যাত্রা পুস্তক 7
হারোণের প্রথম অলৌকিক কাজ
8প্রভু পরমেশ্বর মোশি ও হারোণকে বললেন, 9ফারাও
যদি তোমাদের কোন অলৌকিক নিদর্শন দেখাতে বলে, তাহলে তুমি হারোণকে বলবে
ফারাও-এর সম্মুখে তার লাঠিটা ফেলে দিতে, সেটা তখন সাপ হয়ে যাবে। 10মোশি
ও হারোণ ফারাও-এর দরবারে গিয়ে প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশ মতই কাজ করলেন।
ফারাও এবং তাঁর অমাত্যবর্গের সামনে হারোণ তাঁর লাঠিটা ফেলে দিলেন আর সেটা
সঙ্গে সঙ্গে সাপ হয়ে গেল। 11তখন ফারাও তাঁর দরবারের গুণিন ও জাদুকরদের ডেকে পাঠালেন আরা তারাও তাদের মন্ত্রতন্ত্রের দ্বারা সেই রকম কাজ করল।
12তারা তাদের লাঠিগুলো মাটিতে ফেলে দিল এবং সেগুলি সাপ হয়ে গেল, কিন্তু হারোণের লাঠি সেগুলিকে গিলে ফেলল। 13প্রভু পরমেশ্বর যেমন বলেছিলেন, ফারাও-এর হৃদয় তেমনই কঠিন হয়ে রইল। তিনি মোশি ও হারোণের কথায় কান দিলেন না।
মিশরের উপরে দশ আঘাত
(1) নীলনদের জল রক্তে পরিণত
14প্রভু পরমেশ্বর তখন মোশিকে বললেন, ফারাও-এর বুদ্ধি লোপ পেয়েছে, সে ইসরায়েলীদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছে। 15ফারাও
যখন সকালে নদীতে স্নান করতে যাবে তখন তার সঙ্গে গিয়ে দেখা কর। তুমি
নদীতীরে তার জন্য অপেক্ষা করবে এবং যে লাঠিটা সাপে পরিণত হয়েছিল সেটা সঙ্গে
নেবে। 16ফারাওকে
তুমি বলবে, ইসরায়েলীদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর, আমাকে আপনার কাছে এই
কথা বলতে পাঠিয়েছেন, তাঁর প্রজারা প্রান্তরে গিয়ে তাঁর উপাসনা করবে, আপনি
তাদের ছেড়ে দিন। এ পর্যন্ত আপনি তাঁর কথা গ্রাহ্য করেন নি। 17-18দেখুন,
আমার হাতে এই লাঠি দিয়ে আমি নীলনদের জলে আঘাত করব আর সঙ্গে সঙ্গে এর জল
রক্ত হয়ে যাবে। নদীর সব মাছ মরে যাবে এবং জলে এত দুর্গন্ধ হবে যে মিশরীরা
সেই জল আর পান করতে পারবে না। এতেই আপনি বুঝতে পারবেন যে তিনিই ‘নিত্যসত্তা
প্রভুপরমেশ্বর’।প্রকা 16:4
19প্রভু
পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, তুমি হারোণকে বলো যেন সে মিশরের সমস্ত নদী,
জলাশয়, খাল, বিল, পুকুর ইত্যাদির উপরে তার হাতের লাঠি বাড়িয়ে ধরে, তাহলে
সেগুলির জল রক্ত হয়ে যাবে। সারা মিশরের জল রক্তে পরিণত হবে, এমন কি কাঠ ও
পাথরের পাত্রে রাখা জলও রক্ত হয়ে যাবে।
20মোশি
ও হারোণ প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশ মত কাজ করলেন। ফারাও ও তাঁর সভাসদ্দের
সাক্ষাতে মোশি লাঠি তুলে নীলনদের জলে আঘাত করলেন আর নদীর জল রক্ত হয়ে
গেল। 21নদীর সব মাছ মরে গেল, জলে এত দুর্গন্ধ হল যে মিশরীরা নীলনদের জল আর পান করতে পারল না। মিশর দেশের সর্বত্র জল রক্ত হয়ে গেল। 22তখন
