যিহোশূয় ১৭: ১৬ , বিচারকর্তৃগণ ১: ১৯, ৪: ২-৩

যিহোশূয় ১৭: ১৬

ইফ্রয়িম ও মনঃশি গোষ্ঠীর জন্য অতিরিক্ত এলাকা
 
14যোষেফের বংশধরেরা যিহোশূয়ের কাছে দাবী জানাল: কেন আপনি উত্তরাধিকারস্বরূপ আমাদের মাত্র একটি এলাকা দিলেন? প্রভুর আশীর্বাদে আমাদের জনসংখ্যা এখন বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। 15যিহোশূয় তাদের বললেন, তোমাদের জনসংখ্যা যদি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে তাহলে তোমরা বনাঞ্চলে পরিষী ও রাফায়িমদের এলাকায় চলে যাও এবং সেখানে বন কেটে বসতি কর কারণ ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চল তোমাদের পক্ষে অপরিসর।  
 
16যোষেফের বংশধরেরা বলল, এই পার্বত্য এলাকা আমাদের পক্ষে যথেষ্ট নয়, তা ছাড়া যে সব কনানী ঐ উপত্যকায়, বিশেষ করে বেথ-শেয়ান ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ও যিষ্‌রিয়েল উপত্যকায় বাস করে, তাদের লোহার রথ আছে। 
 
 17যিহোশূয় যোষেফের বংশধরদের অর্থাৎ ইফ্রয়িম ও মনঃশি গোষ্ঠীর লোকদের বললেন, তোমরা বড় গোষ্ঠী, তোমাদের শক্তি-সামর্থ্যও প্রচুর, তোমরা শুধু এক অংশ পাবে না, 18পার্বত্য অঞ্চলও তোমাদের হবে, এ অঞ্চল বনময় হলেও বন কেটে পরিষ্কার করলে এর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তোমরা দখল করতে পারবে। কনানীদের লোহার রথ ও সৈন্য সামন্ত থাকা সত্ত্বেও তোমরাই তাদের উচ্ছেদ করতে পারবে।
 
===========================
 


যিহুদা ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর জয়লাভ
 
16মোশির শ্বশুর ছিলেন কেনী উপজাতির লোক। তাঁর বংশধরেরা যিহুদা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিয়ে খর্জুরপুর থেকে যিহুদীয়ার অন্তর্গত অরাদের দক্ষিণে মরু এলাকায় চলে গেল এবং সেখানকার লোকদের সঙ্গে বাস করতে লাগল। 17যিহুদা গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের জ্ঞাতি শিমিয়োন গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে সফাৎ-এর অধিবাসী কনানীদের পরাজিত করে তাদের নগরটি নিঃশেষে ধ্বংস করল। নগরটি হর্মা1:17 হর্মা - অর্থ ধ্বংস নামে পরিচিত হল। 
 
 18-19যিহূদা গোষ্ঠী গাজা, আস্‌কেলন অথবা এক্রোণ এবং এই নগরগুলির আশেপাশের সমস্ত এলাকা অধিকার করতে পারেনি। কিন্তু পরমেশ্বর যিহুদা গোষ্ঠীর সহায় ছিলেন বলে তারা পার্বত্য অঞ্চল নিজেদের দখলে আনতে পেরেছিল কিন্তু সমতলের অধিবাসীদের উৎখাত করতে পারল না কারণ তাদের লোহার রথ ছিল।
 
 20মোশির নির্দেশ অনুযায়ী হিব্রোণ অঞ্চল কালেবকে দেওয়া হল। তিনি সেখান থেকে অনাকের তিন পুত্রকে বিতাড়িত করলেন। 21বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকেরা কিন্তু জেরুশালেম থেকে ।যিবুষীদের উচ্ছেদ করল না। সেই জন্যই যিবুষীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে আজও জেরুশালেমে বাস করছে।যিহো 15:63; ২ শমু 5:6; ১ বংশা 11:4
 
==================================
 


জননেত্রী দেবোরা
 
1এহুদের মৃত্যুর পর ইসরায়েলীরা আবার পরমেশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করতে লাগল।  
2তার ফলে তিনি তাদের কনানী নৃপতি যাবীনের হাতে তুলে দিলেন। যাবীনের রাজধানী ছিল হাৎ-সোরে। তাঁর সেনাপতি ছিলেন সিসেরা। তিনি বাস করতেন হারোশেৎ-হাগোয়িমে।  
3তাঁর নশো লোহার রথ ছিল। তিনি ইসরায়েলীদের উপর কুড়ি বছর ধরে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছিলেন। তাই ইসরায়েলীরা প্রভুর চরণে আর্ত আবেদন জানাল।
 
