প্রশ্ন ১৫ঃ খোজাকৃত পশু তথা খাসি বলদ ইত্যাদি কুরবানী করা কি জায়েজ?

(এক) মানব ইতিহাসে সর্ব প্রথম কোরবানি হল, হযরত আদম আলাইহিস্সালামের দুই পুত্র হাবিল এবং কাবিলের কোরবানী।
পবিত্র কোরআনুল কারিমের ভাষায়
ﻭﺗﻞ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﻧﺒﺎﺍﺑﻨﻰ ﺁﺩﻡ ﺑﺎﻟﺤﻖ،، ﺍﺫﻗﺮﺑﺎ ﻗﺮﺑﺎﻧﺎ ﻓﺘﻘﺒﻞ ﻣﻦ ﺍﺣﺪﻫﻤﺎ ﻭﻣﻦ ﻳﺘﻘﺒﻞ ﻣﻦ ﺍﻻٰﺧﺮ، ﻗﺎﻝ ﻻﻗﺘﻠﻨﻚ، ﻗﺎﻝ ﺍﻧﻤﺎ ﻳﺘﻘﺒﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺘﻘﻴﻦ *
আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত আপনি তাহাদিগকে যথাযত ভাবে শোনিয়ে দিন।
যখন তাহারা উভয়ে কোরবানি করিয়াছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হয়েছিল এবং অন্যজনের কবুল হইলনা। সে (কাবিল) বলিল আমি তোমাকে হত্যা করিবই। অপরজন(হাবিল) বলিল অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকিনদের কোরবানি কবুল করেন।
****পাড়া ৬, সুরা মায়িদা, আয়াত ২৭*****
সংক্ষিপ্ত ঘটনা
_____________
মা হাওয়া আলাইহিস্সালামার গর্ভে হাবিলের সাথে লিওয়া এবং কাবিলের সাথে অ্যাকলিমা জন্ম গ্রহন করেন।
তাই শরীয়ত অনুযায়ী হাবিলের সাথে অ্যাকলিমা এবং কাবিলের সাথে লিওয়ার বিবাহ ঘোষনা করা হল।
শয়তান কাবিলকে ধুকা দিল যে তোমার পিতা তোমার সাথে ইনসাফ করেনাই। তোমার সাথে যে জন্ম নিয়েছে তাকে সুন্দরী হওয়ার কারনে হাবিলের সংঘে বিবাহ দিচ্ছে। এটাতো ইনসাফ নয়।
শয়তানের যুক্তিতে কাবিল বষিভুত হয়ল।
অথপর যখন তারা উভয়েই কোরবানি করল তখন একজনের কবুল হল অন্যজনের হইনি। হাবিল একটি নর পশু দুম্বা কোরবানি করল আর গায়েবি আগুন তাহা উঠিয়ে নিল, আর কাবিল কিছু গম কোরবানি করল (অর্থাৎ আল্লাহর নামে ছেড়ে দিল) কিন্তু তাহা জমিনেই রয়েগেল।
তখন কাবিল হাবিলকে মেরে বললে হাবিল বলেন আল্লাহ মুত্তাকিনদের কোরবানি কবুল করেন।
কিন্তু অবষেশে কাবিল হাবিলকে শহীদ করে দিল।
তাই পৃথিবীতে যদি কেহ অন্যাই ভাবে কাউকে হত্যা করে তার অর্ধেক গুনা কাবিলকেই দেয়া হবে। কারন মানব ইতিহাসে প্রথম সেই খুনী।
শিক্ষা,,, আল্লাহর দেয়া আইনের পরিবর্তন করার পরিনাম শুভনয়।
এবং হাবিলের কোরবানিকৃত পশুটি পাঠা জাতিয় ছিল। খাসি নয়।
(দুই) কোরবানি হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস্সালামের সুন্নাত হাদিস শরীফে রয়েছে ﺳﻨﺔ ﺍﺑﻴﻜﻢ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন (কোরবানি) তোমাদের পিতা ইব্রাহিম আলাইহিস্সালামের সুন্নাত।
সংক্ষিপ্ত ঘটনা
____________
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন,
ﺍﻟﺬﻯ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻤﻮﺕ ﻭﺍﻟﺤﻴﻮﺓ ﻟﻴﺒﻠﻮﻛﻢ ﺍﺣﺴﻦ ﻋﻤﻼ، ﻭﻫﻮ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ﺍﻟﻐﻔﻮﺭ +
যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু এবং জীবন তোমাদীগকে পরিক্ষা করার জন্য– কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী,ক্ষ
মাশীল।
****পাড়া২৯, সুরা মুলক, আয়াত ২****
তিনি আরো বলেন,
ﻭﻟﻨﺒﻮﻧﻜﻢ ﺑﺸﻰﺀ ﻣﻦ ﺍﻟﺨﻮﻑ ﻭﺍﻟﺠﻮﻉ ﻭﻧﻘﺺ ﻣﻦ ﺍﻻﻣﻮﺍﻝ ﻭﺍﻻﻧﻔﺲ ﻭﺍﻟﺜﻤﺮﺕ، ﻭﺑﺸﺮ ﺍﻟﺼﺒﺮﻳﻦ **
আমি তোমাদিগকে কিছু ভয়, কিছু ক্ষুদা,এবং ধনসম্পদ ,জীবন ও ফল ফসলের ক্ষয়ক্ষতির দ্বারা অবশ্যই পরিক্ষা করব, শুভ সংবাদ দিন ধৈর্যশীলদেরকে।
***পারা২, সুরা বাকারা,আয়াত১৫৫*
***
এহেন বিষয় মুমিনগন লক্ষ্য করে দেখুন যে আমাদেরকে আল্লাহর পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে খুবই চিন্তার বিষয়।
একদিন একজন পিতা রাতের গভীরে তার আদরের ছোট মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে, জিজ্ঞাস করলেন মা তুমি কাঁদছ কেন? মেয়েটি বলল বাবা আগামীকাল আমার পরিক্ষা উস্তাদ বলেছেন ফেল করলে আমাকে মারবেন।
পিতা চিন্তিত হলেন, আহারে দুনিয়ার সামান্য পরিক্ষায় ফেল করলে উস্তাদ কিছু হুমকি দিবে,তাও আবার মার্জনাও হতে পারে। আর সে জন্য রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
