যাত্রা পুস্তক ১৬ অধ্যায়, গণনা পুস্তক ১১: ৭-৯, যিহেশূয়৫: ১২

ঈশ্বর-দত্ত খাদ্য
1সমগ্র ইসরায়েলী সমাজ এলিম থেকে যাত্রা করে এলিম ও সিনাই পর্বতের মাঝামাঝি সীন প্রান্তরে এসে উপস্থিত হল। মিশর ছাড়ার পর দ্বিতীয় মাসের পনেরো তারিখে তারা সেখানে এসে পৌঁছাল। 2ইসরায়েলীরা সই প্রান্তরে মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে লাগল। 3তারা তাঁদের বলল, মিশরে থাকতেই প্রভু পরমেশ্বর যদি আমাদের মেরে ফেলতেন তাহলেই ভাল হত। সেখানে আমরা হাঁড়িভর্তি মাংস এবং ইচ্ছামত রুটি খেতে পেতাম। কিন্তু তোমরা আমাদের সকলকে অনাহারে মারার জন্য এই প্রান্তরে নিয়ে এসেছ।
4প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, আমি আকাশ থেকে তোমাদের জন্য খাদ্য বর্ষণ করব। ইসরায়েলীরা প্রতিদিন মাঠে গিয়ে তাদের দৈনিক রসদ কুড়িয়ে আনবে। আমি তাদের পরীক্ষা করে দেখতে চাই, তারা আমার বিধান মেনে চলে কি না।যোহন 6:31 5ষষ্ঠ দিনে তারা অন্যান্য দিনের চেয়ে দ্বিগুণ রসদ সংগ্রহ করে খাবার প্রস্তুত করে রাখবে।
6মোশি ও হারোণ তখন ইসরায়েলীদের বললেন, আজ সন্ধ্যায় তোমরা জানতে পারবে যে প্রভু পরমেশ্বরই তোমাদের মিশর থেকে মুক্ত করে এনেছেন। 7আর সকালে তোমরা দেখতে পাবে প্রভু পরমেশ্বরের মহিমা। তাঁর বিরুদ্ধে তোমাদের বিক্ষোভের কথা তিনি জানতে পেরেছেন। তোমাদের এই বিক্ষোভ আমাদের বিরুদ্ধে নয়, কারণ আমরা কিছুই নই। 8মোশি আরও বললেন, তোমাদের অভিযোগের জবাবে প্রভু পরমেশ্বর যখন সন্ধ্যায় তোমাদের মাংস খাওয়াবেন এবং সকালে তোমাদের প্রাণভরে রুটি খাওয়াবেন তখন তোমরা একথা বুঝতে পারবে। আমরা কেউ নই, তোমাদের এই বিক্ষোভ আমাদের বিরুদ্ধে নয়, স্বয়ং প্রভু পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে।
9হারোণের মাধ্যমে মোশি সমগ্র ইসরায়েলী সমাজকে নির্দেশ দিলেন, তোমরা সকলে প্রভু পরমেশ্বরের সম্মুখে এস, তিনি তোমাদের অভিযোগ শুনেছেন। 10হারোণের কথা শোনার সময় ইসরায়েলীরা সকলে প্রান্তরের দিকে তাকাল। সেখানে হঠাৎ মেঘপুঞ্জের মধ্য থেকে প্রভু পরমেশ্বরের প্রতাপ দৃশ্যমান হল। 11প্রভু মোশিকে বললেন, 12আমি ইসরায়েলীদের অভিযোগ শুনেছি। তাদের তুমি বল, আজ সন্ধ্যায় তারা মাংস খেতে পাবে আর কাল সকালে তারা যত ইচ্ছা রুটি পাবে। তখন তোমরা জানবে যে আমি, প্রভু পরমেশ্বরই তোমাদের আরাধ্য ঈশ্বর।
13সেই দিন সন্ধ্যায় ঝাঁকে ঝাঁকে তিতির পাখী উড়ে এসে ইসরায়েলীদের শিবির ছেয়ে ফেলল, আর সকালে শিবিরের চারিদিকে শিশিরপাত হল। 14শিশির শুকিয়ে গেলে দেখা গেল প্রান্তরে সূক্ষ্ম তুষারকণার মত এক ধরণের জিনিস পড়ে রয়েছে। 15ইসরায়েলীরা সেগুলি দেখে বলাবলি করতে লাগল, এগুলি কি? মোশি তাদের বললেন, এই সেই ঈশ্বর-দত্ত খাদ্য।১ করি 10:3 16এ সম্পর্কে প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশ এই: তোমাদের প্রত্যেকের খোরাক মাথা পিছু এক ওমের হিসেবে নিজেদের পরিবারের জন্য এই জিনিস কুড়িয়ে নেবে।  