মিশরের জাদুকরেরাও মন্ত্রতন্ত্রের দ্বারা সেই রকম করল আর প্রভু পরমেশ্বর
যেমন বলেছিলেন, ফারাও-এর হৃদয় তেমনই কঠিন হয়ে রইল। মোশি ও হারোণের কথা
তিনি গ্রাহ্য করলেন না। 23ফারাও তাঁর প্রাসাদে ফিরে গেলেন, এই ঘটনা তাঁর মনে কোন রেখাপাত করল না। 24নীলনদের জল পানের অযোগ্য হওয়ায় মিশরীরা নদীতীরে ও আশেপাশে পানীয় জলের খোঁজে গর্ত খুঁড়তে লাগল। 25নীলনদের জলে প্রভু পরমেশ্বর আঘাত হানার পর এই ভাবে সাত দিন কেটে গেল।
========================================================
যাত্রা পুস্তক-8
(2) ব্যাঙের উপদ্রব
1প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, তুমি গিয়ে ফারাওকে বল, প্রভু পরমেশ্বর বলেছেন, আমার অর্চনা করার জন্য আমার প্রজাদের ছেড়ে দাও। 2যদি তুমি তাদের না ছাড়, তাহলে তোমার রাজ্যে আমি ব্যাঙের উপদ্রব ঘটাব। 3নীলনদ
ব্যাঙে ছেয়ে যাবে এবং সেখান থেকে সেগুলি তোমার প্রাসাদে, শয়নকক্ষে,
শয্যায় এবং তোমার পারিষদ ও প্রজাদের বাড়িতে গিয়ে উঠবে। এমন কি তোমাদের
উনুন ও বাসনপত্রের মধ্যে গিয়েও ঢুকবে। 4তোমার এবং তোমার পারিষদ ও প্রজাদের গায়ে ব্যাঙ লাফিয়ে উঠতে থাকবে।
5প্রভু
পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, তুমি হারোণকে বল, যেন সে মিশর দেশের সমস্ত নদী,
নালা, খাল বিলের উপর তার লাঠি বাড়িয়ে ধরে, তাহলে সব ব্যাঙ ডাঙ্গায় উঠে
আসবে।
6 হারোণ মিশরের সমস্ত জলাশয়ের উপর তাঁর লাঠি বাড়িয়ে ধরলেন আর ঝাঁকে ঝাঁকে ব্যাঙ এসে দেশ ছেয়ে ফেলল।
7মিশরী জাদুকরেরাও তাদের যাদুমন্ত্রবলে দেশে ব্যাঙের ঝাঁক নিয়ে এল।
(3) ডাঁশ মশার উপদ্রব
16প্রভু
পরমেশ্বর মোশিকে আবার বললেন, তুমি হারোণকে বল, সে যেন তার লাঠি দিয়ে
মাটিতে ধুলোর উপর আঘাত করে, তাহলে সারা মিশর দেশ ডাঁশ মশায় ছেয়ে যাবে।
17তাঁরা
তা-ই করলেন।
হারোণ তাঁর হাতের লাঠি দিয়ে ধূলোর উপর আঘাত করলেন আর সেই
ধূলো ডাঁশ মশায় পরিণত হয়ে মানুষ ও পশু সকলকেই ছেঁকে ধরল।
দেশের সমস্ত
ধূলিকণা ডাঁশ মশা হয়ে সারা দেশ ছেয়ে ফেলল। 18জাদুকরেরাও মন্ত্র পড়ে ডাঁশ মশা উৎপন্ন করার চেষ্টা করল কিন্তু তারা ব্যর্থ হল। 19মানুষ
ও পশু সকলেই মশার দ্বারা আক্রান্ত হল দেখে জাদুকরেরা ফারাওকে বলল, ঈশ্বরের
অঙ্গুলি সঙ্কেতেই এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রভু পরমেশ্বরের কথা মত ফারাও-এর
বুদ্ধি বিকল হয়ে রইল। মোশি ও হারোণের কথা তিনি গ্রাহ্য করলেন না।লুক 11:20
==========================================================
No comments:
Post a Comment