আর মহিয়ান গরিয়ান আল্লাহ আমাকে পরিক্ষা নিচ্ছেন কিন্তু তার জন্য একটু চিন্তিতও হলামনা। আহারে আমার কঠিন হৃদয়।
*হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস্সালামকে আল্লাহ নিজের জীবন এবং সন্তানের জীবনের দারা পরিক্ষা নিয়েছেন।
হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস্সালাম আল্লাহর আদেশে নিজের স্ত্রী হাজেরা এবং শিশু সন্তান ইসমাঈল আলাইহিস্সামকে নির্জন মরুভুমিতে রেখে আসলেন, শুকনা মরুভুমিতে ইসমাঈল আলাইহিস্সালামের উসিলাই পানি ও ফল ফলাদির ব্যবস্থা হয়ে গেল।
যখন পুত্র ইসমাঈল বাল্য জীবনে পদার্পন করলেন, আল্লাহ তায়ালা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস্সালামকে তার প্রিয় সন্তানকে কোরবানি করার হুকুম দিলেন।
পবিত্র কোরআনের ভাষায়
ﻓﻠﻤﺎ ﺑﻠﻎ ﻣﻌﻪ ﺍﻟﺴﻌﻰ ﻗﺎﻝ ﻳٰﺒﻨﻰ ﺍﻧﻰٓ ﺍﺭٰﻯ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﻨﺎﻡ ﺍﻧﻰٓ ﺍﺫﺑﺤﻚ ﻣﺎﺫﺍ ﺗﺮٰﻯ ،،
অতঃপর সে (ইসমাঈল) যখন তাহার পিতার সাথে কাজ করিবার মত বয়সে উপনীত হইল, তখন ইব্রাহিম বলিল হে বৎস! আমি সপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহ করিতেছি, এখন তোমার অভিমত কি বল?
ﻗﺎﻝ ﻳٰﺎﺑﺖ ﺍﻓﻌﻞ ﻣﺎﺗﺆﻣﺮ ” ﺳﺘﺠﺪﻧﻰٓ ﺍﻧﺸﺎﺀﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﺒﺮﻳﻦ ***
তিনি (ইসমাঈল) বললেন হে আমার পিতা !আপনি যাহা আদিষ্ট হইয়াছেন তাহাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছাই আপনি আমাকে ধৈর্য়শীল রুপে পাবেন।
****পারা২৩, সুরা সাফ্ফাত ، আয়াত১০২***
দেখুন মানব সকল আল্লাহকে রাজি এবং খুশি করার জন্য পিতা আপন হস্তে পুত্রকে কোরবানি করতে সামান্য দিদাবুদ পর্যন্ত করলেন না। পুত্রও কেমন পুত্র দেখুন আল্লাহর খুশিতে আপন পিতার হাতে কোরবান হতে দ্বিধাবুদ করেননি।
তাই আমার প্রাণের মুরশিদ আল্লামা শেরে গাজী আকবর আলী রেজভী রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু বলেন, জান গেলে জান পাওয়া যায়রে ঈমান গেলে আর ঈমান পাওয়া যায়না। যদি দিতে হয় জান তবুও দিবনা ঈমান।
ﻓﻠﻤﺎﺍﺳﻠﻤﺎ ﻭﺗﻠﻪ ﻟﻠﺠﺒﻴﻦ
যখন তাহারা আনুগত্য প্রকাশ করিল (অর্থাৎ পিতা কোরবানী করতে আর পুত্র কোরবানি হইতে) ইব্রাহিম তাহার পুত্রকে কাত করিয়া শুয়াইলেন।
***আয়াত১০৩***
ﻭﻧﺎﺩﻳﻨﻪ ﺍﻥ ﻳٰﺎﺑﺮٰﻫﻴﻢ
তখন আমি তাহাকে আহবান করিলাম, “হে ইব্রাহিম! **আয়াত১০৪**”
ﻗﺪ ﺻﺪﻗﺖ ﺍﻟﺮﺀﻳﺎ،، ﺍﻧﺎ ﻛﺬٰﻟﻚ ﻧﺠﺰﻯ ﺍﻟﻤﺤﺴﻨﻴﻦ
তুমি সপ্নাদেশ সত্যিই পালন করিলে!___
এইভাবেই আমি সতকর্মপরায়নদের পুরস্কৃত করিয়া থাকি।*”””
আয়াত১০৫
ﺍﻥ ﻫﺬﺍ ﻟﻬﻮ ﺍﻟﺒﻠٰﺆﺍ ﺍﻟﻤﺒﻴﻦ **
নিশ্চয়ই ইহা ছিল এক স্পষ্ট পরিক্ষা।
***আয়াত১০৬**
ﻭﻓﺪﻳﻨٰﻪ ﺑﺬﺑﺢ ﻋﻈﻴﻢ
আমি তাহাকে (ইসমাঈলকে) মুক্ত করিলাম (দুম্বা) কোরবানির বিনিময়ে।
**আয়াত ১০৭*”
ﻭﺗﺮﻛﻨﺎ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﻲ ﺍﻻﺧﺮﻳﻦ
আমি ইহা পরবর্তিদের জন্য স্মরণে রাখিয়াছি।
লক্ষ্যনীয় বিষয় , কোরবানি শুধু পশু জবাই আর গুস্ত খাওয়া নয়/ বরং আল্লাহর রাহে নিজের প্রবৃত্তিকে উৎসর্গ করে দেয়ার নামই কোরবানি।
তাই কোরবানি দিতে হবে নিখুত প্রানী। মনের ভাব পুরণ আর গুস্ত খাওয়ার উদ্দেশ্যে যেন তেন একটা কোরবানি দিলেই হবেনা।
পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ বলেন
ﻣﺎ ﺗﺮٰﻯ ﻓﻰ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﻣﻦ ﺗﻔٰﻮﺕ ،،
দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুঁত পাবেনা,
ﻓﺎﺭﺟﻊ ﺍﻟﺒﺼﺮ ﻫﻞ ﺗﺮﻯ ﻣﻦ ﻓﻄﻮﺭ ،،، *
তুমি আবার তাকাইয়া দেখ, কোন ত্রুটি দেখিতে পাও কি?
***পারা২৯, সুরা মুলক, আয়াত৩*”**
এখন যাহারা আল্লাহর নিখুঁত সৃষ্টি পাঠা এবং ষারকে খাসি কিংবা বলদ করেন আপনাদের নিকট আমার প্রশ্ন, আল্লাহর সৃষ্টি পাঠা এবং ষার এর মধ্যে কোন ত্রুটি দেখিতে পেয়েছেন কি?
দেখুন আল্লাহ কি বলেন
ﺛﻢ ﺍﺭﺟﻊ ﺍﻟﺒﺼﺮ ﻛﺮﺗﻴﻦ ﻳﻨﻘﻠﺐ ﺍﻟﻴﻚ ﺧﺎﺳﺄ ﻭﻫﻮ ﺣﺴﻴﺮ ،،،
অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও, সেই দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হইয়া তোমার দিকে ফিরিয়া আসিবে।