17ইসরায়েলীরা তা-ই করল। তাদের কেউ বা কিছু বেশী কেউ বা কিছু কম সংগ্রহ করল, 18কিন্তু ওমেরের মাপে হিসেব করার পর দেখা গেল যারা বেশী কুড়িয়েছিল তাদের উদ্বৃত্ত কিছু হল না এবং যারা কম কুড়িয়েছিল তাদেরও কিছু কম পড়ল না। যার যতটা প্রয়োজন তার সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়াল তা-ই।২ করি 8:15 19মোশি তাদের বললেন, আগামী কাল পর্যন্ত তোমরা কেউ এর কিছুই বাকী রাখবে না। 20কেউ কেউ মোশির কথা না শুনে পরের দিন পর্যন্ত ঐ খাদ্যের কিছুটা রেখে দিল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, তাতে পোকা ধরেছে এবং দুর্গন্ধ হয়েছে। মোশি তাদের উপর খুব রাগ করলেন।
21এরপর থেকে তারা প্রতিদিন সকালে যার যেমন প্রয়োজন সেই পরিমাণ খাদ্যই সংগ্রহ করত। রোদের তাপ বেড়ে গেলে সেই খাদ্য গলে যেত। 22ষষ্ঠ দিনে তারা জনপিছু দুই ওমের হিসেবে দ্বিগুণ পরিমাণ খাদ্য সংগ্রহ করল। ইসরায়েলী সমাজের প্রবীণেরা এসে মোশিকে সে কথা জানালেন। 23মোশি তাদের বললেন, প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশ হচ্ছে এই: আগামীকাল কর্মবিরতির দিন, প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে পালনীয় পবিত্র বিশ্রাম দিন। অতএব আজ তোমরা রুটি তরকারী যা দরকার তৈরী করে নাও। আজকের উদ্বৃত্ত যা থাকবে তা আগামীকালের জন্য রেখে দেবে।যাত্রা 20:8-11
24মোশির নির্দেশ মত তারা সেদিনের উদ্বৃত্ত খাদ্য পরের দিনের জন্য রেখে দিল, কিন্তু তাতে দুর্গন্ধ হল না বা পোকা ধরল না। 25মোশি বললেন, আজ তোমরা এগুলি খাও কারণ আজ প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশিত বিশ্রাম দিন। আজকে তোমরা প্রান্তরে কোন খাদ্য পাবে না। 26ছয়দিন তোমরা খাদ্য সংগ্রহ করতে পারবে, কিন্তু সপ্তম দিনে অর্থাৎ বিশ্রামদিনে তোমরা কিছুই পাবে না।
27তবুও সপ্তম দিনে কিছু লোক খাদ্য সংগ্রহ করতে প্রান্তরে বেরিয়ে গেল, কিন্তু তারা কিছুই পেল না। 28প্রভু পরমেশ্বর তখন মোশিকে বললেন, আর কতকাল তোমরা আমার নির্দেশ অমান্য করে চলবে? 29মনে রেখ, আমি, প্রভু পরমেশ্বরই তোমাদের জন্য বিশ্রামদিন নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। সেইজন্যই আমি ষষ্ঠ দিনে দুদিনের খাদ্য দিয়ে থাকি। সপ্তম দিনে যে যেখানে আছে সেখানেই থাকবে, ঘর থেকে কেউ বার হবে না। 30তাই এরপর থেকে ইসরায়েলীরা সপ্তম দিনে কোন কাজ করত না।

31ইসরায়েলীরা সেই খাদ্যের নাম দিল মান্না16:31 মান্না: ‘এটি কি?’ এই প্রশ্নসূচক কখাটির হিব্রু শব্দ ‘মান্না’।। এগুলি সাদা, ধনে বীজের মত এবং এর স্বাদ ছিল মধু দিয়ে তৈরী পিঠের মত।গণনা 11:7-8
32মোশি বললেন, প্রভু পরমেশ্বরের আদেশ: তোমরা একটি পাত্রে এক ওমের পরিমাণ মান্না সংরক্ষণ করে রাখবে তোমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। তারা যেন দেখতে পায়, মিশর থেকে তোমাদের উদ্ধার করে আনার সময় আমি প্রান্তরে তোমাদের কি ধরণের খাদ্য দিয়েছিলাম।
