26যীশু বললেন, ঈশ্বরের রাজ্য হল এইরকম: একটি লোক জমিতে গিয়ে বীজ বুনে এল। 27তারপর কিছুদিন ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিল। ওদিকে বীজ অঙ্কুরিত হয়ে বেড়ে উঠল। কি করে যে এটা হল লোকটি সে সম্বন্ধে কিছুই জানল না। 28মাটি নিজে থেকেই ফসল ফলায়। প্রথমে অঙ্কুর, তারপর শীষ, তারপরে সেই শীষ পরিণত হয় শস্যে। 29ফসল পেকে গেলে লোকটি তখন কাস্তে লাগায়, কারণ ফসল কাটার সময় হয়ে গেছে।
30যীশু বললেন, কিসের সঙ্গে ঈশ্বরের রাজ্যের তুলনা দেব? কোন উপমা দিয়ে বোঝাব? 31এ হল সরষে দানার মত। বুনবার আগে পর্যন্ত এটি থাকে পৃথিবীর সমস্ত বীজের চেয়ে ছোট। 32বীজ বোনার পর যে গাছ হয় তা যে কোন গাছের চেয়ে বড় হয়। তার বড় বড় ডালপালা হয়, সেই ডালে পাখিরা এসে বাসা বাঁধে।
33লোকদের বোঝার ক্ষমতা অনুসারে যীশু এইভাবে অনেক উপমা দিয়ে বাণী প্রচার করতেন। 34উপমা ছাড়া তিনি তাদের কিছু বলতেন না কিন্তু পরে একান্তে তিনি নিজের শিষ্যদের সব ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিতেন।
প্রাকৃতিক শক্তির উপর যীশুর কর্তৃত্ব
(মথি 8:12,23-27; লুক 8:22-25)
35সেই দিনই সন্ধ্যেবেলায় যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, চল আমরা সাগরের ওপারে যাই। 36তাঁরা লোকদের কাছ থেকে চলে এলেন। যীশু নৌকায় যেমন ছিলেন তেমনিই থাকলেন, তাঁরা সেই নৌকায় উঠে যীশুকে নিয়ে চলে গেলেন। তাঁদের সঙ্গে আরও কয়েকটা নৌকা ছিল। 37তারপর হ্রদে উঠল প্রচণ্ড ঝড়। ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল নৌকার উপরে, নৌকায় জল উঠতে লাগল। 38যীশু নৌকার পিছন দিকে বালিশে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন। শিষ্যেরা তাঁকে জাগিয়ে বললেন, গুরুদেব, আমরা যে মরতে চলেছি, আপনি কি কিছু করবেন না? 39যীশু উঠে ঝড়কে ধমক দিলেন, থাম! সাগরকে বললেন, শান্ত হও। ঝড় থেমে গেল, সাগরে নেমে এল প্রশান্তি। 40তিনি তাঁদের বললেন, তোমরা এত ভয় পেলে কেন? এখনও কি তোমাদের বিশ্বাস জন্মাল না? 41এতে তাঁরা আরও ভীত হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, কে ইনি? ঝড় আর সাগর পর্যন্ত এঁর আদেশ পালন করে?
সরিষা বীজ ও খামিরের উপমা
(মার্ক 4:30-32; লুক 13:18-20)
31তিনি তাদের আর একটি উপমা দিলেন, স্বর্গরাজ্য এমন একটি সরিষা বীজের মত, যা একজন লোক তার জমিতে বুনল। 32এই বীজটি অন্য সকল বীজের চেয়ে ছোট, কিন্তু যখন বেড়ে ওঠে তখন অন্য সব গাছকে ছাড়িয়ে যায়। এ তখন বৃক্ষে পরিণত হয়, আর পাখিরা এসে এর ডালে বাসা বাঁধে।
33তিনি তাদের আর একটি উপমা দিলেন, স্বর্গরাজ্য খামিরের মত, একজন স্ত্রীলোক যা নিয়ে তিন মণ ময়দার মধ্যে রাখল, পরে সমস্তটাই গেঁজে উঠল।
উপমার প্রয়োজনীয়তা
(মার্ক 4:33-34)
34উপমার মাধ্যমে যীশু এ সমস্ত কথা জনতাকে বললেন। উপমা ছাড়া তিনি তাদের কিছুই বলতেন না। 35যাতে নবী যিশাইয়ের এই ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়: উপমাচ্ছলেই আমি কথা বলব, সৃষ্টির প্রারম্ভ থেকে যা গুপ্ত রয়েছে তা ব্যক্ত করব।
শ্যামাঘাসের উপমার ব্যাখ্যা
36তারপর যীশু জনতার কাছ থেকে ফিরে এলেন বাড়িতে। তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে বললেন, মাঠে ছড়িয়ে দেওয়া শ্যামাঘাসের উপমাটা আমাদের বুঝিয়ে বলুন।
37তিনি তাঁদের বললেন, ভাল বীজ যিনি বোনেন তিনি হলেন মানবপুত্র, 38আর জমিটা হল এই জগৎ। স্বর্গরাজ্যের সন্তানেরা হচ্ছে ভাল বীজ, আর শ্যামাঘাস হল শয়তানের সাঙ্গপাঙ্গ, 39এবং যে শত্রু ঐ বীজ বুনেছিল সে হল স্বয়ং শয়তান। ফসল কাটার সময়টি জগতের অন্তিমকাল এবং স্বর্গদূতেরা হলেন শস্য সংগ্রহকারী। 40যে ভাবে শ্যামাঘাস তুলে নিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়, জগতের অন্তিমকালে তা-ই করা হবে। 41মানবপুত্র তাঁর দূতদের পাঠাবেন। তাঁরা তাঁর রাজ্য থেকে দুরাচারী ও পাপের প্ররোচনা দেয় এমন সব লোককে আলাদা করে 42অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করবেন। সেখানে তারা অনুশোচনা ও আক্ষেপ করবে। 43ধার্মিকেরা তাদের পিতার রাজ্যে সূর্যের মত দ্বীপ্তিমান হয়ে উঠবে। যার বলে আছে সে শুনুক।
No comments:
Post a Comment