***আয়াত৪***
আমার প্রশ্ন যদি তোমরা কোন ত্রুটি দেখাতে না পার, তবে কেন খাসি কর।
এখন আরো কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করছি দেখুন ইসলামে খাঁসি করার অনুমতি আছে কিনা?/
পবিত্র কোরআনুল কারীমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন
ﻟﻌﻨﻪ ﺍﻟﻠﻪ؛ ﻭﻗﺎﻝ ﻻﺗﺨﺬﻥ ﻣﻦ ﻋﺒﺎﺩﻙ ﻧﺼﻴﺐ ﻣﻔﺮﻭﺿﺎ
‏( ١١٧ ‏)
ﻭﻻﺿﻠﻨﻬﻢ ﻭﻻﻣﻨﻴﻨﻬﻢ ﻭﻻﻣﺮﻧﻬﻢ ﻓﻠﻴﻐﻴﺮﻥ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻠﻪ – ﻭﻣﻦ ﻳﺘﺨﺬ ﺍﻟﺸﻴﻄﻦ ﻭﻟﻴﺎ ﻣﻦ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻘﺪ ﺧﺴﺮ ﺧﺴﺮﺍﻧﺎ ﻣﺒﻴﻨﺎ
‏( ١١٩ )
যার উপর আল্লাহ অভিশম্পাত করেছেন এবং সে বলেছে (শয়তান বলেছে )শপথ রইল,
আমি তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে কিছু নির্দিষ্ট অংশ অবশ্যই নেবো ।
তাদেরকে আমার অনুগত করবো!
খাজাইনুল ইরফান ১৯০পৃষ্ঠা .সুরা নিসা, আয়াত ১১৮/টীকা৩০৯
শপথ রইলো, আমি নিশ্চয়ই তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে ছারবো।
এবং নিশ্চয় তাদের মধ্যে বাসনা সৃষ্টি করবো এবং অবিশ্যই তাদেরকে নির্দেশ দিবো ।।
অতঃপর তারা চতুষ্পদ পশুর কর্ণচ্ছেদ করবে, এবং নিশ্চয় তাদেরকে বলবো! অতঃপর তারা আল্লাহর সৃষ্ট বস্তু গুলোকে বিকৃত করবে, এবং যে আল্লাহকে ছেড়ে শয়তান কে বন্ধু রুপে গ্রহণ করেছে সে সুস্পষ্ট ক্ষতির মধ্যে পতিত হয়েছে ॥
টীকা// শয়তান বিভিন্ন ধরনের বাসনা দিবে, কখনো দীর্ঘ জীবনের, কখনো পার্থিব জীবনের, কখনো এটার কখনো ওটার!
খাজাইনুল ইরফান টীকা ৩১০)সুরা নিসা আয়াত ১১৯
টীকা /পুরুষদের নারীদের মতো কর্ণচ্ছেদন করা নারীদের অলংকার পড়ানো, শারী ইত্যাদি পড়া!
টীকা //পাঠাকে খাসি করা, ও ষাড় কে বলদ বানানো
টীকা //খাসির মাঝে যে ক্ষোদ গুলি রয়েছে তাহল! পাঠার পুরুষত্ব আছে খাসিতে তাহা নাই!পাঠার লম্বা চুল হই খাসির মধ্যে তাহা নেই, পাঠার লম্বা শিং থাকে যা খাসিতে নেই, পাঠা বংশ বৃদ্ধি করতে সক্ষম, খাসি তা অক্ষম! এখন আল্লাহ সৃষ্টি করছেন
পাঠা মানুষ তাকে খাসি করে দিল ।অর্থাৎ শয়তানে অনুসারী হল ! কোরবানির পশু হবে নিখুঁত খাসিতে চারটি খুঁত! তাই খাসি বলদ কোরবানি নিষেধ ।
# হাদীস শরীফ দ্বারা খাঁসী করা নিষিদ্ধতার প্রমাণ
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻧﻬﻰ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋﻦ ﺧﺼﺎﺀ ﻝ ﻭﺍﻟﺒﻬﺎﺋﻬﻢ –
ইবনে উমার রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণীত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর হস্তে “মানুষ ও পশুকে খাঁসী করা হতে বিরত করেন।
@@যারা খাঁসী কোরবানী উত্তম বলেন ,তাদের নিকট জিজ্ঞাসা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- আদেশ, নিষেধ মানা জরুরী কিনা? যদি জরুরী হয় তাহলে সবাই যদি এই আদেশ মোবারক গ্রহন করে খাঁসী করা বন্ধ দেওয়া হয়, তাহলে খাঁসী থাকবে কোথায় যে কোরবানি করার। যদি না থাকে তো কি কোরবানী দিবেন?
পূর্বেই বলেছি , রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম , খাসি করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ আইয়ামে জাহেলিয়াতের যোগে খাসি করার প্রবণতা ব্যাপক ছিল। এমনকি মানব শিশুকেও খাসি করা হত। বয়স্করাও সেচ্ছাই খাসি হয়ে যেত।
আল্লাহর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর হস্তে পশু ও মানুষকে খাসি করা থেকে বিরত করেন, নিম্নোক্ত হাদিস শরীফে তাহার প্রমাণ বহন করেন।
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻧﻬﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋﻦ ﺧﺼﺎﺀ ﻝ ﻭﺍﻟﺒﻬﺎﺋﻢ ‏( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺣﻤﺪ )
তারপরও যারা সেচ্ছায় খাসি তথা খোজা হতে চাইতেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে নামাজ এবং রোজার জন্য নির্দেশ দিতেন, খোজা হওয়ার জন্য নয়।
অপর একটি হাদিসে রয়েছ
ﻻﺧﺼﻰ ﻓﻰ ﺍﻻﺳﻼﻡ
ইসলাম ধর্মেই কোন খাসি নেই।