33মোশি হারোণকে বললেন, একটি পাত্রে এক ওমের পরিমাণ মান্না সংগ্রহ করে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য সেটি প্রভু পরমেশ্বরের পীঠস্থানে স্থাপন কর।হিব্রু 9:4 34প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই অনুযায়ী হারোণ সেটি প্রভু পরমেশ্বরের চুক্তিসিন্দুকের সম্মুখে সংরক্ষণ করে রাখলেন 35ইসরায়েলীরা বসতি স্থাপন করার যোগ্য কোন দেশে না পৌঁছান পর্যন্ত চল্লিশ বছর ধরে মান্না খেয়েছিল। কনান দেশের সীমান্তে না পৌঁছান পর্যন্ত মান্নাই ছিল তাদের খাদ্য।যিহো 5:12 36ওমের হচ্ছে এক এফার দশ ভাগের এক ভাগ।
=======================================

ইসরায়েলীদের বিক্ষোভ ও তার দণ্ড
1এক সময় ইসরায়েলীরা তাদের দুঃখকষ্ট সম্পর্কে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে লাগল। তাদের কথা শুনে প্রভু পরমেশ্বরের ক্রোধ প্রজ্বলিত হল। প্রভু পরমেশ্বরের কাছ থেকে অগ্নিশিখা এসে তাদের মধ্যে জ্বলে উঠল এবং তাদের ছাউনির এক প্রান্ত গ্রাস করল। 2লোকেরা তখন মোশির কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করতে লাগল। মোশি প্রভু পরমেশ্বরের কাছে বিনতি জানালেন তখন আগুন প্রশমিত হল। 3এই জন্য সেই স্থানের নাম দেওয়া হল তাবেরা (প্রজ্বলন) কারণ সেখানে প্রভু পরমেশ্বরের অগ্নিশিখা জ্বলে উঠেছিল। 4কিছু বিদেশী লোক তাদের সঙ্গে জুটে গিয়েছিল। তারা লোভাতুর হয়ে উঠল আর ইসরায়েলীরাও আবার কান্নাকাটি করে বলতে লাগল, হায় কে আর এখন আমাদের মাংস খাওয়াবে? 5মিশরে আমরা বিনামূল্যে মাছ খেতে পেতাম। শসা, তরমুজ, কন্দ, পেঁয়াজ ও রসুন পেতাম। সে সব কথা এখন মনে পড়ছে। 6এখন আমরা শুকিয়ে মরছি, একমাত্র মান্না ছাড়া কিছুই চোখে পড়ে না।  
7এই মান্না ছিল ধনে বীজের মত, গুগগুলের মত খয়েরী এর রঙ।যাত্রা 16:31 8লোকে প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে এগুলি সংগ্রহ করত এবং যাঁতায় পিষে বা উদুখলে গুঁড়ো করে হাঁড়িতে সিদ্ধ করত, তারপর তা দিয়ে রুটি তৈরী করত। তার স্বাদ ছিল তেলে ভাজা পিঠের মত। 9রাত্রে তাঁবুর উপর শিশিরের সঙ্গে মান্নাও ঝরে পড়ত।যাত্রা 16:13-15
10মোশি ইসরাযেলীদের কান্নাকাটি শুনতে পেলেন। তারা সপরিবারে ছাউনির মুখে বসে কান্নাকাটি করছিল। এতে প্রভু পরমেশ্বর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন। মোশিও অসন্তুষ্ট হলেন। 11মোশি প্রভুকে বললেন, তুমি কেন তোমার এই দাসকে এই দুদর্শায় ফেলেছ? আমি কিসের জন্য তোমার এত বিরাগভাজন হলাম যার ফলে এই লোকদের বোঝা তুমি আমার উপর চালিয়ে দিয়েছ? 12আমি কি এদের গর্ভে ধারণ করেছি, না প্রসব করেছি যার জন্য তুমি এদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে, সেই দেশে দুগ্ধপোষ্য শিশুর ধাত্রীর মত আমাকে এদের বক্ষে ধারণ করে বয়ে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দিয়েছ?  

