আজান শুরুর ঘটনা / আজান শুরুর ইতিহাস

 নামাজের জন্য মানুষকে আহ্বান করার একমাত্র মাধ্যম হলো আজান। জামাআতে নামাজ পড়ার জন্য আজান দেয়া সুন্নাত। কেউ কেউ একে ওয়াজিব বা আবশ্যক বলেছেন। আজান ওহী না হলেও কতিপয় সাহাবায়েকেরামের স্বপ্নেপ্রাপ্ত বাক্য। যাই হোক নামাজের জন্য আজান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আজানই মানুষকে দ্রুত নামাজের জন্য তৈরি হতে উদ্বুদ্ধ করে।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে পবিত্র নগরী মক্কায় আজান ছাড়াই নামাজ পড়া হতো। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় হিজরত করে মসজিদ নির্মাণ করলেন তখন মুসলমানদের নামাজে অংশগ্রহণের জন্য একত্রিত করতে একটি সুনির্দিষ্ট সংকেত নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন এবং সাহাবাদের কাছে পরামর্শ চাইলেন।

সাহাবাদের পরামর্শ
সাহাবায়েকেরাম নামাজে অংশগ্রহণ একত্রিত হওয়ার জন্য সংকেত ঠিক করতে পরামর্শ সভায় বসলেন। পরামর্শ সভায় ৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন হয়।
>> ঝাণ্ডা উড়ানো;
>> আগুন প্রজ্জ্বলন;
>> শিঙ্গা বাজানো;
>> ঢোল বাজানো।

পরমার্শ সভার ৪টি প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করা হয়। কারণ ঝাণ্ডা উড়ালে সব মানুষ তা বাড়ি বা দূর থেকে দেখতে পাবে না। দ্বিতীয়ত আগুন প্রজ্বলন অগ্নি উপাসকদের কাজ। তৃতীয়ত শিঙ্গা বাজানো খ্রিস্টানদের কাজ আর চতুর্থত ঢোল বাজানো ইয়াহুদিদের কাজ। এ কারণে সেদিন সমাধান ছাড়াই পরামর্শ সভার মূলতবি করা হয়।


সাহাবায়েকেরামগণ এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে করতেই যার যার বাড়ি চলে গেলেন। ঐ রাতে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ স্বপ্নে দেখেন-

‘এক ব্যক্তি শিঙ্গা নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ঐ ব্যক্তিকে শিঙ্গাটি বিক্রি করতে বললে। শিঙ্গাটি কেনার কারণ জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ বললেন, ‘আমি শিঙ্গাটি দিয়ে মানুষকে নামাজে আসার জন্য আহ্বান করব।’
তখন শিঙ্গার মালিক ব্যক্তি বলল, ‘আমি কি এটি হতে উত্তম একটি জিনিসের সংবাদ দিব না? এ বলে তিনি আজানের বাক্যগুলো তাঁকে শিখিয়ে দিলেন।


সকালে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে স্বপ্নের কথাগুলো জানালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তোমার স্বপ্ন সত্য। তুমি বেলালকে আজানের বাক্যগুলো শিখিয়ে দাও। আজ থেকে বেলাল আজান দেবে।’

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদের শেখানো বাক্যগুলো দিয়ে হজরত বেলাল আজান দিলে, তা শুনে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রিয়নবির দরবারে দৌড়ে এসে বললেন-

‘হে আল্লাহর রাসুল! ঐ সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য রাসুল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। অবশ্যই আমি অবিকল এ বাক্যগুলোই স্বপ্নে দেখেছি।’

উল্লেখ্য যে, ঐ রাতে একই স্বপ্ন সাহাবিদের মধ্য থেকে ১৪ জনই দেখেন। যার মাধ্যমে নিয়মিত হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু নামাজের জন্য আজান দিতেন।

ফজরের আজানের বাড়তি বাক্য ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ সম্পর্কে জানা যায় যে-
একদিন ফজরের সময় হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু আজান দিতে আসলেন, তখন তাকে বলা হলো, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমে আছেন। তখন হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন-
‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম। অর্থাৎ ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম।’

হজরত সাঈদ ইবনে মুসায়্যিব বলেছেন, ‘পরে ফজরের আজানের সঙ্গে এ বাক্যটি শমিল করে দেয়া হয়।’