এখন, যাহারা খাসি কোরবানি উত্তম এবং খাসির মাংস সুসাদু বলে বেরাচ্ছেন। আপনাদের নিকট আমার আবারো দুটি প্রশ্ন ক.গোস্ত বেশি সুসাদু হলেইকি কোরবানি উত্তম হবে?
তাহলেতো মানুষের গুস্ত আরো বেশি সাদ হতে পারে ।
খ. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে খাসি করা নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন, সেখানে কার কথা আমরা মানব আপনাদের নাকি রাসুলের। (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
ﻛﻞ ﻣﺎ ﺟﻌﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﺎﻣﻼ ﺑﻔﻄﺮﺗﻪ ﻓﺠﻌﻞ ﺍﻻﻧﺴﺎﻥ ﻧﺎﻗﺼﺎ ﺑﺴﻮﺀ ﺗﺪﺑﻴﺮﻩ
আল্লাহ পাক যে সকল জীবকে সৃষ্টগত দিক থেকে পূর্নাঙ্গ করেছেন, মানুষ তাহা ﺳﻮﺀ ﺗﺪﺑﻴﺮﻩ অর্থাৎ হীন কৌশলে অপূর্ণাঙ্গ ঘঠাচ্ছে।
হাদীস শরীফে রয়েছে
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻭﻛﻴﻊ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻗﺎﻝ ﻧﻬﻰ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋﻦ ﺇﺧﺼﺎﺀ ﺍﻟﺨﻴﻞ ﻭﺍﻟﺒﻬﺎﺋﻢ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻓﻴﻬﺎ ﻧﻤﺎﺀ ﺍﻟﺨﻠﻖ
ইবনে উমার হইতে বর্ণীত তিনি বলেন রসুলে আকরাম সাল্লাম ঘোড়া ও অন্যান্য প্রানী… খাসী করতে নিষেধ করেছেন…..এবং ইবনে উমার বলেন ইহাতে শৃষ্টির বংশ বৃদ্ধি আছে….
***মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৪৭৫৫
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস নং-৪৭৯০
মাজমাউজ জাওয়াইদ, হাদীস নং-৯৩৬৭***
উপরোক্ত হাদিস শরীফের দ্বারা স্পষ্ট প্রমানিত হয় রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়া সহ সমস্ত প্রানীকেই খাসি করতে নিষেধ করেছেন যাতে করে তাদের বংশ বৃদ্ধি পায়। আর মানুষ তাকে খাসি করে বংস বৃদ্ধির ক্ষমতা হতে বঞ্চিত করে। ফলে পশুর মূল্যও বৃদ্ধি পায় এবং গরীবের জন্য কোরবানি করা দুরস্কর হয়ে পরে।
@@@ যারা খাসি কোরবানি উত্তম বলেন তাদের দলিল এবং নিচে তাহার খন্ডন করা হরা হল।
@@@
কিছু হাদীসের মাধ্যমে তা লক্ষ করি খাসী করা জানওয়ার কুরাবানীর জন্য রসুলও ব্যাবহার করতেন….
ﺑَﺎﺏُ ﻣَﺎ ﻳُﺴْﺘَﺤَﺐُّ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻀَّﺤَﺎﻳَﺎ
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢُ ﺑْﻦُ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺍﻟﺮَّﺍﺯِﻱُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋِﻴﺴَﻰ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺇِﺳْﺤَﺎﻕَ، ﻋَﻦْ ﻳَﺰِﻳﺪَ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺣَﺒِﻴﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻋَﻴَّﺎﺵٍ، ﻋَﻦْ ﺟَﺎﺑِﺮِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺫَﺑَﺢَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺬَّﺑْﺢِ ﻛَﺒْﺸَﻴْﻦِ ﺃَﻗْﺮَﻧَﻴْﻦِ ﺃَﻣْﻠَﺤَﻴْﻦِ ﻣُﻮﺟَﺄَﻳْﻦِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻭَﺟَّﻬَﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﻭَﺟَّﻬْﺖُ ﻭَﺟْﻬِﻲَ ﻟِﻠَّﺬِﻱ ﻓَﻄَﺮَ ﺍﻟﺴَّﻤَﻮَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽَ ﻋَﻠَﻰ ﻣِﻠَّﺔِ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﺣَﻨِﻴﻔًﺎ، ﻭَﻣَﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ، ﺇِﻥَّ ﺻَﻠَﺎﺗِﻲ ﻭَﻧُﺴُﻜِﻲ ﻭَﻣَﺤْﻴَﺎﻱَ ﻭَﻣَﻤَﺎﺗِﻲ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ﻟَﺎ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻭَﺑِﺬَﻟِﻚَ ﺃُﻣِﺮْﺕُ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻣِﻨْﻚَ ﻭَﻟَﻚَ، ﻭَﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺃُﻣَّﺘِﻪِ ﺑِﺎﺳْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮُ ﺛُﻢَّ ﺫَﺑَﺢَ
– জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন দু’টি ধূসর বর্ণের লম্বা শিংবিশিষ্ট খাসী করা ভেড়া যবাহ করেন…তিনি ভেড়া দু’টিকে কিবলাহমুখী করে শুইয়ে বলেনঃ ইন্নি ওয়াজহাতু ওয়াজহি লিললাযি ফত্বারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা আলা মিলাতি ইব্রাহীমা হানিফাও, ওয়ামা আনা মিন মুশরেকিন… ইন্না স্বলাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহিয়ায়ি ওয়া মামাতি লিল্লাহি রব্বিল আলামিন লা শারিকা লাহু ওয়াবি যালিকা উমিরতো ওয়া আনা আওয়ালুল মুসলেমিন… আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাক ওয়া আন মুহাম্মাদিন ওয়া উম্মাতিহি অতঃপর তিনি বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে যবাহ করেন…
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৭৯৫
মিস্কাত সরিফ.. হাদীস নং-১৪৬
ﻗﺎﻝ : ﺍﻟﺨﻄﺎﺑﻲ ﺍﻟﻤﻮﺟﻮﺀ – ﻳﻌﻨﻲ ﺑﻀﻢ ﺍﻟﺠﻴﻢ ﻭﺑﺎﻟﻬﻤﺰ – ﻣﻨﺰﻭﻉ ﺍﻷﻧﺜﻴﻴﻦ ، ﻭﺍﻟﻮﺟﺎﺀ ﺍﻟﺨﺼﺎﺀ ، ﻭﻓﻴﻪ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﺨﺼﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﻀﺤﻴﺔ ، ﻭﻗﺪ ﻛﺮﻫﻪ ﺑﻌﺾ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﻟﻨﻘﺺ ﺍﻟﻌﻀﻮ ، ﻟﻜﻦ ﻟﻴﺲ ﻫﺬﺍ ﻋﻴﺒﺎ ﻷﻥ ﺍﻟﺨﺼﺎﺀ ﻳﻔﻴﺪ
ﺍﻟﻠﺤﻢ ﻃﻴﺒﺎ ﻭﻳﻨﻔﻲ ﻋﻨﻪ ﺍﻟﺰﻫﻮﻣﺔ ﻭﺳﻮﺀ ﺍﻟﺮﺍﺋﺤﺔ
খাত্তাবী বলেন মওজুউন অর্থাৎ হামযাকে জিমের সঙ্গে সং্যুক্ত করা হয়েছে …অণ্ডকোষ কেটে বার করা হয়েছ বা পুরুষত্বহীন বানানো হয়েছে ….এবং খাসী করা হয়েছে.. এবং ইহাতে খাসী কুরবানী জাওয়ায়েযের প্রমান আছে…. যদিও কিছু আহলে ইল্ম বাহ্যিক দৃষ্টিতে খাসীর মধ্যে ত্রুটি দেখে খাসী কুরবানী করা অপছন্দ করেন… কিন্তু ঐ বাহ্যিক ত্রুটি (শরিয়াতের দৃষ্টিত) কোন আইবের মধ্যে গন্য নয় কেননা খাসীর মাংস অত্যাধিক সুস্বাদু এবং দুর্গন্ধ মুক্ত এবং এর দ্বারা গরীব মিস্কিন উপকৃত হয়…..
আওনুল মাবুদ, শরহে আবু দাউদ,খন্ড-৭, পৃষ্ঠা-৪৯৬
মওজুয়াইন শব্দের ব্যক্ষার আলোকে বোঝা গেলো রসুলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও খাসী করা জানোয়ার কুরবানী করেছেন….. খাসী করা জানোয়ার কুরবানী করা যায়েজ এবং যেহেতু এতে গরীব মিস্কিন উপকৃত হয় তাই ইহা বরং উত্তম গন্ধ যুক্ত মাংসের জানওয়ার কুরবানী করার চেয়ে….যাইহোক খাসী কুরবানী করা যায়েজ তার দলিল হিসাবে কিছু আরো হাদীস লক্ষ করুন….
ﺑَﺎﺏ ﺃَﺿَﺎﺣِﻲِّ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻳَﺤْﻴَﻰ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺯَّﺍﻕِ، ﺃَﻧْﺒَﺄَﻧَﺎ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ ﺍﻟﺜَّﻮْﺭِﻱُّ، ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻘِﻴﻞٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻠَﻤَﺔَ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ، ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ـ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ـ ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺃَﻥْ ﻳُﻀَﺤِّﻲَ ﺍﺷْﺘَﺮَﻯ ﻛَﺒْﺸَﻴْﻦِ ﻋَﻈِﻴﻤَﻴْﻦِ ﺳَﻤِﻴﻨَﻴْﻦِ ﺃَﻗْﺮَﻧَﻴْﻦِ ﺃَﻣْﻠَﺤَﻴْﻦِ ﻣَﻮْﺟُﻮﺀَﻳْﻦِ ﻓَﺬَﺑَﺢَ ﺃَﺣَﺪَﻫُﻤَﺎ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻪِ ﻟِﻤَﻦْ ﺷَﻬِﺪَ ﻟِﻠَّﻪِ ﺑِﺎﻟﺘَّﻮْﺣِﻴﺪِ ﻭَﺷَﻬِﺪَ ﻟَﻪُ ﺑِﺎﻟْﺒَﻼَﻍِ ﻭَﺫَﺑَﺢَ ﺍﻵﺧَﺮَ ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻋَﻦْ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ـ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ـ
আয়েশা (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) ও আবূ হুরায়রা (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর ইচ্ছা করলে দু’টি মোটাতাজা, মাংসল, শিংযুক্ত, ধুসর বর্ণের ও ছিন্নমুষ্ক খাসী করা ভেড়া ক্রয় করতেন অতঃপর এর একটি নিজ উম্মাতের যারা আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেয় এবং তাঁর নবুয়াতের সাক্ষ্য দেয় তাদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে কোরবানী করতেন।
ইবনে মাজাহ,খন্ড-৩,হাদীস নং-৩১২২
 ৷৷৷ মূল পোস্ট এর লিংক ৷৷    

