহ সিত্তাহ হাদিসের তুলনায় আহলে বাইতের নিকট থেকে প্রাপ্ত হাদিস সমূহকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য মনে করে। শিয়া মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, শুধুমাত্র আল্লাহই ইসলাম, কুরআন এবং শরিয়াত রক্ষা করার জন্য একজন প্রতিনিধি (নবী এবং ইমাম) নির্বাচন করতে পারেন[৯], সাধারণ মুসলমানরা পারে না। যার কারণে শিয়ারা ইসলাম এবং কুরআনের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য জনগণ যে আবু বকর, উমর এবং উসমানকে নির্বাচন করেছেন তা অনুসরণ করে না। এই জন্য শিয়ারা আলিকে চতুর্থ খলিফা হিসেবে বিবেচনা করে না, বরং প্রথম ইমাম হিসেবে বিবেচনা করেন। শিয়ারা বিশ্বাস করে যে, অনেক বর্ণনা রয়েছে যেখানে ইসলামের নবী তার উত্তরাধিকারী হিসাবে আলিকে নির্বাচিত করেছিলেন।[১০][১১]
ইরান, ইরাক, বাহরাইন, আজারবাইজান, লেবানন, ইয়েমেন ইত্যাদি দেশে শিয়ারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাছাড়া সিরিয়া, কুয়েত, জর্ডান, ফিলিস্তিন, সউদি আরব, ভারত, পাকিস্তানেও প্রচুর শিয়া মুস্লিমদের বসবাস।
শিয়া ইসলামের ইমাম সমুহ[সম্পাদনা]
- ইমামুল মুত্তাকীন আলি
- ইমাম হাসান মুজতাবা
- ইমাম আবু আব্দিল্লাহ হোসাইন
- ইমাম সাজ্জাদ আলি জয়নুল আবেদিন
- ইমাম মোহাম্মদ বাকির ইবনে আলি
- ইমাম আবা আব্দিল্লাহ জাফর সাদিক
- ইমাম আবুল হাসান মুসা কাজিম
- ইমাম আবুল হাসান আলি রেজা
- ইমাম মোহাম্মদ জাওয়াদ ত্বকি
- ইমাম আলি নাকি ইবনে মোহাম্মদ
- ইমাম আবু মোহাম্মদ হাসান আস্কারি
- আয়ুহাল কায়েম মুন্তাযারাল মাহাদী
বারো ইমামের তালিকা[সম্পাদনা]
১ম | আলি ইবন আবি তালিব | ৬০০ - ৬৬১ | 'Alī ibn Abī Ṭālib , Amīru al-Mu'minīn নামেও পরিচিত |
২য় | হাসান ইবনে আলি | ৬২৫ – ৬৬৯ | Ḥasan ibn 'Alī , Al-Hasan al-Mujtaba নামেও পরিচিত |
৩য় | হুসাইন ইবনে আলি | ৬২৬ – ৬৮০ | Ḥusayn ibn 'Alī , Al-Husayn ash-Shaheed নামেও পরিচিত |
৪র্থ | জয়নাল আবেদিন | ৬৫৮ – ৭১৩ | 'Alī ibn Ḥusayn , Ali Zayn al-'Abideen নামেও পরিচিত |
৫ম | মুহাম্মদ আল বাকির | ৬৭৬ – ৭৪৩ | Muḥammad ibn 'Alī , Muhammad al-Bāqir নামেও পরিচিত |
৬ষ্ঠ | জাফর আল সাদিক | ৭০৩ – ৭৬৫ | Ja'far ibn Muḥammad , Ja'far aṣ-Ṣādiq নামেও পরিচিত |
৭ম | মুসা আল কাদিম | ৭৪৫ – ৭৯৯ | Mūsá ibn Ja'far , Mūsá al-Kāżim নামেও পরিচিত |
৮ম | আলি আর-রিজা | ৭৬৫ – ৮১৮ | 'Alī ibn Mūsá , Ali ar-Riża নামেও পরিচিত |
৯ম | মুহাম্মদ আল তকি | ৮১০ – ৮৩৫ | Muḥammad ibn 'Alī , Muḥammad al-Jawad এবং Muḥammad at-Taqi নামেও পরিচিত |
১০ম | আলি আল হাদি | ৮২৭ – ৮৬৮ | 'Alī ibn Muḥammad , Alī al-Ḥādī এবং ""Alī an-Naqī নামেও পরিচিত |
১১তম | হাসান আল আসকারি | ৮৪৬ – ৮৭৪ | Ḥasan ibn 'Alī , Hasan al Askari নামেও পরিচিত |
১২তম | মুহাম্মাদ আল মাহদি | ৮৬৯ – In occultation | Muhammad ibn Ḥasan , al-Hujjat ibn al-Ḥasan, Imam al-Mahdī, Imam al-Aṣr, ইত্যাদি নামেও পরিচিত |
No comments:
Post a Comment