আর এভাবেই সর্বপ্রথম আজানের প্রচলন হয়। আজানের আওয়াজ শুনার সঙ্গে সঙ্গে মুসলমানরা মসজিদে জামাআতে নামাজ আদায়ে একত্রিত হয়।

জামাআতে নামাজ আদায়ের জন্য আজান দেয়া সুন্নাত। আবার কেউ কেউ একে ওয়াজিব বলেছেন।

তবে আজান দেয়া সুন্নাত বা ওয়াজিব যা-ই হোক না কেন, আজান ইসলামের প্রতীক। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি কারও বিপরীতে অভিযান পরিচালনা করতেন; ঐ সময় তাদের মধ্য থেকে যদি আজানের ধ্বনি আসত তবে তিনি তাদের সঙ্গে অভিযান বন্ধ করে দিতেন এবং বলতেন, তারা মুসলিম।’

আল্লাহ তা্আলা মুসলিম উম্মাহকে আজানের সঙ্গে সঙ্গে জামাআতে নামাজ আদায়ে মসজিদে একত্রিত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

===========================




আযান একটি আহ্বান, প্রতিদিন আমরা পাঁচবার শ্রবণ করি। তার ধ্বনি আমাদের অন্তরসমূহকে নাড়া দেয়। আমাদের জীবন্ত করে তুলে, অলসতা দূর করে, উদ্দামতা আনয়ন করে। নিশ্চয় এটা ইসলামের নিদর্শন, তাওহীদের আলামত। আল্লাহ কি চান ? এ প্রশ্নের উত্তর যে জানতে চায়, সে যেন আযানের অর্থ নিয়ে চিন্তা করে।এটা সত্যের আহবান। এ হচ্ছে মুসলমানদের আযান !আমরা এর ঘটনা জানি ?আমরা জানি কিভাবে আমাদের কাছে এসেছে এ আযান ? কিভাবে মুসলমান এর সন্ধান পেয়েছে ? এবং কিভাবে পৌঁছতে পেরেছে মুসলমানগণ আযান পর্যন্ত ? এ এমন কতগুলো প্রশ্ন যা আযান প্রেমিক প্রত্যেকটি মানুষের জানা জরুরী। এ আযানের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে অন্য জাতির চেয়ে আলাদা বৈশিষ্ট্যে ভূষিত করেছেন। এর জন্য তিনি আমাদেরকে মনোনিত করেছেন, একে তিনি আমাদের আলামত বানিয়েছেন।

ইসলামের শুরুতে সালাতের সময় হলে মুসলমানেরা নিজের পক্ষ থেকে মসজিদে এসে উপস্থিত হত। আযান, আহবান বা অন্য কোন মাধ্যমে ডাকাডাকি ছাড়াই। ইবনে ওমর রাদিআলাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন :

 

মুসলমানগণ যখন মদীনায় আগমন করে জড়ো হতেন, সালাতের সময়ের প্রতীক্ষা করতেন। তখন সালাতের জন্য ডাকাডাকি হতো না। একদিন তারা এ নিয়ে আলোচনা করলেন। কেউ বলল : তোমরা নাসারাদের ন্যায় ঘণ্টার অনুসরণ কর। কেউ বলল না, বরং হর্ন গ্রহণ কর, ইহুদিদের শিঙ্গার ন্যায়। ওমর রাদিআলাহু আনহু বললেন : একজন লোক পাঠান, সে সালাত সালাত বলে ঘোষণা দেবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন :  হে বেলাল, তুমি দাঁড়াও, অতঃপর সালাতের ঘোষণা দাও। {বোখারি : (৫৭৯), মুসলিম : (৩৭৭) }


ইবনে খুজাইমা রাহিমাহুল্লাহ স্বীয় গ্রন্থে এ শিরোনামে এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন : এ অধ্যায়ের দলিলের বর্ণনা যে, আযানের প্রচলন হয়েছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদীনায় হিজরতের পর। তিনি মক্কায় সালাত আদায় করতেন আযান ও ইকামাত ছাড়াই। সহিহ ইবনে খুজাইমা : (১/১৮৯)

ইবনে ইসহাক রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন লোকেরা কোন আহবান ছাড়াই তার নিকট সময় মত সালাতের জন্য উপস্থিত হতো। শায়খ আলবানী বলেছেন : এর সনদটি হাসান। দেখুন : ফিকহুস সীরাহ : (১/১৮১)