প্রশ্ন ১৩ : ব্যাভিচারী বিয়ে জায়েজ কি?

আসিফ----10.12.2018 তারিখে প্রশ্ন করেছেন

শিরোনাম: ব্যাভিচারী বিয়ে জায়েজ কি?

প্রশ্ন-বিস্তারিত:

তওবা বা হদের পর ব্যাভিচারী বিয়ে করা জায়েজ কি? ব্যভিচার করেছে এমন স্ত্রী রাখা জায়েজ কি? সরাসরি তাদের বিয়ে পবিত্র মুসলিমের সাথে জায়েজ এমন কোন হাদীস বা কুরআনের আয়াত থাকলে বলবেন। কোন মুফতির ফতোয়া বা তওবা করেছে এজন্য এমন কোন যুক্তি দিবেন না। হ্যা তবে, তওবা করেছে এবং বিয়ে করা জায়েজ এমন কোন সরাসরি হাদীস বা আয়াত থাকলে বা কোন হাদীসের ঘটনা এ সম্পর্কে থাকলে বলবেন।

উত্তরঃঃ

তারিখ: 11-12-18       সময়: 02-08

24-নং সুরা-সুরা: আন্-নূর
আয়াত নং :-3
টিকা নং:5,

الزَّانِى لَا يَنكِحُ إِلَّا زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً وَالزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَآ إِلَّا زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ ۚ وَحُرِّمَ ذٰلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ

ব্যভিচারী যেন ব্যভিচারিনী বা মুশরিক নারী ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে এবং ব্যভিচারিনীকে যেন ব্যভিচারী বা মুশরিক ছাড়া আর কেউ বিয়ে না করে। আর এটা হারাম করে দেয়া হয়েছে মু’মিনদের জন্য।৫

তাফসীর :

