1প্রভুর দূত গিলগল থেকে বোখিমে এলেন। তিনি ইসরায়েলীদের বললেন, আমিই তোমাদের মিশর থেকে উদ্ধার করে এনেছি এবং তেমাদের পিতৃপুরুষদের যে দেশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেই দেশে তোমাদের এনেছি। আমি বলেছি, তোমাদের সঙ্গে যে সম্বন্ধ আমি স্থাপন করেছি তা কখনও ভঙ্গ করব না, 2আর তোমরাও এদেশের লোকদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক স্থাপন করবে না। তোমরা তাদের বেদীগুলো ভেঙ্গে ফেলবে। তোমরা কিন্তু আমার সেই আজ্ঞা পালন করনি। কেন এ রকম করলে? 3তাই আমি বলছি, তাদের আমি তোমাদের কাছ থেকে সরাব না। তারা হবে তোমাদের শত্রু আর তাদের দেবতারা হবে তোমাদের মরণ ফাঁদ। 4প্রভুর দূত ইসরায়েলীদের এই কথা বললে তারা চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। 5সেই জন্য জায়গাটির নাম হল বোখিম (রোদনকারিগণ)। সেখানে তারা প্রভুর উদ্দেশে বলিদান করল।
বিচারপতি ও জননায়কদের যুগ
6যিহোশূয় ইসরায়েলীদের বিদায় দেওয়ার পর তাদের জন্য নির্ধারিত অঞ্চলে দখল কায়েম করার জন্য যে যার এলাকায় চলে গেল। 7যিহোশূয় যতদিন জীবিত ছিলেন এবং তাঁর মৃত্যুর পরে যে সব প্রবীণ নেতা ইসরায়েলীদের জন্য প্রভুর মহান কীর্তিকলাপ স্বচক্ষে দেখেছিলেন, তাঁদের জীবনকালে ইসরায়েলীরা প্রভুর সেবা-আরাধনা বজায় রেখেছিল। 8নুনের পুত্র, প্রভুর সেবক যিহোশূয় একশো দশ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন। 9ইসরায়েলীরা তাঁকে তাঁর নিজস্ব এলাকায়, গাশ পর্বতের উত্তরে ইফ্রয়িম প্রদেশের পার্বত্য অঞ্চলে তিম্নাৎ-হেরেসে সমাধিস্থ করেছিল। 10যিহোশূয়ের সমকালীন অন্যান্য লোকেরাও একে একে মারা গেল। তাদের পরে তাদের বংশধরেরা পরমেশ্বর প্রভুর কাছ থেকে দূরে সরে গেল। ইসরায়েলীদের জন্য তিনি যেসব কীর্তিসাধন করেছিলেন তাও ভুলে গেল। 11এই ইসরায়েলীরা তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করতে লাগল। তারা বেল দেবতাদের পূজা করতে লাগল। 12তাদের বিতৃপুরুষের আরাধ্য ঈশ্বর, যিনি মিশর থেকে তাদের উদ্ধার করে এনেছিলেন, সেই পরমেশ্বর প্রভুকে তারা পরিত্যাগ করে অন্যান্য দেবতাদের অর্থাৎ তাদের চারিদিকে যে সব জাতি বাস করত, তাদের উপাস্য দেবতাদের পূজা-অর্চনা করতে লাগল। ফলে পরমেশ্বর তাদের উপর রুষ্ট হলেন। 13প্রভু পরমেশ্বরকে পরিত্যাগ করে তারা বেল ও অষ্টারোৎ দেবদেবীদের পূজা করতে লাগল। 14ফলে ইসরায়েলীদের বিরুদ্ধে প্রভু পরমেশ্বরের ক্রোধাগ্নি প্রজ্বলিত হল এবং তিনি তাদের লুঠেরাদের হাতে সমর্পণ করলেন। তারা তাদের উপর হামলা করতে লাগল। তাদের চারপাশের শত্রুদের কাছে তিনি তাদের বিকিয়ে দিলেন। ফলে তারা আর শত্রুদের সামনে দাঁড়াতে পারত না। 15তারা কোন অভিযানে বের হলে প্রভু তাদের বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিতেন। তারা চরম দুর্দশায় পড়ত। প্রভুর অবাধ্য হলে যে এই দুর্দশা ঘটবে, সে সম্বন্ধে তিই তাদের আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
16এই পরিস্থিতিতে পরমেশ্বর তাদের পরিচালনার জন্য তাদেরই মধ্য থেকে এক একজন নেতার উদ্ভব ঘটাতেন। এই নেতারা লুঠেরাদের কবল থেকে তাদের উদ্ধার করতেন। 17কিন্তু ইসরায়েলীরা তাদের নেতাদের মানতে চাইত না। অন্য নেতাদের প্রতি তারা আকৃষ্ট হত। তাদের প্রভু পরমেশ্বরকে ত্যাগ করে সেই সব দেবতাদের পূজা করত। তাদের পূর্বপুরুষেরা যেমন প্রভুর নির্দেশ অনুযায়ী চলতেন এরা কিন্তু তা করত না। পূর্বপুরুষদের অনুসৃত পথ পরিত্যাগ করে তারা অবিলম্বে বিপথগামী হয়ে পড়ত। 18প্রভু পরমেশ্বর যখন তাদের উদ্ধারের জন্য কোন নেতার উত্থান ঘটাতেন তখন তিনি তাঁর সহায় হতেন এবং সেই নেতার আমলে তিনি শত্রুদের হাত থেকে ইসরায়েলীদের উদ্ধার করতেন। কারণ নিপীড়িত নির্যাতিত ইসরায়েলীদের আর্তনাদে প্রভু করুণাবিষ্ট হতেন। 19কিন্তু সেই নেতার মৃত্যুর পরই তারা আবার ফিরে যেত আগের অবস্থায় এবং আগের চেয়ে আরও বেশি স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠত। অন্য দেবতাদের সেবা করত। মন্দ পথ পরিত্যাগের কোন আগ্রহই তাদের মধ্যে দেখা যেত না। 20তাই ইসরায়েলীদের উপরে প্রভু ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন এবং বললেন, এদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আমার যে চুক্তি ছিল, সেই চুক্তি এরা ভঙ্গ করেছে, আমার আজ্ঞা পালন করেনি। 21তাই যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর যে সব জাতি এখনও দেশে রয়ে গেছে তাদের আমি সরাব না, এখানেই তারা থাক। 22এদের দিয়েই আমি ইসরায়েলীদের পরীক্ষা করব। দেখি, এদের পূর্বপুরুষেরা আমার নির্দেশিত পথে যেমন চলত, এরাও তেমনি চলে কিনা। 23এই কারণেই যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর যেসব জাতি দেশে থেকে গিয়েছিল, পরমেশ্বর তাদের সরাবার কোন উদ্যোগ নেননি।
No comments:
Post a Comment