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক মহান চিন্তা ছিল, মানুষদের কিভাবে সালাতের জন্য উপস্থিত করা হবে ? অবশেষে আল্লাহর বিধান চলে আসে। আবু উমাইর বিন আনাস তার কোন আনসারী চাচা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন :

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের বিষয় নিয়ে খুব চিন্তা করলেন, এ জন্য তিনি কিভাবে মানুষদের জমায়েত করবেন ? তাকে বলা হলো : যখন সালাতের সময় হবে একটি পতাকা উত্তোলন করবেন, এ পতাকা দেখে একে অপরকে আহবান করবে। এ উত্তরে তিনি সন্তুষ্ট হলেন না। অতঃপর তার কাছে হর্ন বাজানোর কথা বলা হলো। পূর্বের উল্লিখিত বোখারির বর্ণনায় যেরূপ রয়েছে। জিয়াদ বললেন : ইহুদিদের হর্ন। এ উত্তরেও তিনি সন্তুষ্ট হলেন না। তিনি বললেন : এটা ইহুদীদের কর্ম । অতঃপর তাকে ঘণ্টার কথা বলা হলো। তিনি বললেন : এটা নাসারাদের কর্ম।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ চিন্তায় গভীরভাবে চিন্তিত হয়ে আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ বিন আবদে রাব্বিহি বাড়ি ফিরলেন, তাকে স্বপ্নে আযান দেখানো হলো। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গমন করলেন এবং তাকে আযান বিষয়ে স্বপ্ন সম্পর্কে সংবাদ দিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন : হে আল্লাহর রাসূল, অর্ধ ঘুম ও নিদ্রাবস্থায় ছিলাম, আমার কাছে এক আগমনকারী আসল অতঃপর আমাকে আযান দেখালো। তিনি বলেন : ওমরও তার পূর্বে এ স্বপ্ন দেখেছে, তিনি তা বিশ দিন গোপন রাখেন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানান। তিনি বললেন : তুমি আমাকে কেন সংবাদ দাওনি ? বললেন : আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আমার আগে বলে ফেলেছে, তাই আমার বলতে লজ্জা বোধ হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন :  হে বেলাল, দাঁড়াও, দেখ আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ কি বলে, তুমি তার অনুসরণ কর। তিনি বললেন : অতঃপর বেলাল আযান দিল। আবু বিশর বলেন : আবু উমাইর আমাকে বলেছে, আনসারগণের ধারণা, সেদিন যদি আব্দুলাহ বিন জায়েদ অসুস্থ না হতেন, তাহলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম তাকেই মুয়ায্যিন বানাতেন। আবু দাউদ : (৪৯৮), সহীহ আবু দাউদ লিল আলবানী: (৪৬৮)

এ স্বপ্নের কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রভূত আনন্দিত হন এবং আল্লাহর প্রশংসা করেন, যেরূপ অন্যান্য বর্ণনায় এসেছে। ওমর রাদিআলাহু আনহু যখন বেলালের মুখে আযানের ধ্বনি শুনলেন, চাদর হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে উপস্থিত হলেন। আর বললেন : হে রাসূল, যে আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন তার শপথ, সে যেরূপ বলেছে আমিও অনুরূপ দেখেছি। তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : সকল প্রশংসা আল্লাহর। আবু দাউদ : (৪৯৯), শায়খ আলবানী হাদীসটি সহিহ বলেছেন : সহিহ আবু দাউদ : (৪৬৯)

অন্য বর্ণনায় হুবহু আযানের শব্দও বর্ণনা করা হয়েছে। মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হর্ণের ব্যাপারে চিন্তা করছিলেন এবং ঘন্টার নির্দেশ দিয়েছেন। আমি তার কাছ থেকে চলে গেলাম। অতঃপর আব্দুল্লাহকে সপ্নে দেখানো হলো। তিনি বলেন : আমি এক ব্যক্তিকে দেখলাম দুটি হলুদ জামা গায়ে একটি ঘণ্টা নিয়ে দাঁড়ানো। আমি তাকে বললাম : হে আল্লাহর বান্দা, তুমি কি ঘণ্টা বিক্রি করবে? সে বলল: তুমি এর দ্বারা কি করবে ? আমি বললাম : সালাতের জন্য আহবান করবো। সে বলল : আমি কি তোমাকে এর চেয়ে উত্তম জিনিসের কথা বলবো না ? আমি বললাম : তা আবার কি ? সে বলল : তুমি বলবে : {আযানের শব্দাবলি}