টিকা:৫) অর্থাৎ অ-তাওবাকারী ব্যভিচারীর জন্য ব্যভিচারিণীই উপযোগী অথবা মুশরিক নারী। কোন সৎ মু’মিন নারীর জন্য সে মোটেই উপযোগী পুরুষ নয়। আর মু’মিনদের জন্য জেনে বুঝে নিজেদের মেয়েদেরকে এ ধরনের অসচ্চরিত্র লোকদের হাতে সোপর্দ করা হারাম। এভাবে যিনাকারীনী (অ-তাওবাকারী) মেয়েদের জন্য তাদেরই মতো যিনাকারীরা অথবা মুশরিকরাই উপযোগী। সৎ মু’মিনদের জন্য তারা মোটেই উপযোগী নয়। যেসব নারীর চরিত্রহীনতার কথা মু’মিনরা জানে তাদেরকে বিয়ে করা তাদের জন্য হারাম। যে সমস্ত পুরুষ ও নারী তাদের চরিত্রহীনতার পথে গা ভাসিয়ে দিয়েছে একমাত্র তাদের জন্য এ নিয়ম প্রযোজ্য। তবে যারা তাওবা করে নিজেদের সংশোধন করে নিয়েছে তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়। কারণ তাওবা ও সংশোধনের পর “যিনাকারী” হবার দোষ আর তাদের জন্য প্রযুক্ত হয় না। যিনাকারীর সাথে বিয়ে হারাম হবার অর্থ ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল এ নিয়েছেন যে, আদতে তার সাথে বিয়ে অনুষ্ঠিতই হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে সঠিক কথা হচ্ছে, এর অর্থ নিছক নিষেধাজ্ঞা ছাড়া আর কিছুই নয়। এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করে যদি কেউ বিয়ে করে তাহলে আইনগতভাবে তা বিয়েই হবে না এবং এ বিয়ে সত্ত্বেও উভয় পক্ষকে যিনাকারী গণ্য করতে হবে একথা ঠিক নয়। নবী ﷺ একটি সার্বজনীন নিয়ম হিসেবে বলেনঃ الحرام لايحرم الحلال “হারাম হালালকে হারাম করে দেয় না।” (তাবারানী ও দারুকুতনী) অর্থাৎ একটি বেআইনী কাজ অন্য একটি আইনসঙ্গত কাজকে বেআইনী করে দেয় না। কাজেই কোন ব্যক্তির যিনা করার কারণে সে যদি বিয়েও করে তাহলে তা তাকে যিনায় পরিণত করে দিতে পারে না এবং বিবাহ চুক্তির দ্বিতীয় পক্ষ যে ব্যভিচারী নয় সেও ব্যভিচারী গণ্য হবে না। নীতিগতভাবে বিদ্রোহ ছাড়া কোন অপরাধ এমন নেই, যা অপরাধ সম্পাদনকারীকে নিষিদ্ধ ব্যক্তিতে (Outlaw) পরিণত করে। যার পরে তার কোন কাজই আইনসঙ্গত হতে পারে না। এ বিষয়টি সামনে রেখে যদি আয়াত সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা যায়, তাহলে আসল উদ্দেশ্য পরিষ্কারভাবে এই মনে হয় যে, যাদের ব্যভিচারী চরিত্র জনসমক্ষে পরিচিত তাদেরকে বিয়ে করার জন্য নির্বাচিত করা একটি গোনাহর কাজ। মু’মিনদের এ গোনাহ থেকে দূরে থাকা উচিত। কারণ এর মাধ্যমে ব্যভিচারীদের হিম্মত বাড়িয়ে দেয়া হয়। অথচ শরীয়াত তাদেরকে সমাজের অবাঞ্ছিত ও ঘৃণ্য জীব গণ্য করতে চায়।

অনুরূপভাবে এ আয়াত থেকে এ সিদ্ধান্তও টানা যায় না যে, যিনাকারী মুসলিম পুরুষের বিয়ে মুশরিক নারীর সাথে এবং যিনাকারীনী মুসলিম নারীর বিয়ে মুশরিক পুরুষের সাথে সঠিক হবে। আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে একথা বলা যে, যিনা একটি চরম নিকৃষ্ট কুকর্ম। যে ব্যক্তি মুসলমান হয়েও এ কাজ করে সে মুসলিম সমাজের সৎ ও পাক-পবিত্র লোকদের সাথে আত্মীয় সম্পর্ক গড়ে তোলার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। তার নিজের মতো যিনাকারীদের সাথেই আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত অথবা মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত, যারা আদৌ আল্লাহর বিধানের প্রতি বিশ্বাসই রাখে না।