4সেই সময়ে লাপ্পিদোতের স্ত্রী দেবোরা ইসরায়েলীদের বিচার-সালিশী করতেন। তিনি ছিলেন একজন মহিলা নবী। 5ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলে রামা ও বেথেলের মাঝামাঝি এক জায়গায় ‘দেবোরার খেজুর গাছের’ তলায় বসে তিনি বিচার-নিষ্পত্তি করতেন। ইসরায়েলীরা বিচার-সালিশীর জন্য সেখানে তাঁর কাছে যেত।
6একদিন দেবোরা অবিনোয়ামের পুত্র বারাককে কেদেশ-নপ্তালি থেকে ডাকিয়ে এনে বললেন, প্রভু পরমেশ্বর ইসরায়েলীদের আজ্ঞা দিয়েছেনঃ নপ্তালি ও সবুলুন গোষ্ঠীর দশ হাজার লোককে সঙ্গে নিয়ে তাবোর পর্বতে যাও। 7সেখানে আমি কিশোন নদীর তীরে যাবীনের সেনাপতি সিসেরাকে রথ ও সৈন্যসামন্তসহ তোমার সামনে এগিয়ে দেব এবং তাকে তোমার হাতে সমর্পণ করব। 8বারাক দেবোরাকে বললেন, আপনি যদি আমার সঙ্গে যান তবেই আমি যাব। আপনি সঙ্গে না গেলে আমি যাব না। 9দেবোরা বললেন, আমি নিশ্চয়ই তোমার সঙ্গে যাব, তবে এই অভিযানে তোমার কোন সুখ্যাতি হবে না, কারণ প্রভু একজন নারীর হাতে সিসেরাকে সমর্পণ করবেন। দেবোরা তখন বারাকের সঙ্গে কেদেশ-এ চলে গেলেন।
10বারাক নপ্তালী ও সবুলুন গোষ্ঠীর লোকজনকে ডেকে একত্র করলেন। তাদের মধ্যে দশ হাজার লোক তাঁর নেতৃত্বে অভিযান করল। দেবোরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন।
11ইতিমধ্যে কেনী জাতির হিবর নামে একজন সানন্নিমের ওক গাছের কাছে তাঁবু ফেলেছিলেন। ইনি কেনী জাতির অন্যান্য লোকদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চলে এসেছিলেন। এই কেনী জাতি ছিল মোশির শ্বশুরকুলের লোক হোবাবের বংশধর।
12সিসেরা সংবাদ পেলেন যে অবিনোয়ামের পুত্র বারাক তাবোর পর্বতে এসে পড়েছে। 13তিনি তখন হারোশেৎ-হাগোয়িম থেকে তাঁর নয়শো লোহার রথসহ সমস্ত সৈন্যসামন্তকে ও নিজের দলের লোকদের কীশোন নদীর তীরে একত্র করলেন। 14দেবোরা তখন বারাককে বললেন, এবার যাও, আক্রমণ কর। প্রভু আজই তোমার হাতে সিসেরাকে সমর্পণ করবেন। স্বয়ং প্রভু তোমর অগ্রণী হয়ে চলেছেন। তখন বারাক তাঁর দশ হাজার অনুগামীকে নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নেমে এসে তাদের আক্রমণ করলেন। 15বারাক সশস্ত্র আক্রমণে সিসেরাকে তার সমস্ত রথী ও সৈন্যবাহিনীসহ ছত্রভঙ্গ করে দিলেন। সিসেরা রথ ফেলে দৌড়ে পালালেন। 16বারাক তাঁর রথী ও সৈন্যবাহিনীর পিছনে হারোশেৎ-হাগোয়িম পর্যন্ত ধাওয়া করলেন। সিসেরার সমস্ত সৈন্য যুদ্ধে নিহত হল। একটি লোকও বাকী রইল না।
17সিসেরা ছুটতে ছুটতে কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাঁবুর কাছে গিয়ে হাজির হলেন। কারণ হাৎসোরের রাজা যাবীনের সঙ্গে কেনীয় হেবরের কুলের মৈত্রীসম্পর্ক ছিল। 18যায়েল তাঁবু থেকে বেরিয়ে এসে সিসেরার সঙ্গে দেখা করে বললেন, আসুন, আসুন, আমার এখানে আসুন, কোন ভয় নেই। সিসেরা তাঁর সঙ্গে তাঁবুর ভিতরে গেলেন এবং সেই মহিলা একটা কম্বল দিয়ে তাঁকে ঢেকে রাখলেন। 19সিসেরা তাঁকে বললেন, দয়া করে একটু জল দেবেন? আমার খুব পিপাসা পেয়েছে। যায়েল তখন চামড়ার মশক থেকে দুধ ঢেলে এনে তাঁকে খাওয়ালেন। তারপর আবার তাঁকে ঢেকে রাখলেন। 20সিসেরার তাঁকে বললেন, আপনি তাঁবুর দরজায় দাঁড়িয়ে থাকুন। কেউ যদি এসে জিজ্ঞাসা করে, ‘এখানে কেউ আছে কিনা?’— তাহলে বলবেন, ‘না, কেউ নেই’।
21এদিকে যায়েল তাঁবুর একটা খোঁটা জোগাড় করলেন এবং একটা মুগুর হাতে নিয়ে নিঃশব্দে সিসেরা কাছে গেলেন। ক্লান্ত সিসেরা তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। যায়েল খোঁটাটা সিসেরার রগে এমনভাবে মেরে দিলেন যে সেটা মাথা ভেদ করে মাটিতে পুঁতে গেল। সিসেরা মারা গেলেন।
22সিসেরার পিছনে তাড়া করতে করতে বারাক যখন সেখানে এলেন, তখন যায়েল বেরিয়ে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করে বললেন, আসুন, আসুন, আপনি যার খোঁজ করছেন তার সন্ধান আমি দিচ্ছি। বারাক তাঁর সঙ্গে তাঁবুর ভিতরে গিয়ে দেখলেন সিসেরা মরে পড়ে আছেন। তাঁর রগে গোঁজ বেঁধা। এমনি করেই 23কনানী যাবীনকে ঈশ্বর সেদিন ইসরায়েলীদের হাতে পরাজিত করেন।
24ইসরায়েলীরা দিন দিন পরাক্রান্ত হয়ে উঠতে লাগল এবং যাবীনকে ক্রমশঃ কোণঠাসা করে ফেলল এবং এইভাবে তাঁকে শেষ করে দিল।
 
 
 

1 comment:

  1. আল্লাহ মরহুম মাওলানা সাহেবকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম নসিব করুন

    ReplyDelete

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...