তিনি বলেন : আব্দুল্লাহ বের হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন, অতঃপর স্বপ্ন সম্পর্কে অবহিত করলেন। বললেন : হে আল্লাহর রাসূল, আমি দেখলাম হলুদ জামা গায়ে এক ব্যক্তি একটি ঘণ্টা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অতঃপর তাকে সপ্নের বিবরণ শোনালেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন :  তোমাদের ভাই একটি স্বপ্ন দেখেছে, তুমি বেলালের সাথে মসজিদে যাও, তার কাছে গিয়ে বল, এবং বেলাল যেন এ শব্দ দ্বারা আহবান করে, কারণ তার আওয়াজ তোমার চেয়ে উচ্চ।” তিনি বলেন : আমি বেলালের সাথে মসজিদে গেলাম, অতঃপর আমি তার কাছে বলতে লাগলাম, সে তার মাধ্যমে সালাতের আহবান জানাতে লাগল।

সে বলল : ওমর ইবনে খাত্তাব আওয়াজ শোনে বের হয়ে আসলেন, বললেন : হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর শপথ, সে যেরূপ দেখেছে আমিও অনুরূপ দেখেছি। অতঃপর আবু উবাইদ বলেন, আবু বকর হিকমী আমাকে বলেছে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ আনসারী এ সম্পকের্ বলেছেন :
অর্থ : {আযানের জন্য আমি আল্লাহর অনেক প্রশংসা করছি, যিনি বড়ত্বের ও সম্মানের অধিকারী। যখন আমার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে এ নিয়ে সুসংবাদ দাতা আসল, তিনি আমাকে এর মাধ্যমে সুসংবাদ দাতা হিসিবে সম্মানিত করেন। লাগাতার তিন রাতে তিনি আমার কাছে আসেন, যখনই তিনি আসেন আমার সম্মান বৃদ্ধি করেন।}”
ইবনে মাজাহ : (৭০৬), শায়খ আলবানী হাদীসটি হাসান বলেছেন : সহিহ ইবনে মাজাহ : (৫৮০),

আর (আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম) এর সংযোজন হয়েছে বেলাল রাদিআল্লাহু আনহু এর পক্ষ থেকে।অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুমতি প্রদান করেন।

বেলাল রাদিআলাহু আনহু থেকে বর্ণিত, “তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে সালাতের সংবাদ দিতে আসেন, অতঃপর তাকে বলা হয়, তিনি ঘুমন্ত। ফলে তিনি বলেন :
(আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম , আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম)

এরপর থেকে ফজরের আযানে এটা প্রচলিত হয়।” ইবনে মাজাহ : (৭১৬), শায়খ আলবানী হাদীসটি সহিহ বলেছেন : সহিহ ইবনে মাজাহ : (৫৮৬)

এর মাধ্যমেই আমরা আযানের ঘটনা জানতে পারলাম, যা এখনো আমাদের কর্ণসমূহ আন্দোলিত করে। এটা মহান নিআমত, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানাই, তিনি এর শোকর আদায় করার তাওফীক দান করুন। এবং আযান যেন আমাদের জন্য সংরক্ষণ করেন, যেন আমরা এর মাধ্যমে পূর্ব-পশ্চিম জয় করতে সক্ষম হই। সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য নিবেদিত



============================


ইসলামের সমস্ত বিষয়গুলোকে নির্দিষ্ট কিছু শিরোনামে বলতে চাইলে ইবাদত, লেনদেন, আচার ব্যবহার, আখলাক ও আকীদার আলোচনা আসবে। ইসলামের মূল হচ্ছে আকীদা বিশ্বাস। আর বাকিগুলো হচ্ছে শাখাগত বিষয়। 

ইবাদতই এগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ। ইবাদতের প্রধান হচ্ছে নামাজ। নামাজের বিধান পূর্ববতী নবীগণের মধ্যেও ছিল। ইসলামে নামাজ ফরজ হয়েছে মেরাজের রজনীতে। সে ঘটনা আমরা জানি। প্রথম দেয়া হয় পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ। তা কমিয়ে আসতে আসতে সর্ব শেষ চূড়ান্ত হয় পাঁচ ওয়াক্ত।