13এই লোকদের খাওয়ানোর জন্য মাংস আমি কোথায় পাব? এরা তো আমার কাছে কান্নাকাটি করে বলছে, আমাদের মাংস খেতে দাও। 14একা আমি এই লোকদের বোঝা আর বইতে পারছি না, এই বোঝা আমার পক্ষে গুরুভার। 15এই-ই যদি তোমার উদ্দেশ্য হয় তবে আমাকে এখনই মেরে ফেল। আমার প্রতি যদি তোমার কৃপাদৃষ্টি থাকে তাহলে এমন কর যেন আমাকে এই দুর্ভোগ আর পোহাতে না হয়।  

16তখন প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, ইসরায়েলীদের মধ্যে প্রবীণ ও নেতৃস্থানীয় বলে যাদের তুমি জানো তাদের মধ্য থেকে সত্তর জনকে সংগ্রহ কর এবং সম্মিলন শিবিরের দ্বারে তাদের উপস্থিত কর। তারা সেখানে তোমার সঙ্গে এসে দাঁড়াক। 17আমি সেখানে অবতীর্ণ হয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলব। তোমার উপরে অধিষ্ঠিত আত্মার কিছু অংশ নিয়ে তাদের উপরে অপর্ণ করব। তারা তোমার সঙ্গে একত্রে এই লোকদের ভার বহন করবে। তোমাকে একা আর এদের ভার বহন করতে হবে না। 18আর তুমি লোকদের বল, তোমরা আগামী কালের জন্য নিজেদের শুচিশুদ্ধ কর, তোমাদের মাংস খেতে দেওয়া হবে। কারণ তোমরা প্রভু পরমেশ্বরের কাছে বিলাপ করে বলেছ, হায়, এখানে কে আমাদের মাংস খেতে দেবে, মিশরেই আমরা ভাল ছিলাম। প্রভু পরমেশ্বর তোমাদের মাংস দেবেন,তোমরা যত খুশী খেও। 19একদিন, দুদিন বা পাঁচ, দশ, বিশদিন নয়, 20পুরো এক মাস তোমাদের মাংস খাওয়ানো হবে। যতদিন না সব বমি হয়ে যায় এবং তোমাদের অরুচি ধরে যায়, ততদিন তোমাদের মাংস খাওয়ানো হবে, কারণ যে প্রভু পরমেশ্বর তোমাদের মাঝে অধিষ্ঠান করছেন, তাঁকে তোমরা অগ্রাহ্য করেছ। তাঁর সামনে তোমরা কন্নাকাটি করে বলেছ, হায়, আমরা কেন মিশর ছেড়ে বেরিয়ে এলাম।
21মেশি বললেন, আমি যাদের সঙ্গে আছি তারা সংখ্যায় ছয় লক্ষ পদাতিক। আর তুমি বলছ, পুরো এক মাস ধরে তুমি তাদের মাংস খাওয়াবে। 22এদের পেট ভরানোর জন্য কি তাহলে গরুভেড়ার পাল যা আছে সব মেরে ফেলতে হবে? না সমুদ্রের সব মাছ জোগাড় করতে হবে? 23প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, প্রভু পরমেশ্বরের পরাক্রম কি লোপ পেয়েছে? আমার কথা সত্য কি না তাই আজই দেখতে পাবে।