এ প্রসঙ্গে নবী ﷺ থেকে যেসব হাদীস উদ্ধৃত হয়েছে সেগুলোই আসলে আয়াতের সঠিক অর্থ প্রকাশ করে। মুসনাদে আহমাদ ও নাসাঈতে আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আসের (রাঃ) রেওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, উম্মে মাহ্যাওল নামে একটি মেয়ে পতিতাবৃত্তি অবলম্বন করেছিল। এক মুসলমান তাকে বিয়ে করতে চায় এবং এজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে অনুমতি চায়। তিনি নিষেধ করে এ আয়াতটি পড়েন। তিরমিযী ও আবু দাউদে বলা হয়েছে, মারসাদ ইবনে আবি মারসাদ একজন সাহাবী ছিলেন। জাহেলী যুগে মক্কার ঈনাক নামক এক ব্যভিচারিণীর সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। পরে তিনি তাকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেন এবং রসূলুল্লাহর ﷺ কাছে অনুমতি চান। দু’বার জিজ্ঞেস করার পরও তিনি নীরব থাকেন। আবার তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করেন, এবার তিনি জবাব দেনঃ يا مرثد الزَّانِى لاَ يَنْكِحُ إِلاَّ زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً فلاَ يَنْكِحُهَا “হে মারসাদ! ব্যভিচারী এক ব্যভিচারিণী বা মুশরিক নারী ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবে না, কাজেই তাকে বিয়ে করো না।” এছাড়াও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) ও হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকেও বিভিন্ন হাদীস উদ্ধৃত হয়েছে। সেগুলোতে বলা হয়েছে, নবী ﷺ বলেছেনঃ “কোন দাইয়ুস (অর্থাৎ যে ব্যক্তি জানে তার স্ত্রী ব্যভীচারিনী এবং এরপরও সে তার স্বামী থাকে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে না।” (আহমাদ, নাসাঈ, আবু দাউদ) প্রথম দুই খলীফা হযরত আবু বকর (রাঃ) ও হযরত উমর (রাঃ) উভয়ই এ ব্যাপারে যে পদ্ধতি অবলম্বন করেন তা ছিল এই যে, তাঁদের আমলে যে অবিবাহিত পুরুষ ও নারী যিনার অভিযোগে গ্রেফতার হতো তাদেরকে তাঁরা প্রথমে বেত্রাঘাতের শাস্তি দিতেন তারপর তাদেরকেই পরস্পরের সাথে বিয়ে দিয়ে দিতেন। ইবনে উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, একদিন এক ব্যক্তি বড়ই পেরেশান অবস্থায় হযরত আবু বকরের (রাঃ) কাছে আসে। সে এমনভাবে কথা বলতে থাকে যেন তার মুখে কথা ভালভাবে ফুটছিল না। হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত উমরকে (রাঃ) বলেন ওকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে একান্তে জিজ্ঞেস করুন ব্যাপারখানা কি? হযরত উমর (রাঃ) জিজ্ঞেস করতে সে বলে, তাদের বাড়িতে মেহমান হিসেবে এক ব্যক্তি এসেছিল। সে তার মেয়ের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে বসেছে। হযরত উমর (রাঃ) বলেনঃ قَبَّحَكِ اللَّهُ الا سترت على ابْنَتَكَ “তোমার মন্দ হোক, তুমি নিজের মেয়ের আবরণ ঢেকে দিলে না? ” শেষ পর্যন্ত পুরুষটি ও মেয়েটির বিরুদ্ধে মামলা চলে। উভয়কে বেত্রাঘাতের শাস্তি দেয়া হয়। তারপর উভয়কে পরস্পরের সাথে বিয়ে দিয়ে হযরত আবু বকর (রাঃ) এক বছরের জন্য তাদেরকে দেশান্তর করেন। এ ধরনেরই আরো কয়েকটি ঘটনা কাযী আবু বকর ইবনুল আরাবী তাঁর আহকামুল কুরআন গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন (পৃষ্ঠা ৮৬, ২য় খণ্ড)।

(তাফহীমুল কুরআন)

Instructions

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।
আল্লাহুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিন আবদিকা ওয়া রাসূলিক ওয়া আলাল মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাতি ওয়া আলাল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত।

নিম্নের বিষয়গুলোতে ক্লিক করুন: 



-------------------------------------------------------------------------------------------------------


ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী - সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

সম্পুর্ণ সূচীপত্র
iass
ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী
সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

স্ক্যান কপি ডাউনলোড

বইটির অডিও শুনুন
লো কোয়ালিটি ডাউনলোড
হাই কোয়ালিটি ডাউনলোড

সংগঠন পদ্ধতি

সংগঠন পদ্ধতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

সংগঠন পদ্ধতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

.
.

গঠনতন্ত্র

Image result for গঠনতন্ত্র (বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী )


ডাউনলোড

জামায়াতে ইসলামীর কার্যবিবরণী - ১ম খন্ড ও ২য় খন্ড

Slide1 - Copy
জামায়াতে ইসলামীর কার্যবিবরণী

স্ক্যান কপি ডাউনলোড
১ম খন্ড
২য় খন্ড

সফল জীবনের পরিচয়-লেখকঃ এ.কে.এম.নাজির আহমদ

Image result for সফল জীবনের পরিচয়-



ডাউনলোড 

পরিবার ও পারিবারিক জীবন লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)


ডাউনলোড লিংক 

ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক - খুররম জাহ মুরাদ

সম্পুর্ণ সূচীপত্র
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
খুররম জাহ মুরাদ

স্ক্যান কপি ডাউনলোড

বইটির অডিও শুনুন
লো কোয়ালিটি ডাউনলোড
হাই কোয়ালিটি ডাউনলোড

মাতা পিতা ও সন্তানের অধিকার- লেখকঃ আল্লামা ইউসুফ ইসলাহী


Image result for মাতা পিতা ও সন্তানের অধিকার-

ডাউনলোড 

মূল ওয়েবসাইট

স্বামী স্ত্রীর অধিকার - সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী


Slide1
স্বামী স্ত্রীর অধিকার
সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী



স্ক্যান কপি ডাউনলোড

আল্লাহর দিকে আহ্বান - এ কে এম নাজির আহমদ

Binder1_Page_01
আল্লাহর দিকে আহ্বান
এ কে এম নাজির আহমদ

স্ক্যান কপি ডাউনলোড

বইটির অডিও শুনুন
লো কোয়ালিটি ডাউনলোড
হাই কোয়ালিটি ডাউনলোড

মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবন - লেখকঃ আবদুল খালেক

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...