নামাজ মেরাজের রজনীতে ফরজ হলেও, নামাজের জন্য আজান দেয়ার প্রচলন কিন্তু তখনো হয়নি। তা হয়েছে আরো পরে। মদিনায় হিজরতের পর। প্রচলন পরে হলেও রাসূল (সা.) মেরাজের রজনীতেই আজান শুনেছিলেন। কারো কারো মতে হজরত জিবরাইল (আ.) সে রাতে নবী করিম (সা.)-কে আজান শিক্ষা দিয়েছিলেন। তবে এই মতের পক্ষের হাদিসগুলো সনদগতভাবে দুর্বল হওয়ায় কেউ কেউ এই মতটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। মদিনায় আজানের প্রচলন হওয়ার ঘটনাটি ছিল এ রকম। মদিনায় হিজরতে পর মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকল। মক্কায় এতদিন স্বাধীনভাবে দ্বীনি কাজ আঞ্জাম দেয়া সম্ভব হয়নি। মদিনায় স্বাধীনভাবে দ্বীনি কাজ করা ও মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে নামাজের জন্য লোকদেরকে ডাকার প্রয়োজন দেখা দিল। একদিন রাসূল (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে পরামর্শ করলেন যে, নামাজের জন্য লোকদেরকে একত্রিত করার কী পদ্ধতি হতে পারে। কেউ কেউ পরামর্শ দিল, খৃষ্টানদের ন্যায় নামাজের সময় হলে ঘণ্টা বাজানো হোক। কয়েকজন পরামর্শ দিল, ইহুদিদের ন্যায় নামাজের সময় হলে সিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হোক। হজরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, একজন লোক ঠিক করলেই তো হচ্ছে। সে নামাজের সময় হলে লোকদেরকে ডেকে ডেকে জমা করবে। কিন্তু নবী করিম (সা.) এর নিকট কোনোটিই পছন্দ হচ্ছিল না। তাই বিষয়টি অমীমাংসিত অবস্থায় ওই দিনের বৈঠক শেষ হলো।

ওই দিনেরই রাতের ঘটনা। আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ (রা.) স্বপ্নে দেখেন এক লোক দুটি ঘণ্টা নিয়ে যাচ্ছে। তিনি ওই লোককে বলেন, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি কি ওগুলো আমার কাছে বিক্রি করবে? ওই লোক প্রশ্ন করেন তুমি এর দ্বারা কী করবে? সাহাবি বলেন, এগুলো বাজিয়ে লোকদেরকে নামাজের দিকে ডাকব। তখন ওই লোক বলেন, নামাজে ডাকার জন্য আমি তোমাকে এর চেয়ে সুন্দর পদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছি। এর পর ওই লোক আজানের শব্দগুলো শিখিয়ে দেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ ফজরের সময় নবী করিম (সা.)-কে আজানের শব্দগুলো শুনালেন। রাসূল (সা.) শুনে বলেন এটা সত্য স্বপ্ন। রাসূল (সা.) তাকে নির্দেশ দিলেন, হজরত বেলালকে আজান শেখাও। হজরত বেলাল আজান শিখে আজান দেয়া শুরু করেন। আর এভাবেই আজানের সূচনা হয়েছে।

কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, হজরত উমর (রা.) বেলালের আজান শুনে ঘুম থেকে ওঠে দৌঁড়ে গেলেন যে, আমিও তো স্বপ্নে এগুলো দেখেছি। রাসূল (সা.) তার কথা শুনে বলেন, সমস্ত তারিফ আল্লাহ তায়ালার জন্য। ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ইতিহাসের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ বিদায়া ওয়ান নিহায়াতে। কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়, হজরত উমর (রা.) এ ঘটনা ঘটারও বিশ দিন আগে আজানের শব্দগুলো স্বপ্নে দেখেছিলেন। আবু দাউদ, তিরমিজীসহ আরো বহু হাদিসের কিতাবে ইকামতের আলোচনাও এসেছে। অর্থাৎ আজানের সঙ্গে স্বপ্নে ইকামতও শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে হজরত বেলাল (রা.) ফজরের নামাজে ‘আস সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ বাক্যটি যুক্ত করেন। হজরত নবী করিম (সা.) এটাকে পছন্দ করেছেন। বিধায় এখন এটাও আজানের অংশ।