24মোশি বাইরে এসে জনতার কাছে প্রভু পরমেশ্বরের এই সমস্ত কথা ঘোষণা করলেন এবং ইসরায়েলী প্রবীণদের মধ্য থেকে সত্তর জনকে একত্র করে সম্মিলন শিবিরের চারপাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। 25তখন প্রভু পরমেশ্বর মেঘপুঞ্জে অবতীর্ণ হয়ে মোশির সঙ্গে কথা বললেন এবং যে আত্মা মোশির উপরে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তাঁর কিছু অংশ সেই সত্তর জন প্রবীণের উপর অপর্ণ করলেন। সেই আত্মা তাঁদের উপর অধিষ্ঠিত হলে তাঁরা আত্মায় আবিষ্ট হয়ে কথা বলতে লাগলেন। কিন্তু তার পুনরাবৃত্তি আর হল না। 26দুই জন লোক নিজেদের ছাউনির মধ্যেই ছিলেন। তাঁদের একজনের নাম ইলদদ্ আর একজনের নাম মেদদ। তাঁদেরও উপরেও আত্মা অধিষ্ঠিত হলেন। তাঁরা ঐ তালিকাভুক্ত লোকদের মধ্যে থাকলেও সম্মিলন শিবিরের কাছে যান নি। তাঁরা নিজেদের ছাউনিতেই ভাবাবিষ্ট হয়ে কথা বলতে লাগলেন। 27তখন একটি যুবক দৌড়ে মোশির কাছে গিযে বলল, ইলদদ্ ও মেদদ তাঁদের ছাউনির মধ্যে ভাবাবিষ্ট হয়ে কথা বলছেন। 28একথা শুনে নুনের পুত্র যিহোশূয়, যিনি বাল্যকাল থেকেই ছিলেন মোশির সহকারী, বলে উঠলেন, মহাশয় আপনি ওদের নিষেধ করুন। 29কিন্তু মোশি তাঁকে বললেন, তুমি কি আমার স্বার্থে ওদের ঈর্ষা করছ? অামি চাই প্রভু পরমেশ্বরের সব প্রজাই নবী হোক, প্রভু যেন তাঁর আত্মা তাদের সকলের উপরেই অর্পণ করেন। 30পরে মোশি ও ইসরায়েলী প্রবীণেরা তাঁদের ছাউনিতে চলে গেলেন।
31তখন প্রভু পরমেশ্বরের কাছ থেকে নির্গত এক বায়ুপ্রবাহ সমুদ্র থেকে ভারুই পাখির ঝাঁক উড়িয়ে এনে ছাউনির উপরে ফেলল। ছাউনির দুই ধারে একদিনের পথ পর্যন্ত মাটি থেকে প্রায় দুহাত উঁচু হয়ে পাখিগুলি পড়ে রইল। 32আর লোকেরা সারাদিন ও সারা রাত এবং তার পরের দিনও সারা দিন ভারুই পাখি কুড়াতে লাগল। যারা সবচেয়ে কম কুড়িয়েছিল তাদেরও সংগ্রহের পরিমাণ ছিল প্রায় দশ হোমর। ছাউনির চারিদিকে তারা সেগুলি ছড়িয়ে রাখল। 33কিন্তু সেই মাংস মুখে দিয়ে চিবানোর আগেই প্রভু পরমেশ্বরের ক্রোধ ইসরায়েলীদের বিরুদ্ধে প্রজ্বলিত হয়ে উঠল। প্রভু পরমেশ্বর তাদের মহামারীর দ্বারা আঘাত করলেন। 34এই কারণে সেই স্থানের নাম দেওয়া হল কিবরোৎ-হত্তাবা (লোভের কবর) কেননা সেইখানে তারা লোভী লোকগুলোকে কবর দিয়েছিল। 35কিবরোৎ-হত্তাবা থেকে ইসরায়েলীরা যাত্রা করে হাৎসেরোৎ-এ গিয়ে পৌঁছাল এবং সেখানেই অবস্থিতি করল।

=======================================

গিলগলে তারণোৎসব
1জর্ডনের পশ্চিমতীরবাসী ইমোরীদের রাজারা এবং সমুদ্রের নিকটবর্তী কনানীদের রাজারা যখন শুনতে পেলেন যে ইসরায়েলীরা নদী পার না হওয়া পর্যন্ত প্রভু পরমেশ্বর তাদের সামনে জর্ডনের জল শুকিয়ে ফেলেছিলেন তখন তাঁরা সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলেন। ইসরায়েলীদের সামনে দাঁড়াবার সাহস তাঁদের হল না।