অনেকে বিভ্রান্তি ছড়ান যে, আজান এসেছে একজন সাহাবির স্বপ্নের মাধ্যমে, যিনি নবী ছিলেন না। তারপরও তার স্বপ্নকে মেনে নিয়ে আজানের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে বৈধতা দেয়া হয়েছে। অতএব ওলি আউলিয়াদের স্বপ্ন শরীয়তের দলীল, যেমন ওই সাহাবির স্বপ্ন দলিল হয়েছে। মূল বিষয় হচ্ছে, আজান শুধু স্বপ্নের মাধ্যমেই বৈধতা পেয়েছে বিষয়টি এমন নয়। বরং পরবর্তীতে এ ব্যাপারে সরাসরি ওহি নাজিল হয়েছিল। যেমন এক হাদিসে এসেছে, হজরত উমর (রা.) ঘণ্টা বানানোর জন্য দুটি কাঠ কিনেন। কিন্তু ওই রাতেই তিনি স্বপ্নে আজানের শব্দগুলো শিখেন। দৌঁড়ে রাসূল (সা.)-কে সংবাদ দিতে গেলে, তিনি বলেন, তোমার সংবাদ দেয়ার আগেই এ ব্যাপারে ওহি নাজিল হয়েছে। (বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৭১) আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকিদা হচ্ছে, নবীগণের স্বপ্ন শরীয়তের দলিল হতে পারে। কিন্তু ওলি আউলিয়াদের স্বপ্ন দলিল হতে পারে না। তাই এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। 

আজানের শব্দ সংখ্যা কম। তবে এর মাধ্যমে দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা পেশ করা হয়েছে। ইমাম কুরতুবী (রাহ.) এ ব্যাপারে খুবই চমৎকার আলোচনা করেছেন। তিনি লেখেন, ‘আজানের শব্দ সংখ্যা কম হওয়া সত্তেও দ্বীনের মৌলিক বিষয় তথা আকীদার বিষয়গুলো সেখানে আলোচনা হয়েছে। আজানের সূচনা হয়েছে, আল্লাহু আকবার শব্দ দিয়ে। এর মধ্যে আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব ও বড়ত্বে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় শব্দ হচ্ছে ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। এখানে আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদ ও তার সঙ্গে শরিক না থাকার বিষয় আলোচনা হয়েছে। এরপর নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নবুওয়াতকে সাব্যস্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ অর্থাৎ আমি সাক্ষ দিচ্ছি মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল। এর পর দ্বীনের খুটি নামাজের আলোচনা হয়েছে। কারণ নামাজ ইবাদত হওয়া, নবী ছাড়া কারো মাধ্যমে জানা সম্ভব নয়। তারপর মানুষকে চির সফলতার দিকে ডাকা হয়েছে। এর দ্বারা মূলত আখেরাতের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কারণ প্রকৃত সফলতা হচ্ছে, যা আখেরাতে লাভ হবে। শব্দগুলো দুইবার বলার কারণ হচ্ছে, বিষয়ের ওপর তাকিদ দেয়া। আজানের দ্বারা নামাজের ওয়াক্ত আসা, জামাতের দিকে আহ্বান জানানো হয়। এর দ্বারা দ্বীনের একটি প্রতীকেরও বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আজানের জন্য কিছু শব্দকে নির্বাচন করা হলো, যা মুখে ঘোষণা করতে হয়; কোনো কাজকে নয়। কারণ, মুখে বলা সহজ, কাজ করে দেখানোর চেয়ে। যেন যে কোনো জায়গার, যে কেউ আজানের মাধ্যমে ইসলামের সুমহান বার্তা মানুষের কাছে পৌছে দিতে পারে। (মাআরেফুস সুনান, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৬৮)