2প্রভু পরমেশ্বর এই সময়ে যিহোশূয়কে বললেন, তুমি চকমকি পাথরের ছুরি তৈরী করে ইসরায়েলীদের দ্বিতীয় বার সুন্নত করাও। 3যিহোশূয় চকমকি পাথরের ছুরি তৈরী করে অগ্রত্বক্‌ পর্বত5:3 অগ্রত্বক পর্বত- হিব্রু : গিবিয়া- হাআরালোৎ-এর কাছে ইসরায়েলী পুরুষদের সুন্নত সংস্কার করালেন। 4যিহোশূয় তাদের সুন্নত সংস্কার করালেন এই জন্য যে মিশর থেকে যুদ্ধ করতে সক্ষম যে সব পুরুষ বেরিয়ে এসেছিল তারা আসার পথে প্রান্তরে থাকতেই মারা গিয়েছিল। 5তাদের সকলেরই সুন্নত সংস্কার হয়েছিল, কিন্তু মিশর ত্যাগ করার পর যাত্রাপতে প্রান্তরে যাদের জন্ম হয়েছিল তাদের কারও সু্ন্নত সংস্কার পালন করা হয় নি। 6যে সব যোদ্ধা মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিল তারা প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশ অমান্য করায় তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলীরা চল্লিশ বছর প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছিল। কারণ সুজলা শুফলা যে দেশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রভু পরমেশ্বর তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে দিয়েছিলেন সেই দেশ তিনি তাদের কাউকে দেখতে দেবেন না বলে শপথ করেছিলেন।গণনা 14:28-35 7তাদের পরিবর্তে তাদের যে সন্তানসন্ততিদের তিনি লালন-পালন করছিলেন যিহোশূয় তাদেরই সুন্নত করিয়েছিলেন, কারণ যাত্রাপথে তাদের সুন্নত করা হয় নি। 8সমগ্র জাতির সুন্নতকরণ সম্পন্ন হওয়ার পর সকলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত যে যার নিজের শিবিরেই রইল। 9প্রভু পরমেশ্বর তখন যিহোশূয়কে বললেন, মিশরীদের দেওয়া যে কলঙ্ক তোমাদের ছিল তা আমি আজ অপসারণ করলাম। সেই জন্যই ঐ জায়গাটি আজও গিল্‌গল5:9 অর্থ : অপসারণ নামে পরিচিত।
10ইসরায়েলীরা গিল্‌গলে শিবির স্থাপন করল এবং সেই মাসের চৌদ্দ তারিখে সন্ধ্যায় যিরিহো উপত্যকায় তারণোত্সব পালন করল।যাত্রা 12:1-13 11তারণোৎসবের পরের দিন তারা সেই দেশে উৎপন্ন শস্যের তৈরী খামিরবিহীন রুটি ও ভাজা শস্য ভোজন করল।  
12প্রথম যে দিন তারা সেই দেশের উত্পন্ন শস্য আহার করল, সেই দিন থেকেই মান্না বর্ষণ বন্ধ হয়ে গেল। সেই বছর থেকে তারা কনান দেশের উত্পন্ন ফসল ভোগ করতে শুরু করল।যাত্রা 16:35

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...