আজান সম্পর্কে প্রচলিত ভুল:
আজান ও আজানের উত্তর নিয়ে আমাদের সমাজে কিছু প্রচলিত ভুল আছে। যেমন হাদিসে এসেছে, আজানের উত্তরে শ্রোতা ওই শব্দগুলোই বলবে যা মুয়াজ্জিন আজানে বলে। তবে হাইয়ালাস সালাহ ও হাইয়ালাল ফালাহ বলার সময় শ্রোতা বলবে ‘লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। কিন্তু আমাদের সমাজের কাউকে কাউকে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলার সময় দরূদ পড়তে শুনা যায়। এটা মূলত ভুল। নিয়ম হলো আজান শেষে যে কোনো দরূদ পাঠ করে দোয়া পড়া। দ্বিতীয় যে ভুল সমাজে প্রচলিত, নবী করিম (সা.) এর নাম শুনার সময় আঙ্গুলে চুমু খেয়ে তা চোখে লাগানো। আজান ও ইকামত উভয় ক্ষেত্রেই এটা করা হয়। এর সূত্র হচ্ছে মুসনাদে দাইলামি নামক কিতাব। ওই কিতাবে প্রচুর হাদিসের নামে বানোয়াট কথা রয়েছে। তো এমন একটি বানোয়াট হাদিস হচ্ছে ‘হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) যখন মুয়াজ্জিনকে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলতে শুনলেন তখন তিনিও তা বলেন এবং তর্জনী আঙ্গুল দুটিতে চুমু খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে দিলেন। (তা দেখে) রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার দোস্তের মতো আমল করবে তার জন্য আমার সুপারিশ অবধারিত।’ এই হাদিস সম্পর্কে হাদিস ও রিজাল শাস্ত্রের পণ্ডিত ব্যক্তিদের মতামত হচ্ছে বানোয়াট হাদিস। আমাদের দেশের মানুষের ধর্মীয় আবেগের প্রবলতার কারণে অনেকে বিশ্বাসই করতে পারেন না যে, হাদিস বানোয়াট বা মিথ্যা হতে পারে। 

রাসূল (সা.) এর যুগের পর যখন আস্তে আস্তে ফেতনা ছড়াতে থাকে তখন বিভিন্ন গোমরা দল নিজেদের মতের স্বপক্ষে হাদিস বানাতে থাকে। আল্লাহ তায়ালাও তখন এমন ব্যক্তিদের দুনিয়াতে পাঠান, যারা দ্বীনের শিক্ষাকে হেফাজতের জন্য নিজেদের জীবন যৌবনকে ব্যয় করেছেন। যাদের মেধা ও সততা অতুলনীয়। উল্লিখিত হাদিসের ব্যাপারে ওই সকল হাদিসবেত্তাদের মত তুলে ধরছি। আল্লামা সাখাবী বলেন, এ হাদিস প্রমাণীত নয়। আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতি বলেন, মুয়াজ্জিনের শাহাদাতে নবী করিম (সা.) এর নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়া ও তা চোখে মুছে দেয়ার ব্যাপারে যতগুলো হাদিস আছে সবগুলোই জাল ও বানোয়াট। আল্লামা লাখনোভী (রা.) লেখেন ‘ইকামত বা অন্য কোথাও নবী করিম (সা.) এর নাম শুনে নখে চুমু খাওয়া (এবং তা চোখে বুলিয়ে দেয়া) সম্পর্কে কনো হাদিস বা সাহাবির কোনো আসর বা আমল বর্ণিত হয়নি।’ (বিস্তারিত জানতে এসব হাদিস নয় বইয়ের প্রথম খন্ডের ১০৭ পৃষ্ঠা দেখুন) আজান দেয়ার সময় কথা বললে ঈমান চলে যাওয়া বা চল্লিশ বছরের নেকি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথাও শুনা যায়। এখানেও যে হাদিসগুলো পেশ করা হয় সব ভিত্তিহীন। 

তবে আজানের জবাব দিতে হলে অন্য কোনো কথা বা কাজ বন্ধ রাখা দরকার এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই বলে আমলে আনার জন্য হাদিস বানিয়ে বলা কখনো সমর্থনযোগ্য নয়। বহু হাদিসের কিতাবে হাদিস বানানোর গোনাহ সম্পর্কে হুশিয়ারি এসেছে। রাসূল (সা.) বলেন, যে আমার ব্যাপারে কোনো মিথ্যা বলবে সে যেন নিজের ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নেয়। (সহীহ মুসলিম) হাদীসের মান না জেনে মানুষের সামনে বর্ণনা করাও এক ধরনের অন্যায়। তাই যে কোনো বিষয়ের হাদিস বলার আগে তা জেনে নেয়া। 

আজান সম্পর্কে আরেকটি ভুল হচ্ছে ঝড় তুফানে আজান দেয়া। ওই অবস্থার দোয়া আছে তা পড়তে হবে। বা আল্লাহর বড়ত্বসূচক কোনো বাক্য স্মরণ করা যায়। কিন্তু আজান দেয়া যাবে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...